বর্তমান পরিস্থিতিতে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব কিনা প্রশ্ন আনিসের
Published: 11th, September 2025 GMT
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচন হলে দেশের সংকট আরো বাড়বে মন্তব্য করে এ অবস্থায় সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানে হাওলাদার টাওয়ারে জাতীয় পার্টির যৌথ সভায় সভাপতির বক্তব্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি এই প্রশ্ন রাখেন।
আরো পড়ুন:
সরকারপ্রধান পালানোর পথ পাবে না: কাজী মামুন
দেশকে অস্থিতিশীল করার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে: আনিসুল
আনিস বলেন, “দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, অর্থনৈতিক দুরাবস্থা, লোডশেডিং, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, মামলা বাণিজ্য, মব সন্ত্রাস চলছে। এর মধ্যে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব কি না। তা নিয়ে এখনই সরকারকে ভাবতে হবে, না হলে পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।”
তিনি বলেন, “সরকার বলছে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে। জাতীয় পার্টিও নির্বাচন চায়, কিন্তু তার আগে দেশে নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। বর্তমান দেশে যে পরিস্থিতি বিরাজমান তার মধ্যে জাতীয় নির্বাচন হলে দেশের সংকট আরো বাড়বে।”
দেশে এখনো মামলা বাণিজ্য চলছে অভিযোগ করে দলটির চেয়ারম্যান বলেন, “এখনো নতুন করে বাণিজ্যের জন্য মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। এই মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য সরকার নতুন আইন করেছে। সরকার বলেছে, দ্রুত তদন্ত করে অন্তর্বর্তী রিপোর্ট দিয়ে নিরাপরাধ ব্যক্তিদের মিথ্যা মামলা থেকে রেহায় দেওয়া হবে। কিন্তু এখনো সেই নতুন আইনের কার্যকারিতা দেখছি না।”
“যারা নির্বাচন করবে তাদের নামে যদি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়, তারা কিভাবে এলাকায় গিয়ে প্রচারণা চালাবে। সরকার এটা নিয়ে কথা বলছে না।”
জাতীয় পার্টির দলীয় প্রতীক লাঙ্গল নিজেদের পক্ষে থাকবে উল্লেখ করে ব্যারিস্টার আনিস বলেন, “যথাযথ নিয়ম ও আইনি প্রক্রিয়া মেনে আমরা কাউন্সিল সম্পন্ন করেছি। ফলে জাতীয় পার্টির দলীয় প্রতীক লাঙ্গল আমাদের কাছে থাকবে।”
‘ডাকসু থেকে শিক্ষা নিতে হবে’
ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের প্যানেলে বিজয় হওয়ায় জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানিয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, “এই নির্বাচন থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। বড় দলের অনেক কর্মী থাকতে পারে, কিন্তু জনসমর্থন না থাকলে নির্বাচনে কি ফল হয় সেটা ডাকসুতে আমরা প্রমাণ পেয়েছি।”
তিনি বলেন, “ডাকসুতে মানুষের ভালোবাসার বিজয় হয়েছে। সঠিক রণকৌশল, কঠোর পরিশ্রম, পরিবর্তন ও বিবর্তনের পক্ষে ছাত্ররা রায় দিয়েছে। আমরা এ রায়কে সম্মান করি। ডাকসু নির্বাচনের ফলাফল এবং গত বছর ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থান বা জুলাই বিপ্লব থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। সন্ত্রাস চাঁদাবাজি আর অহংকার দম্ভ করলে কিভাবে পতন হয়, তার ফলাফল ডাকসু নির্বাচন এবং জুলাই বিপ্লব আমাদেরকে শিখিয়ে গেছে। এ থেকে শিক্ষা নিতে হবে।”
৩৫ বছর জাপা রাষ্ট্রক্ষমতার বাইরে উল্লেখ করে হাওলাদার বলেন, “কেউ আমাদের বন্ধু ছিল না। জেল জুলুম অত্যাচার নির্যাতন আমরা সহ্য করেছি। হয়তো রাজনৈতিক কৌশলের কারণে বিভিন্ন সময় কোন না কোন দলের সাথে আমাদের থাকতে হয়েছে। আগামী দিনেও হতে পারে। কিন্তু তাই বলে আমরা আদর্শ বিলিন করিনি।”
হাওলাদার বলেন, “লাঙ্গল যেকোনো একজন ব্যক্তির কাছে নিরাপদ নয়। জি এম কাদের পল্লীবন্ধুর ভাই সূত্রে দলের চেয়ারম্যান ছিলেন। কিন্তু তিনি একদিনের জন্যও কারাগারে যাননি। একটা বড় মিছিল, সমাবেশ করতে পারেনি। আমরা সকল নিয়ম কানুন মেনে সম্মেলন করেছি এবং সার্বিক বিচার বিবেচনায় জাতীয় পার্টির প্রতীক লাঙ্গল আমাদের চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বে আমাদের পার্টির কাছে থাকবে।”
জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটি, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের এই যৌথ সভায় বক্তব্য রাখেন পার্টির নির্বাহী চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু, সিনিয়র কো—চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট কাজী ফিরোজ রশিদ, সাহিদুর রহমান টেপা, নাসরিন জাহান রতনা, লিয়াকত হোসেন খোকা, জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, নাজমা আকতার, জসিম উদ্দিন ভূইয়া, আরিফুর রহমান খান, মোবারক হোসেন আজাদ, ফখরুল আহসান শাহজাদা, বেলাল হোসেন, অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, অধ্যাপক নূরুল ইসলাম মিলন, সরদার শাহজাহান, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ইলিয়াস উদ্দিন, ইয়াহ ইয়া চৌধুরী, শরফুদ্দিন আহমেদ শিপু, জামাল রানা, সেরনিয়াবাত সেকান্দার আলী, আলমগীর হোসেন, আমান উল্লাহ আমান।
উপস্থিত ছিলেন থানা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের মধ্যে মাসুম, শরিফ, মো.
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর স থ ত ল ইসল ম র রহম ন আম দ র ল ঙ গল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
লাকসামে অস্ত্রের মুখে এতিমখানার ৫ গরু লুট, আহত ৮
কুমিল্লার লাকসামে একটি এতিমখানার খামার থেকে গত শুক্রবার পাঁচটি গরু লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাত দল। এ সময় তাদের হামলায় মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আটজন আহত হন। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ থানায় মামলা করেছে।
গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের বড়বাম আল-জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলুম মাদরাসা ও এর সংলগ্ন এতিমখানার খামারে ঘটনাটি ঘটে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু লুট করেছিল ডাকাতরা।
আরো পড়ুন:
খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা-গুলি, শিক্ষক নিহত
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের হামলা: গুলিবিদ্ধ যুবকের মৃত্যু
সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
এলাকাবাসী জানান, মাদরাসার আয় এই খামারের মাধ্যমে হয়। তিন মাসের ব্যবধানে দুই দফা ডাকাতি হওয়ায় শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। খামারের বড় গরুগুলো লুট হয়ে যাওয়ায় এক পাশ ফাঁকা পড়ে আছে। বর্তমানে খামারে ১১টি গরু অবশিষ্ট রয়েছে।
খামারের সামনে পড়ে আছে ডাকাত দলের ব্যবহৃত তুষের বস্তা, যা দিয়ে গরুগুলো পিকআপ ভ্যানে তোলে তারা। গরু উদ্ধার এবং ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
মামলার বাদী এবং মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন জানান, গত শুক্রবার ভোরে একদল ডাকাত দুটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে এসে অস্ত্রের মুখে মাদরাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে। শিক্ষকদের মারধর করে তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে যায় ডাকাতরা। তারা খামারে ঢুকে কেয়ারটেকার উৎসব হোসেনকে বেঁধে একে একে পাঁচটি গরু পিকআপ ভ্যানে তুলে নেয়। শিক্ষক ও ছাত্রদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসলে ডাকাতরা পালিয়ে যায়।
মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা শরীফুল আলম খন্দকার জানান, খামারের আয়ের ওপর ভিত্তি করে মাদরাসার কার্যক্রম চলে। তিন মাস আগেও এই খামারের সাতটি গরু নিয়ে যায় ডাকাতরা।
লাকসাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজনীন সুলতানা বলেন, “লুট হওয়া গরু উদ্ধার এবং ডাকাতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। মাদরাসার শিক্ষক ইমরান হোসাইন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন।”
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ