জাতীয় বেতন স্কেলে বৈষম্য, প্রতিবন্ধী শিক্ষক-কর্মচারীরা বঞ্চিত
Published: 23rd, July 2025 GMT
সারাদেশে পরিচালিত ৭৪টি এমপিওভুক্ত বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা বৈষম্যের শিকার-এমন অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
আজ (২৩ জুলাই) সকালে রাজধানীর মিরপুরে জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
১৯৭৮ সালে বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এসব বিশেষ বিদ্যালয় ১৯৯৯ সালে গঠিত জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছে। বর্তমানে এসব বিদ্যালয়ে প্রায় ১৪ হাজার প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সেবা দেওয়া হচ্ছে ৯৪২ জন কর্মকর্তা, শিক্ষক ও কর্মচারীর মাধ্যমে।
শিক্ষক-কর্মচারীদের অভিযোগ, তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে। ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল কার্যকর হয় ২০১৮ সাল থেকে, তাও ২ বছরের বকেয়ার পরও অতিরিক্ত ২০ শতাংশ সিপিএফ কেটে রাখা হয়েছে। যার কোনো ব্যাখ্যা এখনো দেয়নি কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও টাইমস্কেল, পদোন্নতি, উৎসব ভাতা, পেনশনসহ নানান প্রাপ্য সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত।
২০১৯ সালের প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কিত সমন্বিত বিশেষ শিক্ষা নীতিমালা অনুযায়ী তাদের সরকারি সকল ভাতা ও সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তার কোনো প্রতিফলন নেই। অবসরপ্রাপ্ত অনেক শিক্ষক খালি হাতে বিদায় নিয়েছেন, কেউ কেউ আবেদন করেও পাননি পেনশন বা গ্র্যাচুইটি।
শিক্ষক-কর্মচারীরা বলেন, জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন আইন ২০২৩-এর খসড়া অর্গানোগ্রামে ৭৪টি বিদ্যালয়ের নাম অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলা হলেও বাস্তবে বিদ্যালয়গুলোর নাম রাখা হয়নি। ফলে ভবিষ্যতে তারা কোনো ধরনের সরকারি সুবিধা পাবে কিনা-তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা। তারা সরকারের কাছে যেসব দাবি তুলেছেন তা হলো-
১.
২. ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরের সম্পূর্ণ বকেয়া বেতন প্রদান।
৩. স্থায়ী পদে থাকা ৯৪২ জন শিক্ষক-কর্মচারীর নাম বোর্ড সভায় উপস্থাপন করা।
৪. ২৫ শতাংশ বকেয়া উৎসব ভাতা প্রদান।
৫. সিপিএফ জমা টাকা নিজস্ব ব্যাংকে ৬ মাস পরপর দেওয়া। ৬. অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের পেনশন ও গ্র্যাচুইটি দেওয়া।
৭. পদোন্নতি, টাইমস্কেল, ইনক্রিমেন্ট বাস্তবায়ন।
৮. প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরিচালন ব্যয় বাবদ বরাদ্দ।
৯. শিক্ষকদের ইনডেক্স নম্বর প্রদান।
১০. ২০০৯ সালের পূর্বে নিয়োগপ্রাপ্ত নন-বিএসএড শিক্ষকদের পূর্ণ বেতন প্রদান।
১১. প্রধান শিক্ষকদের ৭ম গ্রেডে উন্নীতকরণ।
১২. শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলির ব্যবস্থা।
তারা//
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে সরকারি মতিলাল ডিগ্রি কলেজে সম্মান কোর্স চালুর দাবিতে মানববন্ধন
মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায় সরকারি মতিলাল ডিগ্রি কলেজে স্নাতক (সম্মান) কোর্স চালুর দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। আজ সোমবার দুপুরে কলেজের প্রধান ফটকে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
কলেজ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭২ সালে কলেজটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। দীর্ঘদিন ধরে সরকারি মতিলাল ডিগ্রি কলেজে স্নাতক কোর্স চালুর দাবি জানিয়ে আসছেন উপজেলাবাসী। ২০১৪ সালের ১৯ মে কলেজ পরিচালনা কমিটির এক সভায় হিসাববিজ্ঞান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক কোর্স খোলার সিদ্ধান্ত হয়। এর পরিপেক্ষিতে ২০১৫ সালে ২২ ডিসেম্বর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি বিধি অনুযায়ী ওই দুটি বিষয়ে প্রভাষক নিয়োগের জন্য লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
২০১৬ সালে ১ সেপ্টেম্বর নিয়োগ কমিটির সুপারিশ ও পরিচালনা পরিষদের অনুমোদনক্রমে ১৪ জন প্রভাষক নিয়োগ দেওয়া হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্নাতক কোর্স চালু করার অধিভুক্তির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি পরিদর্শক দল গঠন করে। তবে এরপর স্নাতক কোর্স চালুর ব্যাপারে আর কোনো অগ্রগতি নেই। কলেজে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান।
কলেজটিতে স্নাতক কোর্স চালুর দাবিতে আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলেজের প্রধান ফটকে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। এতে বক্তব্য দেন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী শেখ কায়ছার নাঈম, একাদশ শ্রেণির মারুফ হোসেন, দিশান মিয়া প্রমুখ। এ দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখার সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক রমজান মাহমুদ, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাইফুল ইসলাম, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোবারক হোসেন, স্থানীয় চকমিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্যসচিব আবদুল হামিদ প্রমুখ।
সাইফুল ইসলাম বলেন, এ উপজেলায় প্রায় দুই লাখ লোকের বসবাস। উপজেলায় যমুনা নদীর দুর্গম এলাকায় পাঁচটি ইউনিয়ন রয়েছে। নদীভাঙন ও দুর্গম চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেতে সরকারি মতিলাল ডিগ্রি কলেজে স্নাতক কোর্স চালুর দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী। তবে দীর্ঘদিনেও এই দাবি পূরণ হয়নি।
কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সত্যজিত দত্ত বলেন, প্রায় এক বছর আগে তিনি এই কলেজে যোগদান করেছেন। কলেজে স্নাতক কোর্স চালুর বিষয়ে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই। স্নাতক কোর্স না থাকায় এ উপজেলার অনেক শিক্ষার্থী জেলা সদরসহ দূরদূরান্তের বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে পড়াশোনা করছেন। এতে দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য বাড়তি অর্থ ব্যয় হচ্ছে। স্নাতক কোর্স চালু হলে এ উপজেলায় শিক্ষার মানোন্নয়ন পাশাপাশি এলাকায় আর্থসামাজিক উন্নয়নও ঘটবে।