পারলেন না মেসি-সুয়ারেজ, সিয়াটল সাউন্ডার্স চ্যাম্পিয়ন
Published: 1st, September 2025 GMT
লিওনেল মেসি ও তার তারকাখচিত ইন্টার মায়ামিকে হতবাক করে দিয়ে লিগস কাপের শিরোপা জিতেছে সিয়াটল সাউন্ডার্স। বাংলাদেশ সময় সোমবার সকালে লুমেন ফিল্ডে অনুষ্ঠিত ফাইনালে স্বাগতিকরা ৩-০ গোলের দুর্দান্ত জয়ে ট্রফি হাতে তোলে। তবে ম্যাচের আনন্দঘন মুহূর্তে ঘটে যায় কলঙ্কজনক ঘটনা। শেষ বাঁশির পর হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন খেলোয়াড়রা। যেখানে মায়ামির লুইস সুয়ারেজকে প্রতিপক্ষ কোচের দিকে থুতু ছুড়তে দেখা যায়।
ফাইনালে ম্যাচের ২৬ মিনিটে ওসাজে ডি রোসারিওর হেডে এগিয়ে যায় সাউন্ডার্স। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে পেনাল্টি থেকে গোল করেন অ্যালেক্স রোলদান। আর শেষ মুহূর্তে পল রথরকের শট পুরো স্টেডিয়াম কাঁপিয়ে তোলে, নিশ্চিত হয় ঐতিহাসিক জয়। শক্তিশালী রক্ষণভাগে দাঁতভাঙা জবাব দেয় সাউন্ডার্স। যেখানে মেসি নেতৃত্বাধীন মায়ামি আক্রমণভাগ বারবার ব্যর্থ হয়।
আরো পড়ুন:
মেসির জাদুতে আবারও ফাইনালে ইন্টার মায়ামি
জয় পেলো না মেসিহীন মায়ামি
মেসির ইন্টার মায়ামির জন্য ম্যাচটা হয়ে ওঠে হতাশার। প্রথমার্ধে সুযোগ পেলেও গোলের দেখা পাননি তারা। দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা ছন্দে ফিরলেও বারবার নষ্ট হয় সহজ সুযোগ। মেসি একবার ক্রসবারের ওপর দিয়ে মেরেছিলেন। আবার সুয়ারেজের পাস থেকে টাডেও আলেন্দে খালি জায়গা থেকেও ব্যর্থ হন।
শেষ বাঁশির পর উত্তেজনা চরমে ওঠে। সুয়ারেজ সরাসরি ঝাঁপিয়ে পড়েন সাউন্ডার্সের মিডফিল্ডার ওবেড ভার্গাসের দিকে। এরপর হাতাহাতি ছড়িয়ে পড়ে দুই দলেই। ক্যামেরায় ধরা পড়ে, এক পর্যায়ে সুয়ারেজ সাউন্ডার্সের এক সহকারী কোচের দিকে থুতু ছুড়ে দেন। ম্যাচ কর্মকর্তারা বেশ কষ্টে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
শুধু জয় নয়, এই সাফল্যের মধ্য দিয়ে সাউন্ডার্স ইতিহাস গড়ল। তাদের খেলোয়াড় বেতন কাঠামো (১৬.
সাউন্ডার্স কোচ ব্রায়ান শমেটজার ম্যাচ শেষে আবেগভরে বলেন, “এটা আমাদের জন্য অনেক বড় কিছু। লিগের সেরা দলগুলোর একটির বিপক্ষে, বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় মেসিকে হারিয়ে ট্রফি জেতা সত্যিই বিশেষ।”
গোলদাতা ডি রোসারিও বলেন, “এটা অবিশ্বাস্য! মনে হচ্ছে স্বপ্নের মতো। আমি মেসিকে ফাইনালে হারালাম, এর চেয়ে বড় প্রাপ্তি আর কী হতে পারে!”
এদিন ফাইনাল দেখতে মাঠে হাজির হয়েছিল ৬৯ হাজার ৩১৪ জন দর্শকের। এই উপস্থিতি ভেঙে দেয় লিগস কাপের আগের দর্শক রেকর্ড (৫০ হাজার ৬৭৫)। একই সঙ্গে এটি সাউন্ডার্সের লুমেন ফিল্ডে সর্বোচ্চ দর্শকসংখ্যার নতুন রেকর্ড।
এই জয় সাউন্ডার্সকে সরাসরি ২০২৬ কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপে শেষ ষোলোতে জায়গা করে দিয়েছে। যা ২০২৯ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের টিকিট নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অন্যদিকে, লস অ্যাঞ্জেলসে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে এলএ গ্যালাক্সি ২-১ গোলে হারিয়েছে অরল্যান্ডো সিটিকে। তারাও জায়গা করে নিয়েছে কনকাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপে।
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল স উন ড র স ফ ইন ল
এছাড়াও পড়ুন:
বোনকে খুন করে লাশ বস্তায় ভরেন, পুলিশ জিজ্ঞেস করলে জানান বস্তায় গম
ভারতের উত্তর প্রদেশের গোরখপুরে এক তরুণ তাঁর বোনকে খুন করে লাশ একটি বস্তায় ভরে রেখেছিলেন। ওই বস্তা নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তাঁকে ভেতরে কী আছে জানতে চাইলে তিনি বলেছিলেন, ‘এর মধ্যে গম আছে।’
উত্তর প্রদেশের ৩২ বছর বয়সী রাম আশিস নিষাদ তাঁর ১৯ বছর বয়সী বোন নীলমকে খুন করেন।
ওই এলাকায় একটি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়। আশিসের বাবা চিংকু নিষাদ সেখানে সরকারের জমি অধিগ্রহণ বাবদ ছয় লাখ রুপি ক্ষতিপূরণ পেয়েছিলেন।
পুলিশ জানায়, ওই ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া অর্থের ভাগাভাগি নিয়েই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঝগড়া হয়। ওই রুপি বোনের বিয়েতে খরচ করা হবে জেনে রাম আশিস ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
পুলিশ জানায়, গত সোমবার রাম আশিস একটি কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে বোন নীলমকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপর নীলমের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভেঙে ফেলে দেহটি একটি বস্তায় ভরেন। পরে বাইকের সঙ্গে বেঁধে তিনি গোরখপুর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে কুশীনগরের একটি আখখেতে বস্তাটি ফেলে আসেন।
সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে অভিযুক্ত
সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে রাম আশিসকে একটি বস্তা নিয়ে যেতে দেখা যায়। সন্দেহ করা হচ্ছে, ওই বস্তার মধ্যে ছিল তাঁর বোনের লাশ। কুশীনগর যাওয়ার পথে পুলিশ তাঁকে থামিয়ে বস্তায় কী আছে জানতে চেয়েছিল।
রাম আশিস পুলিশকে জানান, বস্তায় গম আছে। পরে আবার তিনি কুশীনগরের দিকে মোটরসাইকেল চালিয়ে যান। সেখানে তিনি আখখেতে নীলমের লাশ ফেলে দেন।
এরপর নীলমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁর বাবা প্রথমে ধরে নেন, মেয়ে ছটপূজার জন্য কোথাও গেছে। তবে প্রতিবেশীরা যখন জানান, সোমবার রাম আশিস একটি বস্তা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তখন পরিবারের সন্দেহ হয় এবং ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়।
পুলিশ প্রথমে নিখোঁজের ঘটনায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে ও তদন্ত শুরু করে। গত মঙ্গলবার নীলমের পরিবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায়, রাম আশিসই নীলমকে খুন করেছেন।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় রাম আশিস প্রথমে কিছু না জানার ভান করেন। তবে পুলিশের টানা জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পরে বোনকে খুনের কথা স্বীকার করেন। গত বুধবার রাতে আখখেত থেকে নীলমের গলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
আগামী জানুয়ারি মাসেই নীলমের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। বিয়ের সবকিছু ঠিকঠাকও হয়ে গিয়েছিল।
রাম আশিসের বাবা চিংকু অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া ওই ছয় লাখ রুপি মেয়ের বিয়েতে খরচ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। এ কারণে রাম ক্ষিপ্ত হয়েছিলেন। কারণ, তিনি জমির ক্ষতিপূরণ বাবদ পাওয়া ওই রুপির ভাগ চেয়েছিলেন।