ধর্ষণের হুমকি দেওয়া শিক্ষার্থীর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পায়নি তদন্ত কমিটি
Published: 3rd, September 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের নারী প্রার্থীকে গণধর্ষণের হুমকি দেওয়া শিক্ষার্থীকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। তবে তার ব্যাপারে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠলেও তদন্ত কমিটি এর কোনো প্রমাণ পায়নি।
অভিযুক্ত আলী হুসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২০২১ সেশনের শিক্ষার্থী।
আরো পড়ুন:
ঢাবি ছাত্রীকে ধর্ষণের হুমকি নারীর স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে: সাদা দল
চবিতে সংঘর্ষের ঘটনায় জরুরি সিন্ডিকেটের ১৩ সিদ্ধান্ত
ভুক্তভোগী বিএম ফাহমিদা আলম ডাকসুর অপরাজেয় ৭১-অদম্য ২৪ প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদপ্রার্থী।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের তথ্যটি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রীকে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় আক্রমণ ও হুমকি দেওয়ার ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আলী হুসেনকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বিষয়ে গঠিত প্রক্টরিয়াল সত্যানুসন্ধান কমিটির সুপারিশের আলোকে তাকে বহিষ্কারের এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলী হুসেনের পুরাতন কিছু ছবি এবং স্ট্যাটাস দিয়ে অনেকে তাকে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ও বাংলাদেশ জাতীয়বাদী ছাত্রদলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে অভিযোগ করেছিলেন। তবে তদন্ত কমিটি তার কোনো রাজনৈতিক দলের সংশ্লিষ্টতা পায়নি।
তার সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধমেই বেশি সময় কাটাতেন। গণমাধ্যমের নিউজ এডিট করে বিভিন্নজনকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক পোস্ট করতেন।
রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে জানতে চাইলে সত্যানুসন্ধান তদন্ত কমিটির সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মিসেস শেহরীন আমিন ভূঁইয়া বলেন, “আলী হোসেন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে আমরা প্রমাণ পায়নি। সে নিজেও স্বীকারোক্তিতে বলেছে, তার কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা নেই। এর বাইরে এমন কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি, যা দিয়ে তাকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে মনে হয়।”
তিনি আরো বলেন, “আলী হোসেনের দু-একটি ছবি, যেগুলো দিয়ে তাকে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট বলে অভিযোগ করা হয়। সেসব ছবি নিয়ে সে ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এছাড়া কুরুচিপূর্ণ স্টাটাসটি আকস্মিক ক্ষোভে দিয়ে ফেলেছেন বলে তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত ক স
এছাড়াও পড়ুন:
তিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৫ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ
সম্পূরক বৃত্তি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে অনশনে বসা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীর মধ্যে দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন তাঁরা।
এর আগে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়।
তিন দফা দাবির অন্যটি হলো ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি প্রদান ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা চালু।
আজ বুধবার দুপুরে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে অনশন চালিয়ে যেতে দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনশনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে তাঁদের খোঁজখবর নিতে দেখা যায়।
অনশনে বসা পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফয়সাল মুরাদ ও ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ফেরদৌস শেখ, ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শাহীন মিয়া এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের অপু মুন্সী।
অনশনকারীদের মধ্যে ফয়সাল মুরাদ ও এ কে এম রাকিব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁদের পেটে ব্যথা, রক্তচাপ কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিয়েছে।
অনশনকারী অপু মুন্সী বলেন, পারিবারিক কারণে তাঁকে গ্রামে চলে যেতে হয়েছে। তাই গতকাল রাতে তিনি অবস্থান করতে পারেননি।
আজ অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে অনশনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল করবেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কারণে শিক্ষার্থীদের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হতে আহ্বান জানানো হয়েছে।
অনশনে অংশ নেওয়া শাহীন মিয়া বলেন, প্রশাসন আগের মতোই বাহানা করে যাচ্ছে। হচ্ছে, হবে এ বক্তব্য থেকে বের হতে পারেনি প্রশাসন। আর কোনো টালবাহানা তাঁরা শুনবেন না। তাঁদের দাবি অবশ্যই মানতে হবে। তা না হলে প্রশাসনকে দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে।
আরেক অনশনকারী ফয়সাল মুরাদ বলেন, প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরে অনশন চলছে, কিন্তু প্রশাসন এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইতিমধ্যে তিনিসহ আরও একজন অনশনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
অনশনকারী এ কে এম রাকিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা অবস্থানসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু তাতে প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই অনশনে যেতে বাধ্য হয়েছি। এ ছাড়া আমাদের উপায় ছিল না। এই নখদন্তহীন প্রশাসন হয়তো আমাদের দাবি মেনে নেবে, নয়তো তাদের নিজেদের রাস্তা মাপতে হবে।’
আরও পড়ুনসম্পূরক বৃত্তি ও জকসু নির্বাচনের রূপরেখাসহ তিন দাবিতে অনশনে ৫ শিক্ষার্থী১৯ ঘণ্টা আগেযতক্ষণ তিন দফা দাবি আদায় না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত অনশন চলবে জানিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যতক্ষণ শরীরে শেষ রক্তবিন্দু আছে ততক্ষণ তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন। ক্লাস-পরীক্ষা শেষ করে অনেকেই এসে সংহতি প্রকাশ করছেন। সকাল থেকে এ সংখ্যা বাড়ছে।
এদিকে গতকাল রাতে অনশনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে উপস্থিত হন। এ সময় উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম ডিসেম্বরের মধ্যে জকসু নির্বাচন আয়োজনের এবং জানুয়ারি মাস থেকে সম্পূরক বৃত্তি দেওয়ার আশ্বাস দেন।
তবে সুস্পষ্ট রূপরেখা ছাড়া ও প্রশাসন থেকে লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন বলে উপাচার্যকে জানিয়েছেন অনশনকারী শিক্ষার্থীরা।