রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান রাজনৈতিক দলগুলোর
Published: 25th, August 2025 GMT
রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে কক্সবাজারে আয়োজিত অংশীজন সংলাপে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই সমাধানের জন্য জাতীয় ঐক্যের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সক্রিয় ভূমিকা অপরিহার্য। তারা একযোগে নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সোবমার (২৫ আগস্ট) কক্সবাজারে হোটেল বে ওয়াচে আয়োজিত সংলাপে অংশ নিয়ে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা এমন অভিমত তুলে ধরেন।
আরো পড়ুন:
সিরাজগঞ্জে এনআইডি করতে গিয়ে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ আটক
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ৭ দফা প্রস্তাব প্রধান উপদেষ্টার
সংলাপে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, “অতীতে বিএনপি সরকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সফল প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করেছিল।২০১৭ সালে শেখ হাসিনার সরকারের ব্যর্থতায় সংকট আরো জটিল আকার ধারণ করে।”
তিনি বলেন, “এক্ষেত্রে ‘মিয়ানমারের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া কোনো সমাধান সম্ভব নয়।বিএনপি ক্ষমতায় গেলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতায় রোহিঙ্গা ইস্যু সমাধানে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে।”
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার রোহিঙ্গাদের পাশে থাকা মানবিক ও ইসলামী দায়িত্ব হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, “নিপীড়িতদের পাশে দাঁড়ানো কোরআনের নির্দেশ।তাই রোহিঙ্গাদের জন্য ন্যায়বিচার ও পূর্ণ নাগরিকত্ব নিশ্চিত করতে হবে। মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও দায়ীদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “মানবিক সহায়তার পাশাপাশি রোহিঙ্গা তরুণদের শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়নের কর্মসূচি জরুরি।”
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “রোহিঙ্গারা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।আরাকানে গণহত্যার জন্য দায়ীদের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের আওতায় আনতে হবে। এর চূড়ান্ত সমাধান হলো রোহিঙ্গাদের মর্যাদা ও নিরাপত্তাসহ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো।”
এবি পাটির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, “রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি মানবিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করা জরুরি।”
এক্ষেত্রে সব দলের নেতারাই একমত হন যে রোহিঙ্গা সংকট শুধু বাংলাদেশের নয়, বরং এটি একটি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা। তাই বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমন্বিত পদক্ষেপ ছাড়া এই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের সমাধান সম্ভব নয়।
অধিবেশনে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকনসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।
সেশনটি পরিচালনা করেন পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম। এতে রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড.
ঢাকা/তারেকুর/সাইফ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার
ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।
আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।
বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।
অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।
আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।