সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে নতুন এক অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। কিলিয়ান এমবাপ্পে যিনি ইতোমধ্যে রিয়াল মাদ্রিদে নিজের অস্তিত্ব জানান দিয়েছেন দুর্দান্ত গোলবন্যা দিয়ে। এবার পাচ্ছেন আরও এক বড় সম্মান। রিয়াল মাদ্রিদের ঐতিহ্যবাহী ১০ নম্বর জার্সি।

সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে ফুটবলভিত্তিক খ্যাতনামা ওয়েবসাইট ইএসপিএন জানায়, রিয়ালের পরবর্তী মৌসুমে এমবাপ্পে মাঠে নামবেন সেই ‘ম্যাজিক নম্বর ১০’ পরে। যেটা আগে ছিল লুকা মদ্রিচের দখলে।

১৩ বছরের গৌরবময় পথচলার পর রিয়াল ছাড়েন ক্রোয়েশিয়ান কিংবদন্তি মদ্রিচ। তার বিদায়ের পরই জার্সিটি হয় এমবাপ্পের জন্য উন্মুক্ত। জানা গেছে, ক্লাব কর্তৃপক্ষ শুরু থেকেই এমবাপ্পের জন্য এই নম্বরটি তুলে রাখার পরিকল্পনায় ছিল। এমনকি মদ্রিচ থেকে গেলে এমবাপ্পে তার আগের ৯ নম্বর নিয়েই খেলার জন্য রাজি ছিলেন।

আরো পড়ুন:

বিশ্বস্ত দেয়াল ২০২৭ পর্যন্ত রিয়ালে, কোর্তোয়ার সঙ্গে চুক্তি নবায়ন

শৈশবের স্বপ্নপূরণে মিলানের লাল-কালো জার্সিতে লুকা মদ্রিচ

ফ্রান্স জাতীয় দলের জার্সিতে বহুদিন ধরেই ১০ নম্বর পরে খেলছেন এমবাপ্পে। রিয়ালেও সেই জার্সি পরে নামতে পারাটা তার জন্য ব্যক্তিগত ও প্রতীকি গুরুত্ব বহন করে।

রিয়ালে নিজের প্রথম মৌসুমটা স্ট্যাটিস্টিক্সের বিচারে অসাধারণ কেটেছে এমবাপ্পের। লা লিগায় ৩১ গোল করে তিনি মৌসুমের সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে করেন ৩৫ গোল। যা রোনালদোর রিয়াল অভিষেকের (৩৩ গোল) রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে।

চারটি গুরুত্বপূর্ণ ফাইনালে গোল পেয়েছেন এই ফরাসি তারকা। উয়েফা সুপার কাপে আটালান্টার বিপক্ষে, ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপে পাচুকার বিপক্ষে এবং কোপা দেল রে ও স্প্যানিশ সুপার কাপের এল ক্লাসিকোতেও। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কোনোটিতেই শেষ হাসি হাসতে পারেনি রিয়াল।

লা লিগায় বার্সেলোনার কাছে পয়েন্ট টেবিলে পিছিয়ে থেকে শেষ করতে হয়েছে মৌসুম। চ্যাম্পিয়নস লিগেও কোয়ার্টার ফাইনালেই আর্সেনালের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছে। এমনকি ক্লাব বিশ্বকাপেও গ্রুপপর্বে অসুস্থতার কারণে খেলতে পারেননি এমবাপ্পে। পরের দিকে খেললেও সেমিফাইনালে সাবেক ক্লাব পিএসজির বিপক্ষে ৪-০ গোলের বড় হার হজম করে বিদায় নিতে হয় রিয়ালকে।

রিয়ালের ১০ নম্বর জার্সি শুধু একটা সংখ্যা নয় এটা এক ইতিহাস, এক দায়। এই জার্সির ওজন বহন করেছেন মদ্রিচের মতো কিংবদন্তিরা। এবার সেই ভার এসে পড়েছে এমবাপ্পের কাঁধে। প্রথম মৌসুমে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে নজর কাড়লেও, রিয়ালের মত ক্লাবের মূল প্রত্যাশা থাকে ট্রফি ঘরে তোলা।

এমবাপ্পে কি পারবেন দ্বিতীয় মৌসুমে এই চাপ সামলে দলকে শিরোপা এনে দিতে? নাকি ব্যক্তিগত অর্জনের গণ্ডিতেই আটকে থাকবেন তিনি?

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ক ল য় ন এমব প প এমব প প র র জন য মদ র চ

এছাড়াও পড়ুন:

কাজাকিস্তানের যাযাবর জাতির করুণ ইতিহাস 

বিংশ শতাব্দীর আগে পৃথিবীর মানচিত্রে কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান এবং তুর্কমেনিস্তান নামের এই পাঁচটি দেশ ছিলো না।  মূলত ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর এই রাষ্ট্রগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা লাভ করে। পরে চীনের সহায়তায় ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলগুলো বাণিজ্যিক কেন্দ্রস্থল হিসেবে পুনরুত্থান হয়েছে। এখন প্রশ্ন  করা যেতে পারে, চীন কেন আবারও  এই অঞ্চলগুলোকে শক্তিশালী করে তুলছে?

ঐতিহাসিকভাবে মধ্য এশিয়া অঞ্চল সিল্করোডের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলো। যা চীনকে মধ্যপ্রাচ্য এবং রোমান সভ্যতার সাথে যুক্ত করেছিলো।  বীজ গণিতের জনক আল খারিজমি, আবু সিনার মতো বিজ্ঞানীদের জন্ম হয়েছে এখানে। যাদের লেখা বই ইউরোপে শত শত বছর ধরে চিকিৎসা ও নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। চেঙ্গিস খানও এই অঞ্চলে তার সম্রাজ্যের নিদর্শন রেখে গেছেন। পাশাপাশি ঘোড়ার পিঠে আদিম যাযাবর জীবনের ঐতিহ্যও টিকে আছে এখানে। 

আরো পড়ুন:

রাশিয়ার ‍বিরুদ্ধে এবার রোমানিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ

রাশিয়ায় ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প, সুনামির সতর্কতা 

রাজনৈতিক প্রভাব ও সামরিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তার করেছিলো রুশরা। উপনিবেশিক শাসন এমনভাবে চালু করেছিলো, যা অনেকটা ব্রিটিশ বা ফরাসি সম্রাজ্যের মতো দেখতে। 
রাজ্যগুলোকে শিল্পায়ন ও আধুনিকায়নের ফলে বিশাল পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। এমনকি যাযাবর জাতিকে যুদ্ধ যেতে বাধ্য করা হয়েছিলো। আর যাযাবর জাতিকে বসতি স্থাপনে বাধ্য করা হয়েছিলো। এরপর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ফলে কাজাখ জনগোষ্ঠীর চল্লিশ শতাংশ অর্থাৎ ২৫ শতাংশ মানুষ অনাহারে মারা যায়। এবং যাযাবর জনগোষ্ঠীর যে অর্থনীতি, তা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। কারণ সোভিয়েত আমলে কাজাখ যাযাবররা যে পশুপালন করতো তার নব্বই শতাংশই মারা যায়। ফলে বাধ্য হয়ে কাজাখদের যাযাবর জীবনযাত্রা ছেড়ে দিতে হয়। বলতে গেলে সোভিয়েত আমলে কাজাখ সভ্যতা ও সংস্কৃতির বেদনাদায়ক পুনর্গঠনের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। 

১৯৯১ সালে সোভিয়েন ইউনিয়নের পতন হয়, সৃষ্টি হয় এই পাঁচটি স্বাধীন দেশের। এই দেশগুলো স্বাধীন হয়েছে ঠিকই কিন্তু সোভিয়েত ইউনিয়ন পরবর্তী বিশ্বে খাপ খাইয়ে নিতে তাদের ব্যাপক সংগ্রাম করতে হয়। তবে বিগত কয়েক দশক ধরে মধ্য এশিয়ার যাযাবর জাতিগুলো নিজস্ব সীমানার মধ্যে এক অনন্য পরিচয় গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। যদিও তাদের ওপর বাইরের প্রভাবও রয়েছে। তুরস্ক এই অঞ্চলে নিজেদের উপস্থিতি আরও বেশি জানান দিচ্ছে। সাংস্কৃতিক, ঐতিহাসিক, ধর্মীয় এবং ভাষাগত মিল আছে। এমনকি শিক্ষাগত কাঠামোতেও মিল রয়েছে। তুরস্ক মধ্য এশিয়ায় রাশিয়ার পণ্য রফতানির একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হিসেবেও বিবেচিত। 

জিনজিয়াং প্রদেশে প্রায় এক কোটি উইঘুর বাস করেন। যাদের বেশিরভাগই মুসলিম। এদের নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া উইঘুর পরিচয় মুছে ফেলতে তাদের পুনঃশিক্ষা শিবিরে আটকে রাখার অভিযোগও আছে। যদিও চীন এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। 

বৈশ্বিক অবকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এর চীন মধ্য এশিয়ায় ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন করছে। এই অঞ্চলটিকে বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করতে চাইছে, যা অনেকটা সিল্করুটের মতোই। 

চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ উদ্যোগের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় প্রাচীন সিল্ক রোড পুনরুজ্জীবিত করার একটি সম্ভবনা দেখা দিয়েছে। এই রোড পুনরুজ্জীবিত হলে রাশিয়া আর চীনের প্রভাব বলয়ে থাকা এই অঞ্চলের ভূ রাজনৈতিক গুরুত্ব কতটা বাড়বে-সেটাও সময় বলে দেবে।  

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঝগড়া থেকে দেয়ালে মাথা ঠোকা, সালমান-ঐশ্বরিয়ার সম্পর্কের বিষয়ে প্রকাশ্যে আনলেন প্রতিবেশী
  • কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নরদের কাজ কি শুধু ভাইভা নেওয়া
  • কাজাকিস্তানের যাযাবর জাতির করুণ ইতিহাস 
  • চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী-গ্রামবাসীতে বিদ্বেষ কেন
  • চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ড: ট্রাম্প কি দাঙ্গা–ফ্যাসাদকেই নীতি হিসেবে নিয়েছেন