নবাগত অভিনেত্রীদের জোরপূর্বক দেহব্যবসা করানোর অভিযোগে বাঙালি অভিনেত্রী আনুশকা মনি মোহন দাসকে প্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মহারাষ্ট্রের থানে জেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ৪১ বছর বয়সি এই অভিনেত্রীকে। শুক্রবার (৫ সেপ্টেম্বর) পুলিশ এসব তথ্য জানায়। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআই এ খবর প্রকাশ করেছে।  

গোপন সূত্রে তথ্য পাওয়ার পর, পুলিশ দুইজন ছদ্মবেশী গ্রাহক পাঠায় অভিযুক্ত আনুশকা মনি মোহন দাসের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) এ অভিনেত্রী তাদের মুম্বাই-আহমেদাবাদ হাইওয়ের কাছিমীরা এলাকার একটি মলে দেখা করতে বলেন। 

আরো পড়ুন:

শিল্পা-রাজের বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

ভুল মানুষ বেছে নিলে জীবনে দুঃখ অনিবার্য: আমির খান

এ বিষয়ে মীরা-ভায়ান্দার, বাসাই-ভিরার পুলিশের সহকারী কমিশনার মদন বল্লাল বলেন, “আমাদের টিম ওই জায়গায় অভিযান চালায়। ছদ্মবেশী গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার সময়ে আনুশকা মনি মোহন দাসকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। আমরা আরো দুজন নারীকে উদ্ধার করেছি, যারা টিভি সিরিয়াল এবং বাংলা সিনেমায়ও অভিনয় করেছেন।” 

উদ্ধার হওয়া এই দুই অভিনেত্রীকে নিরাপদ একটি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে, যেখানে তারা শারীরিক ও মানসিক সহায়তা পাচ্ছেন। এই অপরাধ চক্রের সঙ্গে আরো কেউ জড়িত কি না, তা জানতে তদন্ত চলছে বলেও জানিয়েছেন বল্লাল।  

ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৩(৩) ধারা অনুযায়ী মানব পাচারের মামলা দায়ের হয়েছে। পাশাপাশি অনৈতিক দেহব্যবসা প্রতিরোধ আইনের ধারাও রয়েছে।  

গ্রেপ্তার আনুশকা মনি মোহন দাসের ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ঘুরে দেখা যায়, পরিচয় হিসেবে তিনি লিখেছেন—মডেল-অভিনেত্রী, বলিউড ড্যান্স পারফরমার, কনটেন্ট ক্রিয়েটর। এ অভিনেত্রী ‘মুন দাস’ নামেও পরিচিত।  

সানি সিং, মিকা সিং, উদিত নারায়ণের সঙ্গে মঞ্চে পারফর্ম করেছেন আনুশকা। ভারতীয় বাংলা সিনেমায়ও কাজ করেছেন। বাংলা ভাষার ‘লোফার’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। ভারতীয় বাংলা সিনেমার বরেণ্য অভিনেতা প্রসেনজিতের সঙ্গেও তার ছবি রয়েছে। 

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ম হন দ স কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

‘মুক্তবুদ্ধি ও যুক্তির সাধক ছিলেন লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরী’

লেখক, প্রাবন্ধিক ও চিন্তাবিদ মোতাহের হোসেন চৌধুরী সারা জীবন মুক্তবুদ্ধি ও মুক্তচিন্তার চর্চা করে গেছেন। প্রকৃত মানবতাবাদী দার্শনিক ছিলেন তিনি। এ কারণে তাঁর লেখা, সৃষ্টিকর্ম ও চিন্তা এখনকার মানুষের জন্যও সমান প্রাসঙ্গিক।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে লেখক মোতাহের হোসেন চৌধুরীর ৬৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তারা এ কথা বলেন। লেখকের নিজ জেলা লক্ষ্মীপুরে তাঁকে নিয়ে প্রথম স্মরণসভা ছিল এটি।

রামগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ। প্রধান অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার। বক্তব্য দেন প্রবন্ধিক, গবেষক ও শিক্ষক ড. কুদরত-ই-হুদা, যুগান্তরের সাহিত্য সম্পাদক কবি জুননু রাইন, লেখকপুত্র ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন, লক্ষ্মীপুর সাহিত্য সংসদের সাধারণ সম্পাদক গাজী গিয়াস উদ্দিন।

জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার তাঁর বক্তব্যে বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন বাংলার একজন উজ্জ্বল প্রাবন্ধিক, মুক্তচিন্তার আলোকবর্তিকা। তাঁর লেখায় যেমন মানবতার বোধ রয়েছে, তেমনি যুক্তি ও প্রগতিশীল চিন্তার শক্ত ভিত্তি রয়েছে। তরুণ প্রজন্মকে তাঁর জীবন ও কর্ম থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

বাবার স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ক্যাপ্টেন সৈয়দ জাহিদ হোসাইন বলেন, ‘আমরা লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। অথচ দুঃখজনক হলো, এত দিন বাবাকে নিয়ে এ জেলায় আলোচনা বা স্মরণসভা হয়নি। তাঁর মতো মহান প্রাবন্ধিকের জীবন ও দর্শন নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরা জরুরি।’

জাতীয় শিক্ষাক্রম পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের গবেষক ড. কুদরত-ই-হুদা বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরী ছিলেন চিন্তার দিক থেকে ব্যতিক্রমধর্মী এক ব্যক্তিত্ব। তিনি ছিলেন মুক্তবুদ্ধির সাধক, মানবতাবাদী দার্শনিক ও সাহিত্যপ্রেমী। তাঁর প্রবন্ধ আজও পাঠককে সত্য, সুন্দর ও ন্যায়ের পথে চলার প্রেরণা দেয়।

সাহিত্য, দর্শন ও সমাজচিন্তায় মোতাহের হোসেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন বলে জানান কবি জুননু রাইন। তিনি বলেন, মোতাহের হোসেন চৌধুরীর লেখনী আজও প্রজন্মকে চিন্তার খোরাক জোগান।

মোতাহের হোসেন চৌধুরী ১ এপ্রিল ১৯০৩ সালে তৎকালীন নোয়াখালী জেলা এবং বর্তমানে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ থানার কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাজী আবদুল ওদুদ, আবুল হুসেন, কাজী মোতাহার হোসেন, আবুল ফজল, আবদুল কাদিরের সঙ্গে যৌথভাবে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন গড়ে তোলেন তিনি। বের করেন ‘শিখা’ নামের পত্রিকা। তাঁর রচিত প্রবন্ধ সংকলন ‘সংস্কৃতি কথা’ পাঠকমহলে সমাদৃত হয়েছে। ১৯৫৬ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামে মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ