সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ১ হাজার দিরহামের লটারি কিনে ২০ মিলিয়ন দিরহাম জিতেছেন চাঁদপুরের সবুজ মিয়া আমির। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ প্রায় ৬৮ কোটি টাকা। দুবাইয়ে দর্জি হিসেবে কর্মরত সবুজের হাতে গত ২ সেপ্টেম্বর এ বিপুল পরিমাণ অর্থ তুলে দেন লটারির আয়োজকরা।

দুবাই প্রবাসী চাঁদপুরের আরেক বাসিন্দা জাকির হোসেন জানিয়েছেন, সবুজ গত ২৯ জুলাই আবুধাবির ড্রাগন মার্ট এলাকা থেকে বিগ টিকিট লটারির ২৭৭ সিরিজের একটি টিকিট ১ হাজার দিরহামে কেনেন। সে সময় তাকে আরো দুটি টিকিট ফ্রি দেওয়া হয়। গত ৩ আগস্ট আবুধাবিতে এই লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হয়। লটারির ‘১৯৪৫৬০’ নম্বর টিকিটটি এখন তার ভাগ্য বদলে দিয়েছে।

সবুজের বরাত দিয়ে তিনি জানান, লটারির টিকিট কেনার জন্য সবুজের কাছে ১ হাজার দিরহাম ছিল না। তিনি ড্রাগন মার্ট এলাকার একজনের কাজ থেকে কাজের বিনিময়ে ৫০০ দিরহাম নিয়েছিলেন। 

জাকির হোসেন আরো জানান, লটারি জেতার পর থেকেই অসংখ্য মানুষ সবুজকে ফোন দেওয়া শুরু করেন। তাই, তিনি এখন মোবাইল ফোন বন্ধ রেখেছেন। লটারিতে পাওয়া টাকা দিয়ে কী করবেন, তা এখনো প্রকাশ করেননি সবুজ।

সবুজের মামাতো ভাই সাদ্দাম হোসেন জানিয়েছেন, সবুজ চাঁদপুরের রাজরাজেশ্বর এলাকার জেলে আমির হোসেন দেওয়ানের ছেলে। পরিবারের হাল ধরতে ১০-১২ বছর আগে তিনি দুবাইয়ে যান। এরপর নদীভাঙনের কবলে পড়ে তার পরিবার গৃহহারা হয়। পরে দুবাইতে উপার্জিত অর্থ দিয়ে তিনি পরিবারের জন্য গাজীপুরের কাশিমপুরে একটি বাড়ি নির্মাণ করেন।

এ বিষয়ে চাঁদপুর সদরের রাজরাজেশ্বর ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সফিউল্লাহ সরকার বলেছেন, লটারি জেতার পর গত বুধবার সবুজের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। দুবাইয়ে সে অনেক কষ্ট করে অর্থ উপার্জন করছিল। এখন তার ভাগ্য বদলে যাবে।

এ বিষয়ে জানতে সবুজের মোবাইল ফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। হোয়াটসঅ্যাপে নক দিয়েও সাড়া মেলেনি।

ঢাকা/জয়/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সব জ র দ রহ ম

এছাড়াও পড়ুন:

‘মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির সাধক ছিলেন লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী’

লেখক, প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী সারা জীবন মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করে গেছেন। প্রকৃত মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন তিনি। এ কারণে তাঁর লেখা, সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তা এখনকার মানুষের জন্যও সমান প্রাসঙ্গিক।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। লেখকের নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে তাঁকে নিয়ে প্রথম স্মরণসভা ছিল এটি।

রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ। প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। বক্তব্য দেন প্রবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষক ড. কুদরত-ই-হুদা, যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক কবি জুননু রাইন, লেখকপুত্র ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গাজী গিয়াস উদ্দিন।

জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলার একজন উজ্জ্বল প্রাবন্ধিক, মুক্তচিন্তার আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখায় যেমন মানবতার বোধ রয়েছে, তেমনি যুক্তি ও প্রগতিশীল চিন্তার শক্ত ভিত্তি রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

বাবার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। অথচ দুঃখজনক হলো, এত দিন বাবাকে নিয়ে এ জেলায় আলোচনা বা স্মরণসভা হয়নি। তাঁর মতো মহান প্রাবন্ধিকের জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি।’

জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গবেষক ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন চিন্তার দিক থেকে ব্যতিক্রমধর্মী এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধির সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও সাহিত্যপ্রেমী। তাঁর প্রবন্ধ আজও পাঠককে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার প্রেরণা দেয়।

সাহিত্য, দর্শন ও সমাজচিন্তায় মোতাহের হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে জানান কবি জুননু রাইন। তিনি বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনী আজও প্রজন্মকে চিন্তার খোরাক জোগান।

মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদিরের সঙ্গে যৌথভাবে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। বের করেন ‘শিখা’ নামের পত্রিকা। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘সংস্কৃতি কথা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ