ধর্ষণের অভিযোগে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ছাত্রীর করা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলের সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির কিছু শিক্ষার্থীর হাতে থাকা প্ল্যাকার্ড নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।

বিইউপির অন্তত তিন শিক্ষার্থী বলেছেন, মিছিলের সময় এসব প্ল্যাকার্ড তাঁদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্ল্যাকার্ডে কী লেখা ছিল, তা তাঁরা তৎক্ষণাৎ যাচাই করেননি। তবে বিতর্কিত বক্তব্য লেখা প্ল্যাকার্ডসহ তাঁদের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় তাঁরা বিব্রত।

আরও পড়ুনসাভারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে একজন গ্রেপ্তার১৯ অক্টোবর ২০২৫

বিইউপির এক নারী শিক্ষার্থীর হাতে এমন একটি প্ল্যাকার্ড ছিল। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যখন মিরপুর সাড়ে ১১ নম্বরের কাছাকাছি পৌঁছাই, তখন আমাদের পেছন থেকে বলা হয়, এগুলো ধরে রাখো। সামনে যেহেতু বিভিন্ন গণমাধ্যমের ক্যামেরা ছিল, এ কারণে আমরা প্ল্যাকার্ডগুলো ধরে আর চেক (কী লেখা যাচাই) করিনি।’

প্ল্যাকার্ডের লেখাগুলোকে সমর্থন করেন না বলে জানান এই শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছি।’

বিইউপির এক ছাত্রী ১৪ অক্টোবর ঢাকার অদূরে সাভারে ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী ১৬ অক্টোবর তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে সাভার থানায় মামলা করেন। মামলার তিন আসামিকে ১৯ ও ২০ অক্টোবর গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন সোহেল রোজারিও (৩৭), বিপ্লব রোজারিও ও মিঠু বিশ্বাস। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো.

আবদুল ওয়াহাব প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আরও পড়ুনআসামিদের গ্রেপ্তারসহ তিন দফা দাবিতে এনসিপির মানববন্ধন১৯ অক্টোবর ২০২৫

ধর্ষণ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে বিইউপির শিক্ষার্থীরা ১৮ ও ১৯ অক্টোবর বিক্ষোভ-মিছিল করেছিলেন। মিরপুর ১২ নম্বর থেকে ১০ নম্বর সেকশনের গোলচত্বর পর্যন্ত এই প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করা হয়েছিল।

বিউপির শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিলের সময় তাঁদের হাতে ধর্ষণের বিচার দাবিসহ নানা বক্তব্য লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল। এর মধ্যে ১৯ অক্টোবরের বিক্ষোভ মিছিলের কিছু প্ল্যাকার্ড নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। প্ল্যাকার্ডগুলোতে খিলাফত নিয়ে বক্তব্য ছিল। ছিল ধর্মনিরপেক্ষতার সমালোচনা।

বিষয়টি নিয়ে বিউপির আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থী ১৯ অক্টোবর ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। তিনি লেখেন, প্ল্যাকার্ডগুলো একটি নিষিদ্ধ সংগঠনের, তা পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে। তাঁরা যখনই সেটি বুঝতে পারেন, প্ল্যাকার্ডগুলো সরিয়ে ফেলেন।

ধর্ষণ মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবিতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে। ১৮ অক্টোবর ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আস ম দ র গ র প ত র ব ইউপ র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকার ‘কয়েকটি জায়গায়’ কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের মিছিল, গ্রেপ্তার ৬

ঢাকায় কয়েকটি জায়গায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগ ঝটিকা মিছিল করেছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভিডিও ছড়িয়েছে। আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেজেও বিভিন্ন জায়গায় মিছিলের দাবি করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়েছে, মিছিলের খবর তারা পেয়েছে। ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আরও ছয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভায় গত ১০ মে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়। এর আগে গত বছরের অক্টোবরে নিষিদ্ধ করা হয় আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগকে।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ হলেও বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীরা রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করেছে। কোনো জায়গায় তারা প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। কোথাও কোথাও প্রতিরোধ করতে গেলে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা হামলা করেছে।

পুলিশও ঝটিকা মিছিল ঠেকানো ও মিছিলকারীদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা দেখিয়েছে। গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে ‘মিছিলের চেষ্টাকালে’ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের ২৪৪ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছিল ডিএমপি।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার এস এন নজরুল ইসলাম তখন বলেন, উত্তরা, ফার্মগেট, তেজগাঁও থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, গাজীপুর, গোপালগঞ্জ থেকে এসেছেন। টাকার বিনিময়ে তাঁদের দিয়ে মিছিল করানো হয়েছে।

বিভিন্ন সময় ডিএমপির জানানো তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে আজ মঙ্গলবার ৬ জনসহ ঢাকায় মোট ৮১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার  তালেবুর রহমান আজ বেলা সোয়া দুইটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকায় কিছু জায়গায় মিছিলের কথা তাঁরা শুনেছেন। এ ধরনের তৎপরতা বন্ধে পুলিশ সক্রিয় রয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা এবং মিছিলকারীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে বলা আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ