এমবাপ্পেই রিয়ালের নতুন ‘১০ নম্বর’
Published: 30th, July 2025 GMT
কিলিয়ান এমবাপ্পে না আরদা গুলের—জার্সিটি উঠবে কার গায়ে? এ প্রশ্নের উত্তরের অপেক্ষায় ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের সমর্থকেরা। কাল রাতে নিজেদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হ্যান্ডলে তা জানিয়ে দিয়েছে মাদ্রিদের ক্লাবটি। ড্রেসিংরুমে ঝুলিয়ে রাখা রিয়ালের ১০ নম্বর জার্সির একটি ছবি পোস্ট করা হয়। সাদা রঙের সে জার্সিতে লেখা নামটা—এমবাপ্পে। গুলের এই পোস্টে ‘লাইক’ দিয়েছেন।
রিয়ালের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল থেকে আরও একটি ছবি পোস্ট করা হয় গতকাল রাতে, যে ছবি প্রায় একই সময়ে এমবাপ্পেও পোস্ট করেন নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে। ক্লাবের ১০ নম্বর জার্সি পরে হাত উঁচু করে দাঁড়িয়ে এমবাপ্পে—ফরাসি তারকার এই পোস্টে আগুনের ইমো দিয়ে মন্তব্য করেন লুকা মদরিচ। ক্রোয়াট কিংবদন্তির বিশ্বাস, রিয়ালের ১০ নম্বর জার্সি গায়ে মাঠে এমবাপ্পে আগুনের মতোই অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠবেন। সাত মৌসুম ধরে রিয়ালের এই জার্সি শোভা পেয়েছে মদরিচের গায়ে। ক্লাব বিশ্বকাপ শেষে ঠিকানা পাল্টে তিনি এসি মিলানে নাম লেখানোয় ২০১৭ সালের পর এবারই প্রথম ফাঁকা পড়েছিল রিয়ালের ১০ নম্বর জার্সি।
আরও পড়ুনউরুগুয়েকে উড়িয়ে কোপা আমেরিকার ফাইনালে ব্রাজিল, টানা পঞ্চম শিরোপা জয়ের অপেক্ষা১ ঘণ্টা আগেমদরিচের ঠিকানা পাল্টানোর মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছিল, তাঁর কাছ থেকে ১০ নম্বর জার্সিটি পাবেন কে? উত্তরটা এখন জানিয়ে দিল রিয়াল। ২০২৫-২৬ মৌসুম থেকে রিয়ালের নতুন ১০ নম্বর হবে এমবাপ্পের। ৯ নম্বর জার্সি ছেড়ে এখন তিনি ১০ নম্বর। জার্সির সঙ্গে এমবাপ্পের ব্যক্তিগত আবেগও জড়িয়ে আছে। নিজের জীবন নিয়ে তিনি যে কমিক বই বের করেছেন, সেখানে একটি দৃশ্যে দেখা যায়, খুব অল্প বয়সী এমবাপ্পে বড়দিনের উপহার হিসেবে রিয়ালের ১০ নম্বর জার্সি পেয়েছেন।
রিয়ালের ১০ নম্বর জার্সি যে পাচ্ছেন, তা সপ্তাহখানেক আগে নিজের এক্স হ্যান্ডলে করা পোস্টে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন এমবাপ্পে। কাল রিয়ালের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এটাই নিশ্চিত করা হলো। ক্লাবের ওয়েবসাইটেও এমবাপ্পের জার্সি নম্বর হালনাগাদ করা হয়েছে। আজ এমবাপ্পের ১০ নম্বর জার্সি বিক্রি শুরু করবে রিয়াল।
গত মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে ৫৯ ম্যাচে ৪৪ গোল করে পিচিচি ও গোল্ডেন শু পুরস্কারও জেতেন এমবাপ্পে। নতুন মৌসুম শুরুর আগে এবং মদরিচ চলে যাওয়ার কারণে ১০ নম্বর জার্সিটিও ফাঁকা হয়ে পড়ায় এমবাপ্পের হাতে সেটা তুলে দিয়ে তাঁকে পুরস্কৃত করল রিয়াল।
আরও পড়ুন২৫ বছর পর রিয়ালে ব্যালন ডি’অরজয়ী কেউ রইলেন না২৯ জুলাই ২০২৫ফ্রান্স জাতীয় দলের ১০ নম্বর জার্সিটিও বহু বছর ধরে এমবাপ্পের। পিএসজিতে পরতেন ৭ নম্বর জার্সি। এমবাপ্পে ৯ নম্বর জার্সি ছেড়ে দেওয়ায় এখন সেটা ফাঁকা হয়ে পড়ল। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘মার্কা’ জানিয়েছে, রিয়ালের ৯ নম্বর জার্সি পাওয়ার দৌড়ে এগিয়ে তিনজন—ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনো, গঞ্জালো গার্সিয়া ও এনদ্রিক।
রিয়ালের ১০ নম্বর জার্সির একটা আলাদা ওজন আছে। ক্লাবটির কিংবদন্তি খেলোয়াড়দের গায়ে এই জার্সি উঠেছে। রেমন্ড কোপা, ফেরেঙ্ক পুসকাস, গিওর্গি হ্যাজি, মাইকেল লাউড্রপ, লুইস ফিগো, ক্ল্যারেন্স সিডর্ফ, মেসুত ওজিলরা এই জার্সি পরে মাঠ মাতিয়েছেন।
ক্লাব ফুটবলে সর্বশেষ এএস মোনাকোয় ১০ নম্বর জার্সি পরে খেলেছেন এমবাপ্পে। পিএসজিতে নিজের প্রথম মৌসুমে খেলেছেন ২৯ নম্বর জার্সি পরে। এরপর ১৭ ও ৭ নম্বর জার্সি পরে খেলেছেন। এমবাপ্পের আগে সর্বশেষ ফরাসি খেলোয়াড় হিসেবে রিয়ালের ১০ নম্বর জার্সি পরেছেন সাবেক ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার লাসানা দিয়ারা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন এমব প প এমব প প র মদর চ
এছাড়াও পড়ুন:
জট কমাতে জাহাজ কমানোর উদ্যোগ
কনটেইনারভর্তি পণ্য নিয়ে একের পর এক জাহাজ আসছে। খালাস শেষে রপ্তানি কনটেইনার নিয়ে বন্দর ছাড়ছে এসব জাহাজ। পণ্য পরিবহনের চাপ সামাল দিতে না পারায় বন্দরে কনটেইনার জাহাজের জট বাড়ছে। এই জট কমানোর জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের পথে চলাচলরত কনটেইনার জাহাজের সংখ্যা কমাতে চায় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
জাহাজ যাতে কম আসে সে জন্য বন্দরের নেওয়া পদক্ষেপ হতবাক করেছে শিপিং এজেন্টদের। শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, দুর্যোগের সময় ছাড়া কোনো বন্দরে চলাচলরত জাহাজের সংখ্যা কমানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার নজির বিশ্বে নেই। বরং বিশ্বের নানা বন্দর বা কনটেইনার টার্মিনালগুলোতে যাতে জাহাজ ভেড়ানো হয় সে জন্য শিপিং কোম্পানিগুলোকে উৎসাহ দেওয়া হয়। এ কাজের জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষ বা টার্মিনাল পরিচালনাকারী কোম্পানিগুলোর বিপণন বা বাণিজ্য দল রয়েছে। চট্টগ্রামে হচ্ছে উল্টোটা।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের পথে এখন ১১৮টি কনটেইনার জাহাজ নিয়মিত চলাচলের অনুমোদন রয়েছে। বন্দর থেকে সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া ও চীনের বিভিন্ন বন্দরে এসব জাহাজ চলাচল করে। ২০ জুলাই বন্দরের এক সভায় বন্দরের পথে চলাচলরত ১৫টি জাহাজ কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যে ১৫টি জাহাজ কমানো হবে তার তালিকা শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনকে নিজ উদ্যোগে বন্দরকে দেওয়ার জন্য বলা হয় ওই সভায়। যুক্তি হিসেবে বলা হয়, জাহাজজটের কারণে বহির্বিশ্বে চট্টগ্রাম বন্দরের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান।
এ বিষয়ে জানতে বন্দর চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি।
তবে শিপিং এজেন্টরা এখন পর্যন্ত কোনো জাহাজের নাম বন্দরকে দেয়নি, যেগুলো প্রত্যাহার করা হবে। তালিকা না দেওয়ায় গত মঙ্গলবার বন্দরের উপসংরক্ষক ক্যাপ্টেন মো. জহিরুল ইসলাম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে (বুধবারের মধ্যে) ১৫টি জাহাজের তথ্য দেওয়ার জন্য শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যানকে চিঠি দেন, যেগুলো এই পথ থেকে প্রত্যাহার করা হবে।
শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, বন্দরের এ উদ্যোগ মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার মতো। যেসব কারণে বন্দরে জাহাজজট হয়েছে, তা শনাক্ত করে জরুরি ভিত্তিতে সমাধান করা উচিত। জাহাজের সংখ্যা কমিয়ে জট কমবে না।
স্বাভাবিক সময় বন্দরের বহির্নোঙরে পাঁচ–ছয়টি জাহাজ অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু এখন জটের কারণে ক্রেনযুক্ত একেকটি জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর জন্য চার থেকে ১০ দিন পর্যন্ত সাগরে অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
শিপিং ও বন্দর কর্মকর্তারা জানান, ঈদুল আজহার একটানা ১০ দিনের ছুটি, দুই দফায় পরিবহন ধর্মঘট, কাস্টমসের শাটডাউন কর্মসূচি ও কাস্টমসের শুল্কায়নের সফটওয়্যারের ধীরগতির কারণে বন্দরের কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। এর জেরে কনটেইনার জাহাজের যে জট তৈরি হয়েছে, তা এখনো কমছে না। কারণ, কনটেইনারে পণ্য পরিবহন বাড়ছে।
এমন পরিস্থিতিতে বন্দরের নতুন উদ্যোগে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া ও শ্রীঙ্কার বন্দরগুলোতে বাংলাদেশমুখী কনটেইনারের জট তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন শিপিং এজেন্টরা। একইভাবে এসব বন্দর হয়ে ইউরোপ–আমেরিকামুখী রপ্তানি পণ্যের কনটেইনারের স্তূপ বাড়তে পারে ডিপোগুলোতে।
জানতে চাইলে কনটেইনার জাহাজ পরিচালনাকারী জিবিএক্স লজিস্টিকস লিমিটেডের অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব অপারেশন মুনতাসীর রুবাইয়াত প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরের পথে জাহাজের সংখ্যা কমানো হলে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, চাহিদা বাড়লে কনটেইনার পরিবহনের ভাড়া বেড়ে যেতে পারে। এতে ভুক্তভোগী হতে পারেন ভোক্তারা।