পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইউপি সদস্য নিহত
Published: 17th, January 2025 GMT
গাইবান্ধায় পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্য নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের জোদ্দ সরকারপাড়া গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত আব্দুল জব্বার (৭০) বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন। তিনি নশরৎপুর গ্রামের মৃত খেজের উদ্দীনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বোয়ালী ইউনিয়নের জোদ্দ সরকারপাড়া গ্রামের সানোয়ার মিয়ার প্রবাসী ছেলের স্ত্রী শ্বশুরবাড়িতে না থেকে তার বাবার বাড়িতে থাকতেন। কিছুদিন থেকে তিনি তার ঘরের আসবাবপত্র বাবার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে পারিবারিক বিরোধ হয়। শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের পর শালিসি বৈঠক আহ্বান করেন সানোয়ার মিয়া। সেখানে উপস্থিত হন ইউপি সদস্য আব্দুল জব্বার। শালিসি বৈঠকে সানোয়ার মিয়ার পুত্রবধূকে আসবাবপত্র নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন আব্দুল জব্বার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সানোয়ার মিয়ার মেয়ে মুক্তা রানী তার ওপর হামলা চালান। আব্দুল জব্বারের দাড়ি-চুল টেনে ধরাসহ বুকে পিঁড়ি (বসার জন্য নিচু কাঠের আসন) দিয়ে আঘাত করেন মুক্তা রানী। এতে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটে পড়েন জব্বার। স্থানীয়রা আব্দুল জব্বারকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ছোট ভাই আব্দুল মান্নান বলেছেন, “আমার বড় ভাইকে শালিসের কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সানোয়ার মিয়ার বাড়িতে সেই শালিসে তার মেয়ে আমার বৃদ্ধ ভাইকে আঘাত করেন। হাসপাতালে তিনি মারা যান। আমরা আইনের আশ্রয় নেব।”
বোয়ালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম সাবু বলেছেন, “সানোয়ার মিয়ার পুত্রবধূ শ্বশুরবাড়িতে থাকতে চান না। তাই, তার আসবাবপত্র বাবার বাড়িতে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। শালিসে মেম্বার সেসব আসবাবপত্র নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিলে সানোয়ারের মেয়ে মুক্তা রানী মেম্বারের চুল-দাড়ি ধরে টানা-হেঁচড়া করেন। একপর্যায়ে তার বুকে পিঁড়ি দিয়ে আঘাত করেন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে আব্দুল জোব্বারকে মৃত ঘোষণা করা হয়।”
গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম তালুকদার বলেছেন, “খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/মাসুম/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে দুই স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ১
রাজবাড়ীর পাংশায় প্রাইভেট পড়ে বাড়ি ফেরার পথে দুই স্কুলছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল রোববার রাতে পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
ভুক্তভোগী দুই ছাত্রীর মা ও বাবা গতকাল পৃথকভাবে বাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে পাংশা থানায় দুটি মামলা করেন। এতে হাসমত আলী (২২) ও শিহাব মণ্ডল (২০) নামের দুই তরুণকে আসামি করা হয়। তাঁদের বাড়ি উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নে। মামলা করার পর পুলিশ রাতে অভিযান চালিয়ে শিহাবকে গ্রেপ্তার করে।
ভুক্তভোগী দুই স্কুলছাত্রী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাদের একজনের বয়স ১৪ বছর এবং অপরজনের বয়স ১৫ বছর।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়া শেষে দুই বান্ধবী একসঙ্গে বাড়ি ফিরছিল। পথে উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের বনগ্রাম এলাকায় পৌঁছালে তাদের পথ রোধ করে হাসমত ও শিহাব। ধারালো ব্লেড বের করে স্কুলছাত্রী দুজনকে জিম্মি করে রাস্তার অদূরে একটি পানের বরজে জোর করে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে পৃথক স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করেন ওই দুই তরুণ। বিষয়টি কাউকে না জানাতে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে চলে যান তাঁরা।
গতকাল রাতে পাংশা মডেল থানায় মামলা করতে আসা ভুক্তভোগী দুই স্কুলছাত্রীর পরিবার জানায়, হাসমত ও শিহাব ওই দুই স্কুলছাত্রীকে মাঝেমধ্যে উত্ত্যক্ত করতেন। এ ঘটনায় দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন।
পাংশা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অষ্টম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে একজনের মা এবং অপরজনের বাবা বাদী হয়ে রোববার রাতে হাসমত আলী ও শিহাব মণ্ডলকে আসামি করে পৃথক দুটি মামলা করেন। রাতেই আসামি শিহাব মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর আসামি হাসমতকে গ্রেপ্তারে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
ওসি সালাহ উদ্দিন আরও বলেন, গ্রেপ্তার শিহাব পুলিশের কাছে ধর্ষণের অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তাঁর পোশাকেও ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তাঁকে সোমবার রাজবাড়ীর আদালতে পাঠানো হবে। দুই স্কুলছাত্রীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।