আসন্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে বামপন্থি তিনটি সংগঠন সমর্থিত ‘অপরাজেয় ৭১, অদম্য ২৪’ প্যানেলের বিরুদ্ধে। নির্বাচন কমিশনের অনুমতি না নিয়ে এবং আচরণবিধির তোয়াক্কা না করে মিছিল করেন তারা। 

রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্যানেলের প্রার্থীরা মিছিল দিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করেন। মিছিলে প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মো.

নাইম হাসান হৃদয়, জিএস এনামুল হাসান অনয়, এজিএস অদিতি ইসলামসহ প্যানেলের অন্যান্য প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। 

আরো পড়ুন:

অবৈধ বাসস্ট্যান্ড সরাতে জবি শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা

৩ দাবিতে জাস্টিস ফর জুলাইয়ের সংবাদ সম্মেলন

এ সময় তারা ‘তরুণ সমাজের প্রথম ভোট, ৭১/২৪ এর পক্ষে হোক’, ‘ডাকসু প্রথম ভোট, মুক্তিযুদ্ধ/অভ্যুত্থানের পক্ষে হোক’, ‘সবার সেরা পরিষদ, অপরাজেয় ৭১’ ইত্যাদি স্লোগান দেন। 

সরেজমিনে দেখা যায়, প্যানেলের প্রার্থীরা রঙিন ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে মিছিলে অংশ নিয়েছেন। তারা আচরণবিধি ভঙ্গ করে মাইকে স্লোগান দেন। এছাড়া নির্বাচন কমিশন ও প্রক্টর অফিস জানিয়েছে, এ বিষয়ে প্যানেলটির পক্ষ থেকে কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।

ডাকসু আচরণবিধি ধারা ৬ এর (ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ি, কোনো প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো সভা/সমাবেশ/শোভাযাত্রা করতে চাইলে দিন, সময় ও স্থান উল্লেখপূর্বক চিফ রিটার্নিং অফিসার/সংশ্লিষ্ট হলের অফিসারের কাছ থেকে লিখিত অনুমতি নিতে হবে। 

(খ) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী- সভা/সমাবেশ/শোভাযাত্রা করার অনুমতি অন্তত ২৪ ঘণ্টা পূর্বে গ্রহণ করতে হবে।

আচরণ বিধি অনুযায়ী, সভা সমাবেশে মাইক ব্যবহারের অনুমতি রয়েছে কিন্তু শোভাযাত্রা/মিছিলের অনুমতি নেই। আচরণবিধি ৬ ধারার (জ) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় সভা, সমাবেশে ও অডিটোরিয়ামে মাইক ব্যবহার করা যাবে। তবে কোনোক্রমেই রাত ১০টার পরে মাইক ব্যবহার করা যাবে না।

অভিযোগের বিষয়ে প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মো. নাইম হাসান হৃদয় বলেন, “এটা প্রজেকশন মিটিংয়ের অংশ হিসেবে মিছিল করা হয়েছে। আমরা মধুর ক্যান্টিন থেকে প্রজেকশন মিটিং শুরু করে এফবিএস, কলা ভবন ঘুরে কার্জনে শেষ করি। মাইক ব্যবহার এটা স্বাভাবিক বিষয়। এর আগে অন্যান্য প্যানেল এভাবে মাইক ব্যবহার করে মিছিল করেছে। আমরা মনে করি, এখানে কোনো আচরণবিধি লঙ্ঘন করা হয়নি।”

এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলাম বলেন, “তারা যা করেছে, সম্পূর্ণ আচরণবিধি লঙ্ঘন। তারা রঙিন ব্যানার ব্যবহার করেছে, মাইকে স্লোগান দিয়েছে। তারা মিছিল করার আগে আমাদের অনুমতিও নেয়নি।”

চিফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. মো. জসীম উদ্দিন বলেন, “এ বিষয়ে প্যানেল থেকে অনুমতি নেওয়া হয়নি। আমরা লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
 

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবহ র কর আচরণব ধ ম ছ ল কর

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুর তফসিল সোমবার 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রথম কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে।

রবিবার (২ নভেম্বর) চূড়ান্ত করা হবে নির্বাচনি আচরণবিধি এবং আগামীকাল সোমবার (৩ নভেম্বর) ঘোষণা করা হবে নির্বাচনের তফসিল।

জকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, “২৭ নভেম্বর নয়, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে জকসু নির্বাচন হবে। সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে ডিসেম্বরের ৮, ৯ বা ১০ তারিখ যাচাই করে দেখা হচ্ছে। যেহেতু ১৩ ডিসেম্বর ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে এবং ১১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ কর্মদিবস—সেক্ষেত্রে ১০ ডিসেম্বর বুধবার নির্বাচনের সম্ভাবনা বেশি।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এবারই প্রথম জকসু নির্বাচন। তাই প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগছে। অনেক ছাত্র সংগঠনও ডিসেম্বরেই নির্বাচন চায়, যাতে তারা প্রচারণা চালাতে পারে। তবে আমরা চাই, যত দ্রুত সম্ভব একটি উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজন করতে।”

অধ্যাপক মোস্তফা হাসান বলেন, “ভোটার তালিকা, প্রার্থী হওয়ার যোগ্যতা, ভোট দেওয়ার প্রক্রিয়া—এসব খসড়া তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি নির্বাচনি  আচরণবিধিও প্রস্তুত করা হয়েছে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল অনুসরণ করে।” 

আজ সব কার্যকর ছাত্র সংগঠন, সাংবাদিক প্রতিনিধি ও নির্বাচনের অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক করে আচরণবিধি চূড়ান্ত করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “কেউ যেন দ্বিমত না করে, সেটিই আমাদের লক্ষ্য। আচরণবিধি চূড়ান্ত হলেই সোমবার বা মঙ্গলবার তফসিল ঘোষণা করব।” 

ছাত্রদলের সম্পাদকীয় ও সদস্য পদ বৃদ্ধির দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, “জকসুর সংবিধি পাস হয়ে গেছে। এখন এটি সংশোধন করতে হলে একাডেমিক কাউন্সিল, সিন্ডিকেট, ইউজিসি, মন্ত্রণালয় এবং রাষ্ট্রপতির অনুমোদন লাগবে—এটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। তাই নতুন করে সংযোজনের সুযোগ নেই।”

তিনি আরো বলেন, “আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, সেটা স্বীকার করছি। তবে আমরা চাই, সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে। অন্যান্য ক্যাম্পাসের তুলনায় জবির ছাত্র সংগঠনগুলো অনেক ঐক্যবদ্ধ। তাদের সহযোগিতা পেলে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহেই হবে জকসু নির্বাচন।”

অধ্যাপক মোস্তফা হাসান আশা প্রকাশ করে বলেন,  “২০ বছর পর প্রথম জকসু নির্বাচন হতে যাচ্ছে। আমরা চাই, জবির এই নির্বাচন সারা দেশে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকুক।”

ঢাকা/লিমন ইসলাম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জকসুতে এআই ব্যবহারে থাকবে শিথিলতা, তবে অপব্যবহার করা যাবে না: নির্বাচন কমিশন
  • জকসুর তফসিল সোমবার