পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন রাঙামাটি এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী
Published: 1st, December 2025 GMT
‘মানসিক চাপ’ ও ‘পারিবারিক’ কারণ দেখিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাঙামাটি জেলার প্রধান সমন্বয়কারী বিপিন জ্যোতি চাকমা দল থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। শিগগিরি তিনি পদত্যাগপত্র ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পাঠানোর কথা জানিয়েছেন।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে মোবাইলে তিনি এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে, রবিবার (৩০ নভেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন।
আরো পড়ুন:
রাঙামাটিতে এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারীর পদত্যাগ
নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেখতে পাচ্ছি না: নাহিদ
ফেসবুক পোস্টে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে বিপিন জ্যোতি চাকমা লেখেন, “আমি, বিপিন জোতি চাকমা, প্রধান সমন্বয়কারী, জাতীয় নাগরিক পাটি-এনসিপি, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা। ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও দীর্ঘদিনের মানসিক চাপের কারণে, আজ ৩০/১১/২০২৫ ইং তারিখ হতে দলীয় সব কার্যক্রম থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি শীঘ্রই আমার স্বাক্ষরিত অব্যাহতিপত্র কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নিকট প্রেরণ করব।”
ফেসবুকে এই পোস্ট নজরে আসার পর রাতে বিপিন জ্যোতি চাকমার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়। একাধিকবার মোবাইলে কল দেওয়া হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। আজ সোমবার সকালে তিনি পদত্যাগ করার সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনসিপির স্থানীয় নেতারা জানান, দলের কিছু কর্মকাণ্ডে বিরক্ত ছিলেন বিপিন জ্যোতি চাকমা। এ কারণে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমনটি ধারণা করা হচ্ছে।
এনসিপির জেলা কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী জাহিদুল ইসলাম বলেন, “কিছুটা মান-অভিমান আছে। আশা করছি, বসে সমাধান করে আমরা দলকে ঐক্যবদ্ধ রেখে এগিয়ে নিয়ে যাব।”
গত ৫ জুন জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির রাঙামাটি জেলার ২৪ সদস্য বিশিষ্ট সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়।
ঢাকা/শংকর/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প সমন বয়ক র পদত য গ র এনস প র
এছাড়াও পড়ুন:
সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চলাচল শুরু, প্রথম দিনে গেলেন ১২০০ পর্যটক
কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া থেকে ১ হাজার ২০০ পর্যটক নিয়ে জেলার প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে তিনটি পর্যটকবাহী জাহাজ। আজ সোমবার সকাল সাতটার দিকে নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট থেকে জাহাজ তিনটি রওনা দেয়।
সেন্ট মার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া জাহাজ তিনটি হলো এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমভি বারআউলিয়া ও কেয়ারি সিন্দাবাদ। আজ বেলা দুইটা নাগাদ জাহাজ তিনটি সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এরপর বেলা সাড়ে তিনটার দিকে জাহাজগুলো আবার কক্সবাজারের উদ্দেশে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ছেড়ে আসবে।
আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত টানা দুই মাস প্রতিদিন দুই হাজার করে পর্যটক সেন্টমার্টিন দ্বীপ ভ্রমণ এবং রাত্রিযাপনের সুযোগ পাবেন। পর্যটকদের জন্য সাতটি জাহাজ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
সকাল সাতটার দিকে বিআইডব্লিউটি জেটিঘাটে উপস্থিত হয়ে পর্যটকদের সরকারনির্ধারিত ১২টি বিধিনিষেধের কথা তুলে ধরেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান। তিনি বলেন, সরকারি বিধিনিষেধ কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। কোনোভাবেই পলিথিন ও প্লাস্টিক পণ্য ব্যবহার করা যাবে না। সেন্ট মার্টিন দ্বীপে পর্যটকেরা বিধিনিষেধ মানছেন কি না, তা তদারক করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে পৃথক দুটি দল কাজ করবে।
জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ঘাটে উপস্থিত ছিলেন টুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান আপেল মাহমুদ, কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নীলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন, কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা প্রমুখ।
খন্দকার মাহবুব পাশা বলেন, পর্যটকেরা জাহাজে ওঠার আগে তাঁদের টিকিটটিতে নির্ধারিত কিউআর কোড রয়েছে কি না, তা যাচাই করা হয়েছে। কোনো পর্যটককেই প্লাস্টিক ও পলিথিন নিতে দেওয়া হয়নি। প্লাস্টিক বোতলের বিপরীতে পর্যটকদের প্রথম দিন পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিনা মূল্যে খাবার পানি রাখার অ্যালুমিনিয়াম বোতল বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, দৈনিক দুই হাজারের বেশি পর্যটককে জাহাজে তুলতে দেওয়া হবে না। এ জন্য নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাট ও সেন্ট মার্টিনের জেটিঘাটে পৃথক তল্লাশির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
সকালে একটি জাহাজে নুনিয়ারছড়া থেকে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের উদ্দেশে রওনা দেন ঢাকার রাজারবাগ এলাকার ব্যবসায়ী আজমল হুদা (৩৬)। স্ত্রী ও এক মেয়েকে নিয়ে দ্বীপটি ভ্রমণে গেছেন তিনি। জাহাজে ওঠার আগে তিনি বলেন, ‘এক রাত থেকে পরের দিন একই টিকিটে কক্সবাজারে ফিরে আসব। এর আগে কখনো সেন্ট মার্টিন যাইনি, কেবল মানুষের মুখে শুনেছি। আজ গিয়ে সত্যিকার অর্থেই দ্বীপটি দেখার সুযোগ হবে।’
রোকসানা ইসলাম (২৩) নামের এক তরুণী বলেন, জাহাজে চড়ে বিশাল বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিন যাওয়া সত্যিই রোমাঞ্চকর। সাগর আর নীল জলের সেন্ট মার্টিন দেখার ইচ্ছা দীর্ঘদিনের। দুটিই আজ পূরণ হচ্ছে।
মুফিজুর রহমান (৪২) নামে আরেক পর্যটক বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে টেকনাফ হয়ে জাহাজে সেন্ট মার্টিন গিয়েছিলাম। নাফ নদী ও মিয়ানমার সীমান্ত হয়ে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিন ভ্রমণের আনন্দ ভোলার মতো নয়। এবার অন্য পথে যাচ্ছি। আশা করি ভালোই লাগবে।’
জাহাজমালিকদের সংগঠন সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর প্রথম আলোকে বলেন, প্রথম দিনের যাত্রায় তিনটি জাহাজে ১ হাজার ২০০ জন পর্যটক সেন্ট মার্টিন গেছেন। তাঁরা সেখানকার হোটেলে রাত্রিযাপন করবেন। সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলার ক্ষেত্রে জাহাজেও প্রচারণা চালানো হচ্ছে। গত বছর ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে ১ লাখ ১০ হাজারের মতো পর্যটক সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করেছিলেন।
কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছটা জেটিঘাটে পর্যটকদের ভিড়। আজ সকালে তোলা