সাধারণত নানা রকম স্নায়ুজনিত জটিলতার সমস্যায় হাত–পায়ের অনুভূতিতে সমস্যা হয়। যেমন জ্বালা করা, ঝিঁঝিঁ করা বা অবশ হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা।

কেন স্নায়ুতে সমস্যা দেখা দেয়?

সবচেয়ে পরিচিত সমস্যা হলো ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি, মানে অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের কারণে স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের এ–জাতীয় সমস্যা বেশি।

সারভাইক্যাল/লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস: ঘাড় বা কোমরের হাড় ক্ষয়ে গিয়ে স্নায়ু চাপে পড়লে হাত/পায়ে অবশ মনে হতে পারে, ব্যথাও করতে পারে।

কারপাল টানেল সিনড্রোম: হাতের কবজির মধ্যে কারপাল টানেলে থাকা স্নায়ুতে চাপ পড়লে হাত ঝিঁঝিঁ ও ব্যথা করা এবং অবশ মনে হতে পারে। সাধারণত থাইরয়েড, ডায়াবেটিসের রোগীদের এটা বেশি হয়।

সায়াটিকা: কোমর থেকে পায়ের দিকে যে সায়াটিক নার্ভ আছে, সেটাতে চাপ পড়লে পা, ঊরুসহ ব্যথা ও জ্বালা হয়।

ভিটামিন বি১, বি৬, বি১২, ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি স্নায়ুর ক্ষতি করে।

স্নায়ুজনিত সমস্যা ছাড়াও হাত–পায়ে এমন অনুভূতি হতে পারে। যেমন রক্তস্বল্পতা বা রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা, রক্তে হিমোগ্লোবিন কম, খনিজ লবণের ঘাটতি, ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা। এ ছাড়া এ ধরনের স্নায়ুজনিত সমস্যার পেছনে থাইরয়েডের সমস্যা, ক্রনিক কিডনি ডিজিজ, লিভার সমস্যা, স্নায়ুর প্রদাহ, স্ট্রোক দায়ী হতে পারে।

প্রয়োজনীয় পরীক্ষা: স্নায়ুর সমস্যা দেখা দিলে রক্তের শর্করা, হিমোগ্লোবিন, ভিটামিনের মাত্রা, ক্রিয়েটিনিন, থাইরয়েড ইত্যাদি টেস্ট করা হয়। নার্ভের অবস্থা বুঝতে নার্ভ কন্ডাকশন টেস্ট করা যেতে পারে।

করণীয়

ডায়াবেটিস থাকলে সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। রক্তের হিমোগ্লোবিন কম থাকলে চিকিৎসা নিতে হবে। ভিটামিনের ঘাটতি থাকলে তা পূরণ করতে হবে।

স্নায়ু চাপে থাকলে ফিজিওথেরাপি ও প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে।

স্নায়ু ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করুন (২ দশমিক ৫ থেকে ৩ লিটার দৈনিক)। সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, দানাজাতীয় খাবার (ডাল, বাদাম) খেতে হবে। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন বি–সমৃদ্ধ খাবার (ডিম, দুধ, মাছ, লিভার, কলা, বাদাম) গ্রহণ করুন।

হালকা ব্যায়াম ও স্ট্রেচিং উপকারী। প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটুন। হাত ও পায়ের হালকা স্ট্রেচিং ব্যায়াম করুন, যা রক্ত সঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করবে। দীর্ঘক্ষণ একই ভঙ্গিতে বসে থাকা থেকে বিরত থাকুন।

নিউরোলজি চিকিৎসকের পরামর্শের পাশাপাশি নানা ধরনের ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে, যেমন আলট্রাসাউন্ড থেরাপি, আইএফটি, সারভাইক্যাল বা লাম্বার ট্রাকশন, মাইক্রোওয়েভ ডায়াথার্মি, শর্টওয়েভ ডায়াথার্মি ইত্যাদি সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।

হাত-পায়ের স্ট্রেনদেনিং এক্সারসাইজ, ঘাড় বা কোমরের সঠিক পজিশন মেইনটেইন করা, স্নায়ুর মবিলাইজেশন করা গুরুত্বপূর্ণ।

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স বা নিউরোট্রপিক ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট  স্নায়ুর ব্যথা কমাতে ব্যবহৃত হতে পারে।

এম ইয়াছিন আলী, চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল, ধানমন্ডি, ঢাকা

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

লাকসামে অস্ত্রের মুখে এতিমখানার ৫ গরু লুট, আহত ৮

কুমিল্লার লাকসামে একটি এতিমখানার খামার থেকে গত শুক্রবার পাঁচটি গরু লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল। এ সময় তাদের হামলায় মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আটজন আহত হন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করেছে।

গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের বড়বাম আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদরাসা ও এর সংলগ্ন এতিমখানার খামারে ঘটনাটি ঘটে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু লুট করেছিল ডাকাতরা।

আরো পড়ুন:

খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা-গুলি, শিক্ষক নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের হামলা: গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়।

এলাকাবাসী জানান, মাদরাসার আয় এই খামারের মাধ্যমে হয়। তিন মাসের ব্যবধানে দুই দফা ডাকাতি হওয়ায় শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। খামারের বড় গরুগুলো লুট হয়ে যাওয়ায় এক পাশ ফাঁকা পড়ে আছে। বর্তমানে খামারে ১১টি গরু অবশিষ্ট রয়েছে।

খামারের সামনে পড়ে আছে ডাকাত দলের ব্যবহৃত তুষের বস্তা, যা দিয়ে গরুগুলো পিকআপ ভ্যানে তোলে তারা। গরু উদ্ধার এবং ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

মামলার বাদী এবং মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন জানান, গত শুক্রবার ভোরে একদল ডাকাত দুটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে। শিক্ষকদের মারধর করে তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে যায় ডাকাতরা। তারা খামারে ঢুকে কেয়ারটেকার উৎসব হোসেনকে বেঁধে একে একে পাঁচটি গরু পিকআপ ভ্যানে তুলে নেয়। শিক্ষক ও ছাত্রদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।

মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা শরীফুল আলম খন্দকার জানান, খামারের আয়ের ওপর ভিত্তি করে মাদরাসার কার্যক্রম চলে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু নিয়ে যায় ডাকাতরা।

লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, “লুট হওয়া গরু উদ্ধার এবং ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।”

ঢাকা/রুবেল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ