আলপাকা একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী। এটি সাধারণত ১৫ থেকে ২০ বছর বাঁচে। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের উত্তর উপকূলের একটি খামারে সম্প্রতি ২৭ বছরে পা রেখেছে ‘হাওথর্নডেন ওয়াইনুই’ নামের একটি আলপাকা। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক আলপাকা হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছে এই আলপাকা।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ার হাওথর্নডেন নামের একটি আলপাকা খামারে ১৯৯৮ সালের ২ জানুয়ারিতে হাওথর্নডেন ওয়াইনুইয়ের জন্ম। পরে ২০০২ সালে মাসহ তাকে নিউজিল্যান্ডের ওয়াইনুই বেতে নিয়ে আসা হয়। হাওথর্নডেন ও ওয়াইনুই মিলিয়ে তার নাম রাখা হয়েছে।
ওয়াইনুইয়ের মালিক ভিকি ও অ্যালেক্স কর্ডিয়ার দম্পতি বলেন, এই আলপাকা তাঁদের অত্যন্ত প্রিয়। এটি এত দিন বাঁচার অন্যতম কারণ, নিরুদ্বেগ ও আহ্লাদি জীবন।
এই দম্পতি জানান, ওয়াইনুই তার মতো করেই দিন কাটায়। সকালে পেট ভরে নাশতা করে, এরপর মাঠে একটু ঘোরাঘুরি করে। তারপর খামারে ফিরে দুপুরের খাবার খায়।
ভিকি বলেন, ‘রাতের খাবার দিতে দেরি হলে ওয়াইনুই ঠিক খাবারের সামনে এসে দাঁড়িয়ে থাকে। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সে কিছুটা খিটখিটে হয়ে উঠেছে। কিন্তু একসময় সে পুরো দলের পাহারাদার ছিল। তখন উঁচু জায়গায় বসে সবকিছু নজরে রাখত।’
বর্তমানে চোখে কম দেখে বলে শুধু পরিচিত পথে চলাফেরা করে ওয়াইনুই। এখন দিনের বেলায় সে ছোট একটি ঘেরা মাঠে থাকে। এই মাঠে তার সঙ্গে একটি ছাগল ও ভেড়া ঘাস খায়। ছাগলটির নাম বার্নি ও ভেড়ার নাম স্কুইক।
ওয়াইনুই শীতকালে নিজস্ব কোট পরে কেতাদুরস্তভাবে ঘুরে বেড়ায়। এমনকি তার নিজস্ব একটি ‘ফ্যান ক্লাব’ও আছে। একটু বৃষ্টি হলেই ওয়াইনুই আশ্রয়ে ঢুকে পড়ে। তখন আর বাইরে যায় না।
গত ৬ জুলাই ২৭ বছর ১৮৫ দিন পূর্ণ করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ‘বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক গৃহপালিত আলপাকা’ হিসেবে নাম লিখিয়েছে ওয়াইনুই।
আলপাকা দক্ষিণ আমেরিকান একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী, যা প্রধানত পেরু, বলিভিয়া ও চিলির পাহাড়ি অঞ্চলে দেখা যায়। এটি দেখতে উটের মতো, কিন্তু আকারে ছোট। গায়ে ঘন ও নরম পশম থাকে। এই পশম থেকে দামি ও উষ্ণ পোশাক তৈরি হয়। আলপাকা সাধারণত শান্ত স্বভাবের।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে গাছপালা নিধনের জন্য বন বিভাগ কম দায়ী নয়: উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা
পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে বনভূমি উজাড় ও গাছপালা কমে যাওয়ার জন্য বন বিভাগের দায় রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে রাঙামাটি শহরের জিমনেশিয়াম মাঠে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি।
সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে যে অবস্থা দাঁড়িয়েছে যদি বলা হয় যে আর কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই, তাহলে খুব বেশি ভুল হবে না। ৮০ সাল পর্যন্ত এখানে বন ছিল, গাছপালা ছিল, ঝোপঝাড় ছিল। এই অঞ্চলে বা দেশে গাছপালা নিধনের জন্য বন বিভাগ কোনো অংশ কম দায়ী নয়।
সুপ্রদীপ চাকমা আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের চেয়ে বড় আকারের বনভূমি এখন মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী কিংবা সিলেটে দেখা যায়। পার্বত্য অঞ্চলে এই অবস্থা কেন সৃষ্টি হলো সবার ভাবতে হবে।
পার্বত্য উপদেষ্টা আরও বলেন, পার্বত্য অঞ্চলে সাধারণত ভাদ্র মাসের প্রথম দিকে শীতের অনুভূতি পাওয়া যেত। এখন কার্তিক মাসেও শীতের অনুভূতি পাওয়া যায় না। যারা আদিকাল থেকে এই অঞ্চলে বসবাস করে আসছে, তারা প্রকৃতি সচেতন ছিল। তাই তাদের ওপর খুব বেশি ভূমি ধস হয়েছে শোনা যায় না। তাদের বাড়িঘরেও হয়নি। প্রকৃতিকে যারা চেনে না, তাদের ওপর ভূমিধস হয়।
বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ। এ ছাড়া বক্তব্য দেন পরিকল্পনা কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব এ কে এম আকমল হোসেন আজাদ, রাঙামাটি সার্কেলের বন সংরক্ষক মো. আবদুল আওয়াল সরকার, জেলা পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন, সিভিল সার্জন নূয়েন খীসা, দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এসম সাজ্জাদ হোসেন প্রমুখ। এর আগে ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করা হয়। ৮ আগস্ট পর্যন্ত এই মেলা চলবে। বৃক্ষমেলায় ২১টি স্টল অংশগ্রহণ করেছে।