রাকসু নির্বাচনে একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র স্থাপনসহ ৩ দাবি ছাত্র জোটের
Published: 29th, July 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেটে ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনে আবাসিক হলে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে একাডেমিক ভবনে স্থাপনসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাম ছাত্র সংগঠনগুলোর মোর্চা গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের পেছনে সংবাদ সম্মেলন করে জোটের নেতারা এসব দাবি উত্থাপন করেন।
তাঁদের অন্য দুই দাবি হলো সাতটি আবাসিক হলে কোরআন পোড়ানো, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদের বাসভবনে ককটেল বিস্ফোরণ এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের কর্মসূচিতে সন্ত্রাসী হামলার তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং সাইবার বুলিং রোধে কার্যকর সেল গঠন করতে হবে।
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিপ্লবী ছাত্র-যুব আন্দোলনের সংগঠক তারেক আশরাফ। তিনি বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের পর আমরা ক্যাম্পাসে একটি নিরাপদ রাজনৈতিক পরিবেশ প্রত্যাশা করলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তা নিশ্চিত করতে পারেনি। একটি মহল ক্যাম্পাসে নিজেদের বেপরোয়া আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রশাসনের দৃঢ়তা ও নিরপেক্ষতা নিয়ে আস্থার সংকট তৈরি করেছে।’
তারেক আশরাফ বলেন, রাকসু নির্বাচনের তফসিলে আবাসিক হলে ভোটকেন্দ্র স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু ২০১৮ সালের ডাকসু নির্বাচনের তিক্ত অভিজ্ঞতায় তাঁরা দেখেছেন, ‘ফলস-লাইন’ তৈরি করে ভোটারদের বিভ্রান্ত করা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, অর্থ ছড়ানোর মাধ্যমে লেবেল প্লেয়িং ফিল্ডকে ম্যানুপুলেট করাসহ নানা আধিপত্য কায়েমের মাধ্যমে ছাত্র সংসদ দখল করেছিল তৎকালীন ছাত্রলীগ। জুলাই অভ্যুত্থানের পর ক্যাম্পাসগুলোতে সেই ছাত্রলীগ নেই। তবে সন্ত্রাস ও দখলদারির সংস্কৃতি মোটেও হারিয়ে যায়নি। নতুন কোনো অপশক্তির আধিপত্য দ্বারা ছাত্র সংসদ দখল হওয়ার আশঙ্কা থেকে গেছে। তাই আবাসিক হলের বদলে একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র স্থাপিত হলে অধিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যাবে।
তারেক আশরাফ আরও বলেন, বিচারহীনতা শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাসকে নীরব প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল। এ অবস্থায় আসন্ন রাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন বড় ধরনের অঘটন ঘটালে তার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেই নিতে হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, ‘আমরা কোনোভাবেই চাই না শেষ মুহূর্তে এসে রাকসু নির্বাচন বিতর্কিত হোক বা এর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বাস্তবায়ন বিঘ্নিত হোক। কিন্তু অতীতে কিছু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটেছে, যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করতে প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। প্রশাসন যদি বিগত ঘটনাগুলোর বিচার নিশ্চিত করতে না পারে, তবে সাধারণ শিক্ষার্থীরা নির্ভয়ে রাকসুর সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে পারবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্র ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ কায়সার আহমেদ, ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সরকার, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার আলিফ শাহরিয়ার ও ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক আহমেদ ইমতিয়াজ উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ টক ন দ র স থ প ন শ চ ত কর
এছাড়াও পড়ুন:
লাকসামে অস্ত্রের মুখে এতিমখানার ৫ গরু লুট, আহত ৮
কুমিল্লার লাকসামে একটি এতিমখানার খামার থেকে গত শুক্রবার পাঁচটি গরু লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল। এ সময় তাদের হামলায় মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আটজন আহত হন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করেছে।
গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের বড়বাম আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদরাসা ও এর সংলগ্ন এতিমখানার খামারে ঘটনাটি ঘটে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু লুট করেছিল ডাকাতরা।
আরো পড়ুন:
খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা-গুলি, শিক্ষক নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের হামলা: গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
এলাকাবাসী জানান, মাদরাসার আয় এই খামারের মাধ্যমে হয়। তিন মাসের ব্যবধানে দুই দফা ডাকাতি হওয়ায় শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। খামারের বড় গরুগুলো লুট হয়ে যাওয়ায় এক পাশ ফাঁকা পড়ে আছে। বর্তমানে খামারে ১১টি গরু অবশিষ্ট রয়েছে।
খামারের সামনে পড়ে আছে ডাকাত দলের ব্যবহৃত তুষের বস্তা, যা দিয়ে গরুগুলো পিকআপ ভ্যানে তোলে তারা। গরু উদ্ধার এবং ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
মামলার বাদী এবং মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন জানান, গত শুক্রবার ভোরে একদল ডাকাত দুটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে। শিক্ষকদের মারধর করে তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে যায় ডাকাতরা। তারা খামারে ঢুকে কেয়ারটেকার উৎসব হোসেনকে বেঁধে একে একে পাঁচটি গরু পিকআপ ভ্যানে তুলে নেয়। শিক্ষক ও ছাত্রদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা শরীফুল আলম খন্দকার জানান, খামারের আয়ের ওপর ভিত্তি করে মাদরাসার কার্যক্রম চলে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু নিয়ে যায় ডাকাতরা।
লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, “লুট হওয়া গরু উদ্ধার এবং ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।”
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ