সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ ৩৫ জনের বিরু‌দ্ধে সূচনা ফাউন্ডেশন নামে ৪৪৮ কোটি টাকা আত্মসাতের সত‌্যতা পে‌য়ে‌ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

প্রাথ‌মিক অনুসন্ধান শে‌ষে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় তা‌দের বিরু‌দ্ধে মামলার সুপা‌রিশ করা হ‌লে সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) অনু‌মোদন দেয় ক‌মিশন। যেকো‌নো সময় পুতুলসহ ৩৫ জনকে আসা‌মি ক‌রে মামলা‌টি করা হ‌বে। দুদকের মহাপরিচালক মো.

আক্তার হোসেন বিষয়টি জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

শেখ হাসিনার বক্তব্য প্রচার করলে ব্যবস্থা, সতর্ক করল সরকার

শেখ হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছি: সাইফুল

তি‌নি ব‌লেন, “মামলায় পুতুল ছাড়াও সূচনা ফাউন্ডেশনের দশ জন, ব্যবসায়ী ৮ জন ও এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যানসহ ১৬ জনকে আসা‌মি করা হ‌য়ে‌ছে।”

দুদক মহাপরিচালক বলেন, “ব্যবসায়ীরা ওই ফাউন্ডেশনে অনুদান দিয়ে অবৈধ সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করেছেন। আর এনবিআরের কর্মকর্তারা ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে সূচনা ফাউন্ডেশনকে কর ছাড় দিয়েছেন। ফলে শত কোটি টাকার কর ফাঁকি ও আত্মসাৎ হয়েছে।”

মামলার আসা‌মিরা হ‌লেন, সুচনা ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি সায়মা ওয়া‌জেদ, প্রফেসর ডা. মাজহারুল মান্নান, বিসিবির সাবেক সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন, সায়ফুল্লাহ আব্দুল্লা সোলেনখী ও জ্যান বারী রিজভী, ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান প্রাণ গোপাল দত্ত, এক্সিকিউটিভ কমিটির সদস্য এম এস মেহরাজ জাহান, প্রফেসর রুহুল হক, শিরিন জামান মুনির, এম এস মেহরাজ জাহান, ডা. হেলালউদ্দিন আহমেদ, হামিদ রিয়েল এস্টেটের চেয়ারম্যান ইন্তেকাবুল হামিদ, সাবেক মন্ত্রী ও ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বিএসসি, সাবেক এমপি ও বেক্সিমকোর ভাইস চেয়ারম্যান সালমান ফজলুর রহমান ওরফে সালমান এফ রহমান, সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. আজিজ খান, সাবেক এমপি ও ব্যবসায়ী এ কে এম রহমাতুল্লাহ, ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান মঈন উদ্দীন হাসান রশিদ, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, বিল ট্রেড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনায়েতুর রহমান, এন‌বিআ‌রের সাবেক চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান, সদস্য মীর মুস্তাক আলী, সাবেক সদস্য চৌধুরী আমির হোসেন, সদস্য পারভেজ ইকবাল, সদস্য মো. ফরিদ উদ্দিন, সদস্য মো. ফিরোজ শাহ আলম, সদস্য ব্যারিস্টার জাহাঙ্গীর হোসেন, ড. মাহবুবুর রহমান, সদস্য মো. লোকমান চৌধুরী, সাবেক সদস্য মো. রেজাউল হাসান, সাবেক সদস্য মো. জিয়া উদ্দিন মাহমুদ, সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, সদস্য এ এফ এম শাহরিয়ার মোল্লা ওরফে আবু ফয়সাল মো. শাহরিয়ার মোল্লা, সাবেক সদস্য সুলতান মো. ইকবাল, সদস্য তন্দ্রা সিকদার ও সাবেক সদস্য কালীপদ হালদার।

অভিযোগে বলা হয়, পুতুলসহ অন্য আসামিরা সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান গঠন করে এনজিও বিষয়ক ব্যুরো ও সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে রেজিস্ট্রেশন নেন। আসামিরা সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে নামসর্বস্ব কাগুজে প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে প্রদান করা টাকা এবং ওই প্রতিষ্ঠানের হিসেবে প্রাপ্ত টাকা আয়কর আইনের ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে আয়কর মওকুফ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেন। তারা অসৎ উদ্দেশ্যে অন্যায়ভাবে লাভবান হয়ে বা অপরকে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশ্যে পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক অসদাচরণ এবং অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৪৪৭ কোটি ৯৫ লাখ ৩০ হাজার ১৯৩ টাকা এবং সূচনা ফাউন্ডেশন ২০১৫-১৬ করবর্ষ থেকে ২০২৪-২৫ পর্যন্ত মোট ৯৯ লাখ ৪ হাজার ৫৩১ টাকা কর জমা প্রদান না করে প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ করেন।

আসামিরা সূচনা ফাউন্ডেশনের নামে ১৪টি ব্যাংক হিসাবে ৯৩০ কোটি ৯৭ লাখ ৭৩ হাজার ৯৫৯ টাকা সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন বলেও অভিযোগে বলা হয়।

গত বছরের ৫ আগস্টের পর সূচনা ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। গত বছরের ২৪ নভেম্বর সূচনা ফাউন্ডেশনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশনা দেয় আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ফাউন্ডেশনের আয়কর অব্যাহতি সুবিধা বাতিল করে এনবিআর। চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি সূচনা ফাউন্ডেশনে অভিযান চালায় দুদক। সে সময় প্রতিষ্ঠানটিকে অস্তিত্বহীন বলে জানায় দুদক।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ স ব ক সদস য সদস য ম ব যবস য় র রহম ন উদ দ ন বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যানসারে আক্রান্ত ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো

ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর শরীরে ত্বকের ক্যানসার শনাক্ত হয়েছে। বমি ও নিম্ন রক্তচাপের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার শরীরে ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।

আরো পড়ুন:

৬ বছর পর ব্রাজিলকে হারিয়ে বিশ্বকাপ প্লে-অফে বলিভিয়া

মারাকানায় ব্রাজিলের বড় জয়

প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার একদিন পর তার ত্বকের ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে।

বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তার ত্বকের পরীক্ষা করে ‘স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা’ শনাক্ত হয়েছে।এটি ত্বকের মাঝারি মাত্রার ক্যানসার, যা সবচেয়ে হালকা ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ধাপের মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে।

চিকিৎসকরা বলেছেন যে, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। ৭০ বছর বয়সী বলসোনারো গত মঙ্গলবার বমি এবং নিম্ন রক্তচাপের কারণে ব্রাসিলিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে ক্যানসারের বিষয়টি গত রবিবারের পরীক্ষায় ধরা পড়ে, যখন তার বুক ও হাতে থাকা ক্ষতস্থানের টিস্যু অপসারণ করা হয়েছিল।

তার অনকোলজিস্ট ক্লাউদিও বিয়ারোলিনি জানিয়েছেন, বলসোনারোর ক্যানসার ‘ইন সিটু’ ধাপে রয়েছে, অর্থাৎ অস্বাভাবিক কোষগুলো এখনো ছড়িয়ে পড়েনি। অস্ত্রোপচারই এর চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট হবে। বর্তমানে বলসোনারোর শরীরে সেলাই ও ব্যান্ডেজ রয়েছে, যা দুই সপ্তাহের মধ্যে খোলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বুধবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন, যেখানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

বলসোনারো ২০২২ থেকে ২০২৩ সালে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই গৃহবন্দি ছিলেন। সম্প্রতি তাকে ২৭ বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরেসের নির্দেশ অনুযায়ী, গৃহবন্দিত্বে থাকলেও চিকিৎসা জরুরি হলে তিনি বাসার বাইরে যেতে পারেন। তবে প্রতিবারই তার আইনজীবীদের আদালতে চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হয়।

বলসোনারোর সমর্থকরা তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতিকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরছেন, যাতে তিনি কারাগারে না গিয়ে বাড়িতেই সাজা ভোগ করতে পারেন। তাদের দাবি, কারাগারে নিলে তার শারীরিক জটিলতা বা দুর্ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়বে।

তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “আমার বাবা আগেও কঠিন লড়াই লড়ে জয়ী হয়েছেন। এবারও ভিন্ন কিছু হবে না।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ