প্রতিবছর জুলাই মাস বিশ্বব্যাপী ‘জরায়ুর ফাইব্রয়েড সচেতনতা মাস’ হিসেবে পালিত হয়। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য নারীদের মধ্যে জরায়ুর ফাইব্রয়েড বা টিউমার নিয়ে সচেতনতা বাড়ানো, এর সঠিক চিকিৎসা ও পরামর্শের সুযোগ নিশ্চিত করা এবং সুস্থ জীবনযাত্রার গুরুত্ব তুলে ধরা।
ফাইব্রয়েড হলো জরায়ুর একধরনের নন ক্যানসারাস টিউমার বা মাংসপিণ্ড, যা প্রজননক্ষম নারীদের হতে পারে। লেইওমায়োমা বা মায়োমা নামেও এটি পরিচিত। জরায়ুতে নানা ধরনের টিউমারের মধ্যে বেশি দেখা যায় ফাইব্রয়েড। সাধারণত ৩০ থেকে ৫০ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি হয়ে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি নিরীহ হয়। তবে সঠিক সময়ে এর চিকিৎসা না করলে জীবনমানের ওপর গুরুতর প্রভাব ফেলে।
লক্ষণ বা উপসর্গ
এই টিউমার লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াও থাকতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অন্য কোনো সমস্যায় পেটের আলট্রাসাউন্ড করতে গিয়ে ধরা পড়ে। তবে যেসব লক্ষণ দেখা যেতে পারে—
অতিরিক্ত ও দীর্ঘ সময় ধরে ঋতুস্রাব।
তলপেটে চাপ বা ব্যথা। শরীর ফুলে যাওয়া।
ঘন ঘন প্রস্রাব বা মূত্রনালির সমস্যা।
সহবাসের সময় ব্যথা অনুভব করা।
গর্ভধারণে সমস্যা বা বন্ধ্যত্ব।
বয়স ও বংশগতির প্রভাব।
ওজনাধিক্য, হরমোন পরিবর্তন ইত্যাদি।
নির্ণয় ও চিকিৎসা
আলট্রাসাউন্ড, পেলভিক ইমেজিং, এমআরআই বা জরুরি ক্ষেত্রে হাইফু বা হিস্টেরস্কোপি ব্যবহারের মাধ্যমে জরায়ুতে ফাইব্রয়েড শনাক্ত করা যায়।
টিউমার ছোট হলে বা উপসর্গ না থাকলে ওষুধ ও পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। গুরুতর ক্ষেত্রে মায়োমেকটমি, ইউটেরাইন আর্টারি এম্বোলাইজেশন, এমআরআই গাইডেড ফোকাসড আলট্রাসাউন্ড বা জরায়ু অপসারণ করা হয়। চিকিৎসার ধরন বাছাইয়ে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কেন সচেতনতা জরুরি
ফাইব্রয়েড খুবই পরিচিত একটি সমস্যা। কিন্তু অনেক নারী উপসর্গ পেয়েও সময়মতো এর চিকিৎসা নেন না। এতে করে দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা হতে পারে। মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, ক্ষুধা, ক্লান্তি, বন্ধ্যত্ব নিয়ে উদ্বেগ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা—এসব ঝুঁকি মোকাবিলায় মানসিক সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে।
এই টিউমার ডিজেনারেটিভ, ইনফেকশন অথবা সারকোমেটাজে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। এর মধ্যে সারকোমেটাজ বা জরায়ু ক্যানসারে রূপ নেয় মাত্র শূন্য দশমিক ১ শতাংশ ক্ষেত্রে। তাই ক্যানসার ভেবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
ফাইব্রয়েড নিয়ে গবেষণা এখনো সীমিত। এর জন্য প্রয়োজন সচেতনতা ও সময়মতো চিকিৎসা। ফাইব্রয়েড হলে সন্তান হবে না, এমন ধারণাও অমূলক। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগনির্ণয় ও চিকিৎসার মাধ্যমে অনেক জটিলতা এড়ানো যায়। এ জন্য স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
ডা.
শারমিন আব্বাসি, স্ত্রীরোগ ও বন্ধ্যত্ববিশেষজ্ঞ
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
এমআরআইয়ের অপেক্ষায় সোহান-শরিফুল
মাঠে ফিল্ডিংয়ের সময় গোড়ালি মচকে চরম ব্যথা পেয়েছেন কাজী নুরুল হাসান সোহান। একই অবস্থা শরিফুল ইসলামের। তার হ্যামস্ট্রিংয়ে টান পড়েছে। দুজনকেই পর্যবেক্ষণে রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
সকালে দলের সঙ্গে ঢাকা আসেননি তারা। আলাদা ব্যবস্থায় তাদের দুজনকে আজ বিকেলে বা সন্ধ্যায় ঢাকা আনা হবে। আগামীকাল ঢাকায় দুজনের এমআরআই করানোর পর চোট সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে পারবে বিসিবির মেডিকেল বিভাগ।
চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে গতকাল শুক্রবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসের ১১তম ওভারে চোট পান সোহান। তার বাম পায়ের গোড়ালি মচকে যায়। ব্যথায় মাঠেই কাতরাতে থাকেন তিনি। চোটের পর তাকে স্ট্রেচারে করে মাঠ থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা, এক্স রে করানোর পর প্ল্যাস্টার করানো হয়। রাতেই হাসপাতাল থেকে হোটেলে ফেরেন এই ক্রিকেটার। সোহানের যে চোট তাতে তার মাঠে ফিরতে সময় লাগবে বলেই ধারনা করা হচ্ছে। অন্তত ৫ সপ্তাহ তাকে বিশ্রামে থাকতে হবে। এরপর পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। এখন অবস্থান করছেন চট্টগ্রামে।
একই ম্যাচে শরিফুল ২ ওভার করার পর তার হ্যামস্ট্রিংয়ে টান পড়ে। আজ ঢাকায় ফেরার পর আগামীকাল তাদের এমআরআই করানো হবে।
ঢাকা/ইয়াসিন