সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তনের দাবিতে ৫টি পরিবেশবাদী সংগঠনের মানববন্ধন
Published: 16th, September 2025 GMT
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত স্থান পরিবর্তনের দাবিতে মঙ্গলবার পাঁচটি পরিবেশবাদী সংগঠনের উদ্যোগে মানববন্ধন হয়েছে। শহরের আলফাত স্কয়ারে আজ মঙ্গলবার দুপুরে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে অংশ নেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা); সুনামগঞ্জ পরিবেশ আন্দোলন, জীববৈচিত্র্য ও উন্নয়ন ফোরাম; হাওর, নদী ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন; আন্তঃ উপজেলা অধিকার পরিষদের সদস্যরা।
বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জ হাওর এলাকা। এখানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায় তা হাওর এলাকার উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। এতে জেলার মানুষ খুশি। কিন্তু হাওর, প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান বা কোনো অবকাঠামো নির্মাণ করা যাবে না। তাই শান্তিগঞ্জের দেখার হাওরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত স্থান পরিবর্তন করতে হবে। যেখানে হাওর, কৃষিজমি ও পরিবেশের ক্ষতি হবে না, এমন জায়গা নির্ধারণ করতে হবে।
আরও পড়ুনএবার হাওরে বিশ্ববিদ্যালয়০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫মানববন্ধনে সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি এ কে এম আবু নাছার বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হওয়ায় আমরা আনন্দিত। কিন্তু বিগত দিনে এক ব্যক্তির পছন্দে ও ক্ষমতায় শান্তিগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা নির্ধারণ করা হয়। স্থান নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক হচ্ছে। বিতর্কিত এই স্থান পরিবর্তন করতে হবে।’
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাপার সুনামগঞ্জ জেলার সভাপতি ও সুনামগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি তৈয়বুর রহমান, সুনামগঞ্জ আন্তজেলা উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি নুরুল হক আফিন্দী, সুনামগঞ্জ পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি এ কে এম আবু নাছার, উন্নয়নকর্মী সালেহীন চৌধুরী, কলেজশিক্ষক ফজলুল করিম, পরিবেশ আন্দোলনের কর্মী মিজানুর রহমান, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ উন্নয়ন ফোরাম সিলেটের সভাপতি আবুল হোসেন, হাওর-নদী ও পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সভাপতি মিজানুর রহমান প্রমুখ।
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর ১২৮ জন শিক্ষার্থী নিয়ে পাঠদান শুরু হয়। জেলা শহর সুনামগঞ্জ থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরে শান্তিগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ভাড়া করা ভবনে এটির প্রশাসনিক ও পাঠদান কার্যক্রম চলছে।
জাতীয় সংসদে ‘সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ আইন পাস হয় ২০২০ সালের ১৮ নভেম্বর। প্রথম দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান ‘শান্তিগঞ্জ’ উল্লেখ করায় বিষয়টি নিয়ে সব মহলে ক্ষোভ দেখা দেয়। জেলার সব সংসদ সদস্য সংসদে কথা বলেন এবং জেলা সদরে স্থাপনের দাবি জানান। পরবর্তী সময়ে সংসদে সুনামগঞ্জের ‘দেখার হাওরপাড়ে’ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান হিসেবে আইনে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এটির কার্যক্রম শুরু হয় শান্তিগঞ্জ উপজেলায়। এখন দাবি উঠেছে জেলা শহরের কাছাকাছি সুবিধাজনক স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপনের। ৮ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোয় ‘এবার হাওরে বিশ্ববিদ্যালয়’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ও পর ব শ র স ন মগঞ জ র হ ওর
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫