‘অনেকের আপত্তি’ ও ‘গন্ডগোলের আশঙ্কা’ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলায় সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর ‘শরৎ উৎসব’ আয়োজন স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। তবে বাতিল করা হয়নি। পরবর্তী সময়ে এই অনুষ্ঠান হতে পারে বলে আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন আজহারুল ইসলাম।

অন্যদিকে আয়োজকদের একজন সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী বলন, তাঁকে ফ্যাসিবাদের দোসর আখ্যা দিয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে অথচ আওয়ামী লীগের নাম–গন্ধে কোথাও কোনোদিন তিনি ছিলেন না।

১৯ বছর ধরে চারুকলায় এই ‘শরৎ উৎসব’ উদ্‌যাপিত হয়ে আসছে। প্রতিবছরের মতো এবারও সেখানে উৎসব আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছিল সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী। তাঁরা সব প্রস্তুতি শেষ করার পর হঠাৎ স্হগিত করা হয় বলে প্রথম আলোকে জানান মানজার চৌধুরী (সুইট)। এতে তিনি আতঙ্কিত হয়েছেন এবং এর মাধ্যমে সারা বিশ্বব্যাপী একটি ‘বাজে ইঙ্গিত’ গেল বলে মনে করেন তিনি। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা প্রকৃতির বন্দনা করি। এখানে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত—এগুলোর সঙ্গে তো কোনো সম্পর্ক নেই। এমনকি আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই অনুষ্ঠান করে আসছি। আর আমরা তো কোনো ভুঁইফোড় সংগঠনও না।’

তবে ছোট পরিসরে গেন্ডারিয়ার কচিকাঁচার মেলার মাঠে শরৎ উৎসব করা হচ্ছে বলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন। তিনি জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ তাদের সঙ্গে বসতে চেয়েছে আগামীকাল।

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন আজহারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনুষ্ঠানটি স্হগিত করা হয়েছে, বাতিল করা হয়নি। পরবর্তী সময়ে উদ্‌যাপন করা হবে। আগামীকাল একটি মিটিং করে আমরা পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’

আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের দোসর উল্লেখ করে অনেকের আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে এবং গন্ডগোলের ইঙ্গিত পেয়ে আমরা এটি সাময়িকভাবে স্থগিত করি। অনেক জায়গা থেকে ফোনে আপত্তি জানানো হয়েছে৷ অনেকে ফোনে বলেছেন, আমরা ফ্যাসিবাদের দোসরদের অনুষ্ঠান করার সুযোগ দিচ্ছি, আমরা যদি এমনটা করি, তাহলে গন্ডগোল হবে। সেই জায়গা থেকে আমরা এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলাম।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল ক অন ষ ঠ ন আপত ত

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় যুদ্ধবিরতিতে কে জিতল—ইসরায়েল নাকি হামাস?

মিসরের উপকূলীয় পর্যটন শহর শার্‌ম আল শেখ-এ টানা তিন দিন ধরে আলোচনার পর বৃহস্পতিবার হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে অস্ত্রবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের কথা ঘোষিত হয়েছে। সেখানে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিসর ও তুরস্ক।

আগের দিন থেকেই অবশ্যই যুদ্ধবিরতির রেশ ছড়িয়ে পড়েছে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডসহ আরব বিশ্বজুড়ে এবং সারা দুনিয়ায়। বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা করেন, ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তখন থেকে শুধু সময়ের অপেক্ষা ছিল কবে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন হচ্ছে। অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত ও প্রত্যাশিত যুদ্ধবিরতিটি সম্পন্ন হলো।

এখন আলোচনা হতে পারে, এই শান্তি চুক্তি বা অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে কে জিতল, কে হারল? আমরা অনেক লম্বা-চওড়া আলোচনায় না গিয়ে সহজ দুইটা মানদণ্ডে বিষয়টা বিশ্লেষণ করে দেখতে পারি।

আরও পড়ুনইসরায়েল এখন শেষ সময়ের সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো১২ এপ্রিল ২০২৫ কোন পক্ষে উৎসব হচ্ছে

যে পক্ষে উৎসব হচ্ছে, ধরে নেওয়া যায় তারা খুশি এবং নিজেদের বিজয়ী মনে করছে।

এই মানদণ্ডে দেখলে দেখব ফিলিস্তিনিরা উল্লাস করছে। গাজায় সাংবাদিকেরা হেঁটে হেঁটে অন্ধকার রাতে, মুঠোফোনের বাতি জ্বালিয়ে মানুষকে শান্তিচুক্তির সুসংবাদ দিচ্ছেন। যাদের কাছে ইন্টারনেট নেই, তাদের কাছে যুদ্ধবিরতির খবর পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা। আল আকসা হাসপাতালের সামনে, খান ইউনিসে ফিলিস্তিনিরা জড়ো হয়ে উৎসবে মেতেছেন।

অপরদিকে ইসরায়েলিদের ভেতর নেমে এসেছে কবরের নিস্তব্ধতা। হামাসের হাতে জিম্মিদের আত্মীয়-স্বজনেরা নিজ স্বজনদের মুক্তির আশায় খুশি। সেটি কি যুদ্ধজয়ের খুশি বলা যায়? নিশ্চয়ই না।

যুদ্ধজয়ের গল্প আওড়ে যাচ্ছেন একমাত্র বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। কিন্তু সেটা তার সেনাবাহিনী, তার মন্ত্রিসভার কেউই বিশ্বাস করছেন না। সাধারণ ইজরায়েলিদের কথা নাই বা বললাম। তেল আবিবের রাস্তায় স্কাই নিউজের সাংবাদিকের করা প্রশ্নে একজন সাধারণ ইজরায়েলি নাগরিক বলছেন, ‘এটা বন্দীদের জন্য, ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য, গোটা পশ্চিমের জন্যই একটা খারাপ সংবাদ।’

ফিলিস্তিনিরা তথা গাজাবাসী এ জন্যও খুশি যে তারা এখন খাবার পাবে, চিকিৎসা পাবে, ঘরে ফিরতে পারবে। তাদের এ খুশি যুদ্ধজয়ের জন্য না—এই তর্ক তোলা যেতেই পারে। সে ক্ষেত্রে আমরা দ্বিতীয় মানদণ্ডে যাই।

মিষ্টি বিতরণ করে ফিলিস্তিনিদের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা উদ্‌যাপন। মধ্য গাজার নুসেইরাত এলাকায়, ৯ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অ্যাপল থেকে টিম কুকের বিদায়ের গুঞ্জন, কে হবেন নতুন সিইও
  • বকুলতলা-গেন্ডারিয়ায় শরৎ উৎসবে বাধা
  • গেন্ডারিয়াতেও ‘শরৎ উৎসব’ করতে পারেনি সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী
  • গাজায় যুদ্ধবিরতিতে কে জিতল—ইসরায়েল নাকি হামাস?
  • রেখার সিঁদুর রহস্য
  • ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন
  • সংসদের প্রথম অধিবেশনের মধ্যে নয়, ‘যথাশিগগির সম্ভব’ উল্লেখ করার পরামর্শ বিএনপির
  • ২ লাখেরও বেশি শিশুকে টিকা দিবে নারায়ণগঞ্জে সিটি কর্পোরেশন
  • মৃত্যু ছাড়া কিছু উপদেষ্টার কোনো সেফ এক্সিট নেই: সারজিস আলম