সিএমএসএমই ঋণ সহজ করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা
Published: 14th, October 2025 GMT
কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদোক্তাদের (সিএমএসএমই) স্বল্পমেয়াদি ঋণ পেতে প্রভিশন কমিয়ে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে সিএমএসএমই খাতের উদ্যোক্তাদের ঋণ পেতে সহজ হবে। নতুন সুবিধা ২০২৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ সোমবার এ সংক্রান্ত্র এক নির্দেশনা দিয়েছে।
আরো পড়ুন:
ব্যাংকের কার্ড থেকে নগদ, বিকাশে টাকা পাঠানোর নতুন সুবিধা
১০ কোটি ৭০ লাখ ডলার কিনল বাংলাদেশ ব্যাংক
নির্দেশনা অনুযায়ী, কুটির, অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (সিএমএসএমই) স্বল্পমেয়াদি দেওয়া অনশ্রেণিভুক্ত (স্ট্যান্ডার্ড ও এসএমএ) ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে মাত্র ১ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে হবে। এছাড়া আগে জারি করা নির্দেশনার অন্য সব প্রযোজ্য নিয়ম আগের মতোই বহাল থাকবে। এতোদিন এসব ঋণের বিপরীতে ৫ শতাংশ প্রভিশন রাখতে হতো।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবসায়ীরা ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদোক্তাদের ঋণ পাওয়ার বিষয়টি সহজ করার দাবি জানিয়ে আসছে। এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য হলো কৃষি ও ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা খাতে ব্যাংকের ঋণ প্রবাহ বাড়ানো এবং তারল্য নিশ্চিত করা। বিশেষ করে করোনার পর ও অর্থনীতিতে স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরে আনার প্রেক্ষাপটে সিএমএসএমই খাতের ঋণ সহজলভ্য করা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
ঢাকা/নাজমুল/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স এমএসএমই
এছাড়াও পড়ুন:
খলাপাড়ার গণহত্যা দিবস: স্বাধীনতার প্রান্তে শহীদ হন ১০৬ জন
১৯৭১ সালের ১ ডিসেম্বর স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা বাঙালি জাতির ইতিহাসে বেদনাবিধুর একটি দিন। এদিন, গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়নের খলাপাড়া গ্রামের ন্যাশনাল জুট মিলস রক্তাক্ত হয়। মিলের ভেতর কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগী সন্দেহে আটক ১০৬ জন নিরীহ বাঙালিকে লাইনে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ারে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।
সেই থেকে প্রতিবছর ১ ডিসেম্বর শহীদদের স্মরণে কালীগঞ্জ গণহত্যা দিবস পালিত হয়ে আসছে। উপজেলা প্রশাসন, বীর মুক্তিযোদ্ধারা, রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনসমূহ শহীদদের গণকবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তারা দোয়া ও মোনাজাত করেন শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনায়।
আরো পড়ুন:
‘১৭ বছরে ৯৪ হাজার থেকে মুক্তিযোদ্ধা আড়াই লাখ করা হয়েছে’
১২৮ জুলাই যোদ্ধার গেজেট বাতিল
কালীগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম হুমায়ুন মাস্টার সেই দিনের স্মৃতিচারণ করেন। তিনি জানান, ১৯৭১ সালের সেই সকালে মিলের শ্রমিক-কর্মচারীরা নাস্তার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তখনই পাশের ঘোড়াশাল ক্যাম্প থেকে নদী পার হয়ে হানাদার বাহিনী মিল চত্বরে প্রবেশ করে। তারা মুক্তিযোদ্ধাদের সন্ধানে অভিযান চালানোর নামে সেখানে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী নিরস্ত্র বাঙালিদের ধরে ধরে জড়ো করে।
সকাল থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লাইনে দাঁড় করিয়ে চলে ব্রাশফায়ার। প্রাণহীন হয়ে পড়ে একের পর এক শরীর। ন্যাশনাল জুট মিলে নেমে আসে নীরবতা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গণহত্যা শেষে পাকবাহিনী মিলের দক্ষিণ পাশের দেয়াল ভেঙে পালিয়ে যায়। শহীদদের মরদেহ পড়ে ছিল মিলের সুপারি বাগানে। ভয় ও আতঙ্কে কেউ কাছে যাওয়ার সাহস পাননি। মরদেহগুলো শেয়াল-শকুনের খাদ্যে পরিণত হয়। স্বাধীনতার পর এলাকাবাসী মিল চত্বরে প্রবেশ করে বিকৃত অবস্থায় ১০৬ জন শহীদের মরদেহ উদ্ধার করেন। তারপর মিলের দক্ষিণ পাশে কবর খুঁড়ে একসঙ্গে শহীদদের সমাহিত করেন তারা।
শহীদদের স্মরণে মিল কর্তৃপক্ষ নির্মাণ করেন একটি স্মৃতিস্তম্ভ ‘শহীদের স্মরণে ১৯৭১’। গণকবরের পাশেই পরবর্তীতে গড়ে ওঠে একটি পাকা মসজিদ-যেখানে প্রতিনিয়ত দেশের জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া হয়।
কালীগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এটিএম কামরুল ইসলাম বলেন, “খলাপাড়ার সেই ১০৬ শহীদের রক্তগাথা কেবল অতীত নয়-এটি জাতির কাছে এক চিরন্তন দায়বদ্ধতার স্মারক। নতুন প্রজন্মের কাছে এই ইতিহাস পৌঁছে দেওয়া আর শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি ন্যায্য সম্মান জানানোই হোক আমাদের প্রতিদিনের অঙ্গীকার।”
ঢাকা/মাসুদ