ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা ও নিষ্ঠুরতম বর্বরতা থেকে রক্ষা করতে অবিলম্বে পরিপূর্ণ যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। 

আজ বুধবার ফিলিস্তিন সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান। 

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ইসরায়েল এ পর্যন্ত ৫৮ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে গণহত্যা অব্যাহত রেখেছে। তিনি ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী সকলকে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন:

ইসরায়েলি মানবাধিকার সংগঠনই বলছে, ‘গাজায় গণহত্যা চলছে’

ফিলিস্তিন সংকট সমাধান: সবার দৃষ্টি জাতিসংঘের বিশ্ব সম্মেলনে

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন পুর্নব্যক্ত করে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি স্থাপনের একমাত্র পথ হিসেবে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের লক্ষ্যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। 

গাজা পুনর্গঠনে আরব পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের নেতৃত্বে গাজা পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে প্রস্তত রয়েছে। তিনি গাজায় জাতিসংঘের ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম বাধা দেয়ার যেকোনো প্রচেষ্টা সর্বাত্বকভাবে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানান।

২০২৩ সালের অক্টোবরের পর হতে গাজায় অব্যাহত ইসরায়েলি আক্রমণের প্রেক্ষাপটে ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি একাত্মতা প্রকাশ এবং একটি স্থায়ী সমাধানের পথ সুগম করতে জাতিসংঘের সদস্যদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করার জন্য ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ‘জাতিসংঘ হাইলেভেল ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স ফর দ্য পিসফুল সেটেলমেন্ট অব দ্য কোয়েশ্চেন অব প্যালেস্টাইন অ্যান্ড দ্য ইমপ্লিমেন্টেশন অব দ্য টু-স্টেট সল্যুশন’ শীর্ষক মন্ত্রী পর্যায়ের এই সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

এতে বাংলাদেশসহ ১১৮টি দেশের প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করছে।

ঢাকা/হাসান/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট পরর ষ ট র উপদ ষ ট র আহ ব ন জ ন আহ ব ন জ ন ন ইসর য় ল গণহত য

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল: বলছে ইসরায়েলভিত্তিক দুই মানবাধিকার সংস্থা

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েল গণহত্যা চালাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছে ইসরায়েলভিত্তিক শীর্ষস্থানীয় দুটি মানবাধিকার সংস্থা—বতসেলেম ও ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস। সংস্থা দুটি বলেছে, ইসরায়েলকে থামানো দেশটির পশ্চিমা মিত্রদের নৈতিক ও আইনি দায়িত্ব।

আজ সোমবার মানবাধিকার সংস্থা দুটির প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজায় বেসামরিক লোকজনের পরিচয় ফিলিস্তিনি হওয়ার কারণেই কেবল প্রায় দুই বছর ধরে তাঁদের নিশানা করছে ইসরায়েল। এর ফলে ফিলিস্তিনি সমাজে মারাত্মক—কোনো কোনো ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে।

২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় নৃশংসতা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক ও ফিলিস্তিনি সংস্থা একে গণহত্যা বলে বর্ণনা করেছে। এবার ইসরায়েলের সবচেয়ে প্রভাবশালী দুটি মানবাধিকার সংস্থা এ প্রতিবেদন দেওয়ার পর দেশটির ওপর চাপ আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে গাজায় ইসরায়েলের অপরাধের বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে হাজার হাজার নারী, শিশু ও বৃদ্ধ ফিলিস্তিনিকে হত্যা; গণহারে বাস্তুচ্যুত করা এবং মানুষকে অনাহারে রাখা। এ ছাড়া ইসরায়েলের হামলায় ঘরবাড়িসহ বেসামরিক স্থাপনা ধ্বংসের ফলে ফিলিস্তিনিরা স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাসহ বিভিন্ন মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বতসেলেমের পরিচালক ইউলি নোভাক বলেন, ‘আমরা যা দেখতে পাচ্ছি তা স্পষ্ট—একটি গোষ্ঠীকে ধ্বংস করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক লোকজনের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে।’ জরুরি পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, সবাইকে নিজেদের জিজ্ঞাসা করতে হবে—গণহত্যার মুখে আপনি কী করবেন?’

ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস তাদের প্রতিবেদনে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর ইসরায়েলের হামলা ধারাবাহিকভাবে তুলে ধরার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। অনেক হামলার তথ্য বিস্তারিত আকারে সংগ্রহ করে নথিবদ্ধ করেছে সংস্থাটির নিজস্ব দল। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর সংঘাত শুরুর আগে গাজায় নিয়মিত কার্যক্রম চালাত সংস্থাটি।

ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটসের পরিচালক গায় শালেভ বলেন, গণহত্যাবিষয়ক কনভেনশনের ২(সি) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শুধু স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর চালানো ধ্বংসযজ্ঞই এই ‘যুদ্ধকে’ গণহত্যায় পরিণত করেছে। কোনো কিছুকে গণহত্যা বলার জন্য সনদের পাঁচটি অনুচ্ছেদের—সবকটি পূরণ করার প্রয়োজন নেই।

নিজেদের প্রতিবেদনে দুটি মানবাধিকার সংস্থাই বলেছে, ইসরায়েলের পশ্চিমা মিত্ররা দেশটির গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে। গাজায় মানুষের দুর্ভোগের জন্য তারাও যৌথভাবে দায়ী। ইউলি নোভাক বলেন, ‘পশ্চিমা বিশ্বের সহায়তা ছাড়া এটি (গণহত্যা) সম্ভব হতো না। কোনো নেতাই এটি থামানোর জন্য নিজেদের সাধ্য অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছেন না।’

আরও পড়ুনদ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘে সম্মেলন শুরু আজ১ ঘণ্টা আগে

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলো এত দিন পর্যন্ত যা করেছে, তার চেয়ে এখন তাদের জোরালো পদক্ষেপ নেওয়ার আইনি দায়িত্ব রয়েছে বলে মনে করেন গায় শালেভ। তিনি বলেন, ‘নিজেদের হাতে থাকা সব কৌশল কাজে লাগাতে হবে। নিজেদের চিন্তাভাবনা থেকে আমরা এই কথা বলছি না। এই আহ্বান গণহত্যা কনভেনশনেই জানানো হয়েছে।’

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসের হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। দেশটি থেকে প্রায় আড়াই শ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেদিন থেকে গাজায় নির্বিচার হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তারপরও উপত্যকাটিতে গণহত্যা চালানোর কথা স্বীকার করেনি ইসরায়েল সরকার।

আরও পড়ুনগাজায় অপুষ্টি উদ্বেগজনক পর্যায়ে, সতর্ক করল ডব্লিউএইচও১৩ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফিলিস্তিনি জনগণকে গণহত্যা থেকে রক্ষায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বান
  • বাঘ রক্ষায় সুন্দরবনের চারপাশে হবে সুরক্ষাবলয়: পরিবেশ উপদেষ্টা
  • গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬০ হাজার ছাড়াল
  • গণহত্যার বিচারের পর পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন দাবি রেজাউল করীমের
  • শেখ হাসিনা যে অপরাধ করেছে, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীও তা করে নাই: আসিফ নজরুল
  • সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
  • গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল: বলছে ইসরায়েলভিত্তিক দুই মানবাধিকার সংস্থা
  • জনগণকে নিয়ে সংস্কার করতে হলে নির্বাচন দিতে হবে: জোনায়েদ সাকি
  • থাইল্যান্ডে ব্যস্ত বাজারে বন্দুক হামলায় নিহত ৫, হামলাকারীর আত্মহত্যা