রূপগঞ্জে বিরোধের জেরে বৃদ্ধের পায়ে গুলি, অভিযুক্ত ছাত্রদলের সাবেক নেতা পলাতক
Published: 29th, July 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বশত্রুতার জেরে শামসুদ্দোহা (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গতকাল সোমবার রাতে উপজেলার তারাব পৌরসভার কর্ণগোপ এলাকায় এই গুলির ঘটনা ঘটে। বর্তমানে তিনি রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
শামসুদ্দোহা একই এলাকার বাসিন্দা ও রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের কার্যকরী সদস্য রিপনের মামা। শামসুদ্দোহার ছেলে ভূঁইয়া মোহাম্মদ নাসিমের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে রিপনের সঙ্গে একটি সংঘর্ষের জেরে শামসুদ্দোহাকে গুলি করেছেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ও তাঁর ভাগনে উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব চৌধুরী।
পুলিশ, আহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত সরকারের আমলে রিপনের সঙ্গে সাকিবের সংঘর্ষ হয়। এ সময় সাকিবের পক্ষ নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পায়ে গুরুতর আঘাত পান শফিকুল। ওই দ্বন্দ্বের জেরেই শামসুদ্দোহার কাছে ক্ষতিপূরণ হিসেবে তিন লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন শফিকুল। ওই টাকা না দেওয়ায় গতকাল রাত ১০টার দিকে কর্ণগোপ এলাকায় বাড়িতে ঢুকে শামসুদ্দোহার পায়ে গুলি করেন সাকিব ও শফিকুল। পরে স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
স্থানীয় যুবদল ও বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, গত বছরের ৫ আগস্টের পর নিজেকে এলাকায় যুবদল নেতা পরিচয় দিয়ে ব্যানার–পোস্টার তৈরি করেন শফিকুল। তিনি নিজের একটি বাহিনী গঠন করে সেখানে মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, ডাকাতি, চুরি ও জমি দখলের মতো ঘটনা ঘটিয়ে বারবার আলোচনায় আসছেন।
এ বিষয়ে তারাব পৌরসভা বিএনপির আহ্বায়ক আফজাল কবির প্রথম আলোকে বলেন, শফিকুল যুবদলের কেউ নন, একসময় ছাত্রদল করতেন। এখন এলাকায় যুবদল পরিচয়ে নানা অপকর্ম করে বেড়ান। তাঁর বিষয়ে থানায় একাধিকবার জানানো হয়েছে। গতকাল রাতের ঘটনার পরও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে অনুরোধ করা হয়েছে।
ঘটনাটির পর শফিকুল ও সাকিব এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে শফিকুলের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে কল করা হলে, সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি জানিয়ে রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ এল ক য় য বদল
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যানসারে আক্রান্ত ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর শরীরে ত্বকের ক্যানসার শনাক্ত হয়েছে। বমি ও নিম্ন রক্তচাপের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার শরীরে ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
আরো পড়ুন:
৬ বছর পর ব্রাজিলকে হারিয়ে বিশ্বকাপ প্লে-অফে বলিভিয়া
মারাকানায় ব্রাজিলের বড় জয়
প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার একদিন পর তার ত্বকের ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে।
বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তার ত্বকের পরীক্ষা করে ‘স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা’ শনাক্ত হয়েছে।এটি ত্বকের মাঝারি মাত্রার ক্যানসার, যা সবচেয়ে হালকা ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ধাপের মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে।
চিকিৎসকরা বলেছেন যে, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। ৭০ বছর বয়সী বলসোনারো গত মঙ্গলবার বমি এবং নিম্ন রক্তচাপের কারণে ব্রাসিলিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে ক্যানসারের বিষয়টি গত রবিবারের পরীক্ষায় ধরা পড়ে, যখন তার বুক ও হাতে থাকা ক্ষতস্থানের টিস্যু অপসারণ করা হয়েছিল।
তার অনকোলজিস্ট ক্লাউদিও বিয়ারোলিনি জানিয়েছেন, বলসোনারোর ক্যানসার ‘ইন সিটু’ ধাপে রয়েছে, অর্থাৎ অস্বাভাবিক কোষগুলো এখনো ছড়িয়ে পড়েনি। অস্ত্রোপচারই এর চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট হবে। বর্তমানে বলসোনারোর শরীরে সেলাই ও ব্যান্ডেজ রয়েছে, যা দুই সপ্তাহের মধ্যে খোলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বুধবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন, যেখানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
বলসোনারো ২০২২ থেকে ২০২৩ সালে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই গৃহবন্দি ছিলেন। সম্প্রতি তাকে ২৭ বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরেসের নির্দেশ অনুযায়ী, গৃহবন্দিত্বে থাকলেও চিকিৎসা জরুরি হলে তিনি বাসার বাইরে যেতে পারেন। তবে প্রতিবারই তার আইনজীবীদের আদালতে চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হয়।
বলসোনারোর সমর্থকরা তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতিকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরছেন, যাতে তিনি কারাগারে না গিয়ে বাড়িতেই সাজা ভোগ করতে পারেন। তাদের দাবি, কারাগারে নিলে তার শারীরিক জটিলতা বা দুর্ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়বে।
তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “আমার বাবা আগেও কঠিন লড়াই লড়ে জয়ী হয়েছেন। এবারও ভিন্ন কিছু হবে না।”
ঢাকা/ফিরোজ