ভৈরব নদের পানিতে ডুবল চুয়াডাঙ্গায় ফসলের মাঠ
Published: 2nd, August 2025 GMT
উজানের ঢল আর টানা বৃষ্টিতে ভৈরব নদের পানি বেড়ে ডুবে গেছে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠ। নির্মাণাধীন বাঁধ প্রকল্পের ধীরগতির কারণে নদীর পানি আটকে গিয়ে নিচু এলাকার ধান, পাটসহ নানা মৌসুমি ফসল তলিয়ে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন শত শত কৃষক।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাতিভাঙা, কয়মারি, চাঁদমারি, কাজলা ও ভেদাগাড়ি এলাকার বিস্তীর্ণ বিলাঞ্চলের ফসলি জমি পানিতে ডুবে আছে। কাঙলার বিল, কয়মারির বিল ও চাঁদমারির বিলের পুরো অংশজুড়েই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নিচু জমিতে ধান ও পাটসহ বিভিন্ন ফসল রোপণ করেছিলেন কৃষকেরা। তবে এসব জমি ডুবে যাওয়ায় চিন্তিত কৃষক।
হাতিভাঙা গ্রামের কৃষক জালাল ও মুক্তারপুর গ্রামের কৃষক ইলাহী জানান, হাজার হাজার বিঘা জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। এই ক্ষতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানো তাদের পক্ষে অসম্ভব।অনেকেই সরকারের কাছে জরুরি আর্থিক সহায়তা ও অনুদান চেয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক দেবাশীষ কুমার দাস বলেন, ভৈরব নদীর বাঁধ নির্মাণে দীর্ঘসূত্রতা এবং অতিবৃষ্টির কারণে দামুড়হুদা উপজেলার ভৈরবপাড় এলাকার প্রায় সাড়ে সাত হেক্টর জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। কৃষি বিভাগ ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত হিসাব নির্ধারণে মাঠপর্যায়ে কাজ করছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে অবশ্য দ্রুত নির্মাণ শেষ করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাজিম উদ্দিন জানান, সুভলপুরে ভৈরব নদীতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ ২০২২ সালের জুলাইয়ে শুরু হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগামী ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।
তিনি জানান, কৃষকের যেন আর ক্ষতি না হয়, সে বিষয়ে তারা সতর্ক আছেন।
তবে ভুক্তভোগী কৃষকরা বলেন, একবার এমন জলাবদ্ধতা হলে বছরের পুরো ফসল ঘরে তোলাই অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তাই যত দ্রুত সম্ভব ভৈরব বাঁধের কাজ শেষ করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যানসারে আক্রান্ত ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর শরীরে ত্বকের ক্যানসার শনাক্ত হয়েছে। বমি ও নিম্ন রক্তচাপের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার শরীরে ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
আরো পড়ুন:
৬ বছর পর ব্রাজিলকে হারিয়ে বিশ্বকাপ প্লে-অফে বলিভিয়া
মারাকানায় ব্রাজিলের বড় জয়
প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার একদিন পর তার ত্বকের ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে।
বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তার ত্বকের পরীক্ষা করে ‘স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা’ শনাক্ত হয়েছে।এটি ত্বকের মাঝারি মাত্রার ক্যানসার, যা সবচেয়ে হালকা ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ধাপের মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে।
চিকিৎসকরা বলেছেন যে, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। ৭০ বছর বয়সী বলসোনারো গত মঙ্গলবার বমি এবং নিম্ন রক্তচাপের কারণে ব্রাসিলিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে ক্যানসারের বিষয়টি গত রবিবারের পরীক্ষায় ধরা পড়ে, যখন তার বুক ও হাতে থাকা ক্ষতস্থানের টিস্যু অপসারণ করা হয়েছিল।
তার অনকোলজিস্ট ক্লাউদিও বিয়ারোলিনি জানিয়েছেন, বলসোনারোর ক্যানসার ‘ইন সিটু’ ধাপে রয়েছে, অর্থাৎ অস্বাভাবিক কোষগুলো এখনো ছড়িয়ে পড়েনি। অস্ত্রোপচারই এর চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট হবে। বর্তমানে বলসোনারোর শরীরে সেলাই ও ব্যান্ডেজ রয়েছে, যা দুই সপ্তাহের মধ্যে খোলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বুধবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন, যেখানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
বলসোনারো ২০২২ থেকে ২০২৩ সালে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই গৃহবন্দি ছিলেন। সম্প্রতি তাকে ২৭ বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরেসের নির্দেশ অনুযায়ী, গৃহবন্দিত্বে থাকলেও চিকিৎসা জরুরি হলে তিনি বাসার বাইরে যেতে পারেন। তবে প্রতিবারই তার আইনজীবীদের আদালতে চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হয়।
বলসোনারোর সমর্থকরা তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতিকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরছেন, যাতে তিনি কারাগারে না গিয়ে বাড়িতেই সাজা ভোগ করতে পারেন। তাদের দাবি, কারাগারে নিলে তার শারীরিক জটিলতা বা দুর্ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়বে।
তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “আমার বাবা আগেও কঠিন লড়াই লড়ে জয়ী হয়েছেন। এবারও ভিন্ন কিছু হবে না।”
ঢাকা/ফিরোজ