আগস্টের শেষ সপ্তাহে ঢাকায় আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
Published: 4th, August 2025 GMT
গত ২৭ এপ্রিল ঢাকা আসার কথা ছিল পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের। তবে ভারতের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে দেশটির সঙ্গে সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দিলে ইসলামাবাদ দারের ঢাকা সফর স্থগিত করে। তবে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে দ্বিপক্ষীয় সফরে ঢাকায় আসছেন তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরের বিষয়ে উভয়পক্ষের সম্মতি আছে। তার এ সফরে কয়েকটি চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ঢাকা সফরকালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মূল বৈঠক হবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.
জানা গেছে, ২২ অথবা ২৩ আগস্ট ইসহাক দারের ঢাকা সফরে আসার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। প্রায় দেড় যুগ পর স্থবির দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সামনে এগিয়ে নিতে বেশ আগ্রহী ইসলামাবাদ। তারই অংশ হিসেবে দীর্ঘ ১৫ বছর পর গত এপ্রিলে ঢাকায় পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক করে বাংলাদেশ-পাকিস্তান, বৈঠকে পাকিস্তানের নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ।
২৭-২৮ এপ্রিল দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে আলোচনা করতে ঢাকায় আসার কথা ছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারের। তবে ভারতের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে দেশটির সঙ্গে সীমান্তে উত্তেজনা দেখা দিলে দারের ঢাকা সফর স্থগিত করা হয়।
এদিকে, সম্প্রতি নিউইয়র্কে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ফাঁকে তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে ইসহাক দারের সাক্ষাৎ হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বছরের ব্যবধানে এটি ছিল তার চতুর্থ সাক্ষাৎ। ওই সাক্ষাতে দারের ঢাকা সফর নিয়ে আলোচনা হয় বলেও জানা গেছে।
ঢাকা/হাসান/ইভা
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পরর ষ ট রমন ত র ইসহ ক দ র র র পরর ষ ট র
এছাড়াও পড়ুন:
গুলিতে নিহত ছেলের জামা-জুতা আগলে দিন কাটে নাছিমার
ছেলে সাদ আল আফনানের কথা উঠলেই নাছিমা আক্তারের চোখ পানিতে টলমল হয়ে উঠে। একমাত্র ছেলেটি নেই, তা যেন ভাবতে পারেন না তিনি। ঘরে থাকা ছেলের বই-খাতা, জামাকাপড়, জুতা সবকিছুই যত্নে সাজিয়ে রেখেছেন। এসব নিয়েই দিন কাটে তাঁর।
গত বছরের ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান সাদ আল আফনান (১৯)। ওই দিন কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে পুরো লক্ষ্মীপুর শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এতে নিহত হন ৪ শিক্ষার্থীসহ ১২ জন, আহত হন শতাধিক ব্যক্তি। টানা ছয় ঘণ্টা ধরে ছাত্র-জনতার ওপর গুলিবর্ষণ করেন তৎকালীন সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সালাহ উদ্দিনসহ তাঁর বাহিনী।
নিহত আফনান লক্ষ্মীপুর ভিক্টোরি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। তাঁর বাড়ি লক্ষ্মীপুর শহরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে। আফনান নিহত হওয়ার মাত্র দুই মাস আগেই অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় নাছিমার স্বামী সালেহ আহমেদের। স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলেকে ঘিরেই ছিল নাছিমার জগৎ। তবে স্বামীর মৃত্যুশোক না কাটতেই হারাতে হয় ছেলেকেও।
ওর রুমটা আমি ঠিক আগের মতোই রাখি। ওর বইগুলো, ওর জামাটা, এমনকি ওর শেষ পরা স্যান্ডেলটাও। জানি, আমার ছেলেটা আর আসবে না, তবু মন মানে না, বুকের ভেতরটা কেমন ফাঁকা হয়ে গেছে।নাছিমা আক্তার, সাদ আল আফনানের মাসম্প্রতি বাড়িতে গিয়ে কথা হয় নাছিমা আক্তারের সঙ্গে। তিনি জানান, একাকী ঘরে ছেলের জামাকাপড়, বই খাতা নিয়ে বেশির ভাগ সময় কাটে তাঁর। ছেলের ব্যবহৃত জিনিসগুলো যত্নের সঙ্গে ঘরে সাজিয়ে রেখেছেন। ছেলে নেই, তা ভাবতে পারেন না তিনি। কাঁদতে কাঁদতে নাছিমা বলেন, ‘রাত হলে বুক ফেটে কান্না আসে। চোখে ঘুম আসে না। প্রতিদিন ঘুমের ওষুধ খেয়ে শুতে হয়। ছেলের ছবিটা বুকে নিয়ে রাত কাটে’।
নাছিমা আরও বলেন, ‘ওর রুমটা আমি ঠিক আগের মতোই রাখি। ওর বইগুলো, ওর জামাটা, এমনকি ওর শেষ পরা স্যান্ডেলটাও। জানি, আমার ছেলেটা আর আসবে না, তবু মন মানে না, বুকের ভেতরটা কেমন ফাঁকা হয়ে গেছে।’
গত বছরের ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুরে গুলিতে নিহত অন্য তিন শিক্ষার্থী হলেন মো. ওসমান পাটোয়ারী, কাইছার হোসেন ও সাব্বির হোসেন। হত্যাকারীদের বিচার হবে সেই আশায় রয়েছেন তাঁদের স্বজনেরা।
নিহত মো. ওসমান পাটোয়ারীর ভাই ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছোট ভাইকে হারিয়ে আম্মু এখনো ঠিকমতো কথা বলতে পারেন না। আমাদের প্রত্যাশা হত্যাকারীদের বিচার হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিচারের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি’।
নিহত সাব্বির হোসেনের বাবা আমির হোসেন বলেন, সন্তানকে এক মুহূর্তের জন্য তিনি ভুলতে পারেননি। সন্তানের হত্যাকারীরাই কেবল নয়, এর নির্দেশদাতাসহ জড়িত সবার বিচার দাবি করেন তিনি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গত বছরের ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুর শহর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। শহরের তেহমনী এলাকা থেকে তোলা