গাজায় যুদ্ধবিরতিতে কে জিতল—ইসরায়েল নাকি হামাস?
Published: 10th, October 2025 GMT
মিসরের উপকূলীয় পর্যটন শহর শার্ম আল শেখ-এ টানা তিন দিন ধরে আলোচনার পর বৃহস্পতিবার হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে অস্ত্রবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের কথা ঘোষিত হয়েছে। সেখানে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, মিসর ও তুরস্ক।
আগের দিন থেকেই অবশ্যই যুদ্ধবিরতির রেশ ছড়িয়ে পড়েছে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডসহ আরব বিশ্বজুড়ে এবং সারা দুনিয়ায়। বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণা করেন, ইসরায়েল ও হামাস যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তখন থেকে শুধু সময়ের অপেক্ষা ছিল কবে আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন হচ্ছে। অবশেষে বহুল প্রতীক্ষিত ও প্রত্যাশিত যুদ্ধবিরতিটি সম্পন্ন হলো।
এখন আলোচনা হতে পারে, এই শান্তি চুক্তি বা অস্ত্রবিরতি চুক্তিতে কে জিতল, কে হারল? আমরা অনেক লম্বা-চওড়া আলোচনায় না গিয়ে সহজ দুইটা মানদণ্ডে বিষয়টা বিশ্লেষণ করে দেখতে পারি।
আরও পড়ুনইসরায়েল এখন শেষ সময়ের সোভিয়েত ইউনিয়নের মতো১২ এপ্রিল ২০২৫ কোন পক্ষে উৎসব হচ্ছেযে পক্ষে উৎসব হচ্ছে, ধরে নেওয়া যায় তারা খুশি এবং নিজেদের বিজয়ী মনে করছে।
এই মানদণ্ডে দেখলে দেখব ফিলিস্তিনিরা উল্লাস করছে। গাজায় সাংবাদিকেরা হেঁটে হেঁটে অন্ধকার রাতে, মুঠোফোনের বাতি জ্বালিয়ে মানুষকে শান্তিচুক্তির সুসংবাদ দিচ্ছেন। যাদের কাছে ইন্টারনেট নেই, তাদের কাছে যুদ্ধবিরতির খবর পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা। আল আকসা হাসপাতালের সামনে, খান ইউনিসে ফিলিস্তিনিরা জড়ো হয়ে উৎসবে মেতেছেন।
অপরদিকে ইসরায়েলিদের ভেতর নেমে এসেছে কবরের নিস্তব্ধতা। হামাসের হাতে জিম্মিদের আত্মীয়-স্বজনেরা নিজ স্বজনদের মুক্তির আশায় খুশি। সেটি কি যুদ্ধজয়ের খুশি বলা যায়? নিশ্চয়ই না।
যুদ্ধজয়ের গল্প আওড়ে যাচ্ছেন একমাত্র বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। কিন্তু সেটা তার সেনাবাহিনী, তার মন্ত্রিসভার কেউই বিশ্বাস করছেন না। সাধারণ ইজরায়েলিদের কথা নাই বা বললাম। তেল আবিবের রাস্তায় স্কাই নিউজের সাংবাদিকের করা প্রশ্নে একজন সাধারণ ইজরায়েলি নাগরিক বলছেন, ‘এটা বন্দীদের জন্য, ইসরায়েলের নিরাপত্তার জন্য, গোটা পশ্চিমের জন্যই একটা খারাপ সংবাদ।’
ফিলিস্তিনিরা তথা গাজাবাসী এ জন্যও খুশি যে তারা এখন খাবার পাবে, চিকিৎসা পাবে, ঘরে ফিরতে পারবে। তাদের এ খুশি যুদ্ধজয়ের জন্য না—এই তর্ক তোলা যেতেই পারে। সে ক্ষেত্রে আমরা দ্বিতীয় মানদণ্ডে যাই।
মিষ্টি বিতরণ করে ফিলিস্তিনিদের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা উদ্যাপন। মধ্য গাজার নুসেইরাত এলাকায়, ৯ অক্টোবর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ার শেরপুরে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন ৩ বন্ধু, দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল ২ জনের
বগুড়ার শেরপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়নের ফুলবাড়ী বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরও একজন আহত হয়েছেন।
নিহত দুজন হলেন গাড়িদহ ইউনিয়নের রামেশ্বরপুর গ্রামের মেহেদী হাসান (২০) এবং শেরপুর পৌর শহরের গোঁসাইপাড়া মহল্লার সাহাবুল হাসান (২০)। আহত হয়েছেন একই এলাকার উৎসব চক্রবর্তী (২০)।
প্রত্যক্ষদর্শী দুজন জানান, তিন বন্ধু একটি মোটরসাইকেলে করে রামেশ্বরপুর গ্রামের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে মোটরসাইকেলের চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে গাড়িটি রাস্তার পাশে একটি দোকানের শাটারের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে তিনজনই গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
শেরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনায় মেহেদী হাসান ও সাহাবুল হাসান গুরুতর জখম হন। তাঁদের হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আহত অপরজন উৎসব চক্রবর্তী স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তিনজনই বন্ধু ছিলেন। মোটরসাইকেলের চালক ছিলেন সাহাবুল হাসান।
আহত উৎসব চক্রবর্তী বলেন, গতকাল রাতে মেহেদী হাসানকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে যাওয়ার সময় দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনজনই এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
বগুড়া সদর থানার ছিলিমপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (তদন্ত) লাল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত ১০টা থেকে সোয়া ১০টার মধ্যে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাহাবুল হাসান ও মেহেদী হাসান মারা যান।
শেরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নুল আবেদীন বলেন, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে দুজনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।