পার্বত্য জেলা বান্দরবানের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে। জেলার ৪৩৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৭৯টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। পাশাপাশি সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে ৪২টি। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে জেলায় প্রধান শিক্ষকের ১৭৯টি পদ শূন্য রয়েছে। সহকারী শিক্ষকের ২০৩৯টি পদের মধ্যে ৪২টি শূন্য। ১৯৮৬ সালে বান্দরবানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল ২১৯টি। সে সময়কার জনবল কাঠামো দিয়েই এখনো শিক্ষা ব্যবস্থা চলছে। অথচ গত ৪০ বছরে নতুন করে আরো ২১৬টি বিদ্যালয় জাতীয়করণ হলেও শিক্ষক ও কর্মচারীর সংখ্যা সেভাবে বাড়ানো হয়নি।

আরো পড়ুন:

আকস্মিক স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে ক্লাস নিলেন ইউএনও

ফেনীতে নদী ভাঙনের কবলে বিদ্যালয়ের ভবন

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানায়, প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে বিদ্যালয়গুলোতে দায়িত্ব পালন করছেন। একসঙ্গে প্রশাসনিক কাজ ও পাঠদান সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। ফলে শিক্ষার মান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে রুমা, রোয়াংছড়ি ও আলীকদম উপজেলায় শিক্ষক সংকট আরো প্রকট। 

অভিভাবক উক্যচিং মারমা ও সুমন ত্রিপুরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা শিশুর জীবনের প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এখানে শিক্ষক সংকট দেখা দিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ জন্য দ্রুত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি সম্পন্ন করার জন্য কার্যকর উদ্যোগ নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

রুমা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আশীষ চিরান জানান, তার উপজেলায় ৬৮টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪৪টির প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

আলীকদম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো.

কামাল হোসেন বলেন, “উপজেলায় ৫০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৯টিতে প্রধান শিক্ষক নেই। এসব স্কুলে সহকারী শিক্ষকরাই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।” 

বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোফাজ্জল হোসেন খান বলেন, “সহকারী শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে। প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ৬৫ শতাংশ পদোন্নতি ও ৩৫ শতাংশ সরাসরি নিয়োগ হওয়ার নিয়ম রয়েছে। জেলা পরিষদ সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দিলেও প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা নেই। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” 

তিনি জানান, শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধে দুর্গম এলাকায় আবাসিক পদ্ধতিতে আরো ৪৮টি নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষকদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থার কথাও ভাবা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ বান্দরবান জেলা পরিষদের ন্যস্ত বিভাগ। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে ৪২টি সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদে নিয়োগের ছাড়পত্র পেয়েছি। ৪২ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে প্রধান শিক্ষক যেহেতু দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে, তাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের মতোই পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ হবে। এজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।”

ঢাকা/চাইমং/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ন দরব ন পদ শ ন য অফ স র উপজ ল সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

বান্দরবানে ১৭৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে। জেলার ৪৩৫টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৭৯টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। পাশাপাশি সহকারী শিক্ষকের পদও শূন্য রয়েছে ৪২টি। 

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, দীর্ঘদিন ধরে জেলায় প্রধান শিক্ষকের ১৭৯টি পদ শূন্য রয়েছে। সহকারী শিক্ষকের ২০৩৯টি পদের মধ্যে ৪২টি শূন্য। ১৯৮৬ সালে বান্দরবানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল ২১৯টি। সে সময়কার জনবল কাঠামো দিয়েই এখনো শিক্ষা ব্যবস্থা চলছে। অথচ গত ৪০ বছরে নতুন করে আরো ২১৬টি বিদ্যালয় জাতীয়করণ হলেও শিক্ষক ও কর্মচারীর সংখ্যা সেভাবে বাড়ানো হয়নি।

আরো পড়ুন:

আকস্মিক স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে ক্লাস নিলেন ইউএনও

ফেনীতে নদী ভাঙনের কবলে বিদ্যালয়ের ভবন

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানায়, প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় সহকারী শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে বিদ্যালয়গুলোতে দায়িত্ব পালন করছেন। একসঙ্গে প্রশাসনিক কাজ ও পাঠদান সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। ফলে শিক্ষার মান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিশেষ করে রুমা, রোয়াংছড়ি ও আলীকদম উপজেলায় শিক্ষক সংকট আরো প্রকট। 

অভিভাবক উক্যচিং মারমা ও সুমন ত্রিপুরা জানান, প্রাথমিক শিক্ষা শিশুর জীবনের প্রথম ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এখানে শিক্ষক সংকট দেখা দিলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ জন্য দ্রুত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ ও পদোন্নতি সম্পন্ন করার জন্য কার্যকর উদ্যোগ নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

রুমা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আশীষ চিরান জানান, তার উপজেলায় ৬৮টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৪৪টির প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

আলীকদম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. কামাল হোসেন বলেন, “উপজেলায় ৫০টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৯টিতে প্রধান শিক্ষক নেই। এসব স্কুলে সহকারী শিক্ষকরাই প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন।” 

বান্দরবান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মোফাজ্জল হোসেন খান বলেন, “সহকারী শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে। প্রধান শিক্ষক নিয়োগে ৬৫ শতাংশ পদোন্নতি ও ৩৫ শতাংশ সরাসরি নিয়োগ হওয়ার নিয়ম রয়েছে। জেলা পরিষদ সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দিলেও প্রধান শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা নেই। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।” 

তিনি জানান, শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধে দুর্গম এলাকায় আবাসিক পদ্ধতিতে আরো ৪৮টি নতুন প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষকদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থার কথাও ভাবা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, “প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ বান্দরবান জেলা পরিষদের ন্যস্ত বিভাগ। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে ৪২টি সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদে নিয়োগের ছাড়পত্র পেয়েছি। ৪২ জন সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে প্রধান শিক্ষক যেহেতু দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে, তাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের মতোই পিএসসির মাধ্যমে নিয়োগ হবে। এজন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।”

ঢাকা/চাইমং/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ