শ্রাবণের বৃষ্টি ঝরতে পারে আরও দুই থেকে তিন দিন
Published: 24th, July 2025 GMT
শ্রাবণের বৃষ্টির অপেক্ষা এবার একটু বেশি ছিল। বেশ কয়েক দিন বৃষ্টি হয়নি। গরমে অতিষ্ঠ রাজধানীবাসী স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন আজ বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে। ঠান্ডা বাতাস আর বিজলির চমকে নেমেছে বৃষ্টি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী অন্তত দুই দিন দেশের আরও চার বিভাগে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে ঘন মেঘমালা দেশের বিস্তীর্ণ প্রান্তরে ছেয়ে গেছে। আর এ কারণেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হচ্ছে।
প্রায় চার দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি কমে গিয়েছিল। সেই সঙ্গে ছিল প্রচণ্ড গরম। বৃষ্টি কমে যাওয়াতে আর বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ অতিরিক্ত থাকায় ভ্যাপসা গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। এর মধ্যেই বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়।
আবহাওয়াবিদ তরিকুল নেওয়াজ কবীর আজ সকালে প্রথম আলোকে বলেন, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যে বৃষ্টি হচ্ছে, তা কিন্তু এই ঘন মেঘমালা সৃষ্টির জন্য। লঘুচাপের প্রভাবে আগামীকাল থেকে আরও বৃষ্টি হতে পারে। আগামী অন্তত দুই দিন খুলনা, চট্টগ্রাম বরিশাল ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কোনো এলাকায় বৃষ্টি যদি ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটারের মতো হয়, তবে তাকে ভারী বৃষ্টি বলা হয়। আর বৃষ্টির পরিমাণ ৮৮ মিলিমিটারের বেশি হলে তাকে অতি ভারী বৃষ্টি বলে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।