সোনারগাঁয়ে এপ্রোচ সড়কে পানি, ভোগান্তিতে ২০ গ্রামের মানুষ
Published: 26th, July 2025 GMT
সোনারগাঁয়ের মঙ্গলের গাঁও বটতলা এলাকায় কালভার্ট ব্রীজ নির্মাণে ধীরগতিতে এপ্রোচ সড়কে পানি উঠে ভোগান্তিতে চলাচল করছে ২০গ্রামের সাধারণ মানুষ।
মোগরাপাড়া চৌরাস্তা থেকে হোসেনপুর সড়কে পুরাতন ব্রীজ ভেঙ্গে ফেলে সড়ক বন্ধ করায় বিকল্প এপ্রোচ সড়ক নিচু করে নির্মাণের ফলে এ ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ।
এ সড়কে চলতে গিয়ে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ও ব্যটারি চালিত রিক্সা উল্টে গত এক মাসে প্রায় অর্ধ শতাধিক নারী পুরুষ ও শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এপ্রোচ সড়কটি উচু করে নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
তবে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি সমাধান করবেন বলে জানিয়েছের স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সোনারগাঁ উপজেলা প্রকৌশলী মো.
জানা যায়, উপজেলার মোগরাপাড়া থেকে হোসেনপুর বাজার সড়কের মঙ্গলেরগাঁও বটতলা এলাকায় ২ কোটি ১৮ লক্ষ ১ হাজার ৭শ ৭২ টাকা ব্যয়ে মেসার্স খাজা চিশতিয়া এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পায়।
কার্যাদেশ পাওয়ার পর ২০২৪ সালের ১লা সেপ্টেম্বর থেকে কালভার্ট নির্মাণ কাজ শুরু করেন। চলতি বছরের ৩১ আগষ্ট শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফলতির কারনে প্রায় ৬০ শতাংশ কাজও শেষ করতে পারেননি।
তবে কালভার্ট নির্মাণ করতে গিয়ে জন সাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে বিকল্প এপ্রোচ সড়ক নির্মাণ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ এপ্রোচ সড়কটি নিচু করে নির্মাণ করায় বর্তমানে পানির নিচে তলিয়ে যায়। তবে বৃষ্টি হলে হাটু পানিতে তলিয়ে থাকে সড়কটি।
ফলে ওই এলাকার মঙ্গলেরগাঁও, দুধঘাটা, পাঁচআনি, চরগোয়ালদী, দূর্গা প্রসাদ, চৌধুরী গাঁও, কাজিরগাঁও, তাতুয়াকান্দি, এলাহী নগর, রামগোবিন্দেরগাঁও, হোসেনপুর, একরামপুর, দড়িগাঁও, মনারকান্দি, ফরদি ও ফতেপুরসহ প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। গত এক মাসে এ সড়কে চলতে গিয়ে সিএনজি চালিত অটোরিক্সা ও ব্যটারি চালিত রিক্সা উল্টে অর্ধ শতাধিক নারী পুরুষ ও শিক্ষার্থী আহত হন।
তাতুয়াকান্দি গ্রামের আনোয়ার হোসেন জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিকল্প এপ্রোচ সড়কটি নিচু করে নির্মাণ করায় বেশিরভাগ সময়েই পানির নিচে তলিয়ে থাকে। পাশাপাশি সড়কে খানাখন্দ হয়ে গাড়ি উল্টে মানুষ আহত হচ্ছেন। প্রশাসনের কাছে একাধিকবার জানিয়েও কোন লাভ হয়নি।
দুধঘাটা গ্রামের আশরাফুল আলম জানান, সড়কটি পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার কারনে মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। প্রতিদিন কোন না কোন গাড়ি উল্টে মানুষ আহত হচ্ছেন। দ্রুত সড়কটি উচু করে নির্মাণের দাবি করেন তিনি।
সোনারগাঁ সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী সানিকা আক্তার জানান, তিনি অটোরিক্সা উল্টো আহত হয়েছেন। এ সড়কে চলাচল করতে গেলে তিনি এখনো ভয়ে আঁতকে উঠেন।
চৌধুরীগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জিয়াউর রহমান বলেন, কালভার্ট নির্মাণের পাশাপাশি এপ্রোচ সড়কটি সংস্কার হওয়া জরুরি। সাধারণ মানুষের দূর্ভোগ লাঘবে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খাজা চিশতিয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী তমাল ঘোষ জানান, কিছু জটিলতার কারনে কাজ শেষে করতে পারেননি। বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার কারনে এমন ভোগান্তিতে পড়েছেন। এ জন্য তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছেন। রাস্তা উচু করতে হলে তিনি করে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সোনারগাঁ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আলমগীর চৌধুরী জানান, নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে। এপ্রোচ সড়কটি উচু করার জন্য ইতোমধ্যে ভেকু নেওয়া হয়েছে। তিনিও ভূক্তভোগী বলে জানিয়েছেন।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ ন র ম ণ কর প রক শ র ক রন স ন রগ
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর
শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক ফেনী শহরের ব্যস্ততম রাস্তা। এই সড়কের পাশেই শহরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা। একটু ভারী বৃষ্টিতেই ডুবে যায় সড়কটি। গত বছরের আগস্টের ভয়াবহ বন্যায় সড়কের দুই কিলোমিটার অংশ কোমরপানিতে তলিয়ে ছিল পাঁচ দিন। এতে সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে খানাখন্দ তৈরি হয়। পানি নেমে যাওয়ার পর পাথর ও ইটের সুরকি দিয়ে অস্থায়ী মেরামত করা হলেও স্থায়ী সংস্কার হয়নি। এ বছর বর্ষায় সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় আরও বেহাল হয়েছে সড়কটির দশা। ছোট ছোট গর্তে ভরা এই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলে ধীরগতিতে। ফলে সড়কে যানজট লেগেই থাকে।
পৌর শহরের এই প্রধান সড়কে তা–ও যানবাহন চলে কোনোরকমে। শহরের অলিগলি আর অভ্যন্তরীণ সড়কের দশা এর চেয়ে অনেক বেহাল। শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক থেকে একটু এগোলে হাসপাতাল মোড় থেকে সালাহ উদ্দিন মোড় পর্যন্ত যে সড়কটি রয়েছে, তাতে আগাগোড়াই বড় বড় খানাখন্দ। সড়কটির সাহেববাড়ি অংশে বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় ইট দিয়ে সাময়িক মেরামত করলেও ছোট-বড় গাড়ির চাকা সেসবকে স্থায়ী হতে দেয়নি। এটিসহ পৌরসভার ছোট-বড় প্রায় ৩০টির বেশি সড়ক এখনো বন্যার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছে। ২০২৪ সালের বন্যার এক বছর পার হলেও ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর দৃশ্যমান কোনো সংস্কার হয়নি। তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো দ্রুত মেরামতের কাজ অচিরেই শুরু হবে।
একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।
সরেজমিন ঘুরে শহরের পাঠানবাড়ি সড়ক, মাস্টারপাড়া মুন্সিবাড়ি সড়ক, কদল গাজী সড়ক, বিরিঞ্চি প্রাইমারি স্কুল সড়ক, বিরিঞ্চি রতন সড়ক, সুলতানপুর আমির উদ্দিন সড়ক, গাজী ক্রস রোড, সুফি সদর উদ্দিন সড়ক, আবু বক্কর সড়ক, শহীদ ওবায়দুল হক সড়ক, মহিপাল চৌধুরী বাড়ি সড়ক, চাড়িপুর মৌলভী আব্দুস সালাম সড়ক, উত্তর চারিপুর বাইতুশ শরিফ সড়ক, পূর্ব বিজয় সিং ছোট হুদা দিঘি সড়ক, মধুপুর মালেক মিয়া বাজার সড়কের বেহাল দশা দেখা গেছে। সব মিলিয়ে ৩০টি সড়কের সব কটিই এখন বেহাল।
একসময়ের ছিমছাম ও সাজানো ফেনী এখন ভাঙাচোরা সড়কের শহর। খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে গাড়ি চলে হেলেদুলে। হালকা বৃষ্টিতেও প্রায় সব সড়কে পানি জমে যায়। পানিনিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়কে পানি জমে। অধিকাংশ সড়কের পিচঢালাই উঠে যাচ্ছে। ক্ষতবিক্ষত সড়ক শহরকে যেমন শ্রীহীন করেছে, তেমনি বাড়িয়েছে জনদুর্ভোগ।ফেনী পৌরসভায় ইজিবাইক চালান সুজাউদ্দিন। ভাঙাচোরা সড়কের কারণে অন্য অনেকের চেয়ে তাঁকে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় বলে জানিয়েছেন। ফেনীর শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কে সম্প্রতি সুজাউদ্দিনের সঙ্গে দেখা হয়। কথায় কথায় তিনি বলেন, ছোট-বড় গর্ত থাকায় অতিরিক্ত ঝাঁকুনিতে প্রতিনিয়ত গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। অনেক সময় যাত্রীরা গাড়ি থেকে পড়ে যাওয়ার দশা হয়। রাস্তা খারাপ হওয়ায় ভাড়াও কমেছে তাঁর।
শাহিন একাডেমি এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইব্রাহিম শহরের সড়কগুলোর ড্রেনেজ ব্যবস্থা নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সড়কের পাশে পর্যাপ্ত নালা নেই। এ কারণে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে। বাড়ির সামনের সড়কের এই হাল হলে আর কাজকর্ম করতে ইচ্ছা হয় না।
ফেনী পৌরসভার বিসিক–মুক্তার বাড়ি সড়কের মাঝে এমন বড় বড় খানাখন্দ