সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের জন্মবার্ষিকী আজ
Published: 19th, January 2025 GMT
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি তিনি বগুড়ার গাবতলীর বাগবাড়ীর এক বনেদি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা রসায়নবিদ মনসুর রহমান ও মা জাহানারা খাতুন রানী। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় জিয়াউর রহমানের ডাকনাম কমল।
১৯৫৩ সালে তিনি তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সেক্টর কমান্ডার হিসেবে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। দায়িত্ব পালন করেন মুক্তিযুদ্ধের একটি স্বতন্ত্র সেক্টরের। তাঁর নামে গড়ে ওঠে জেড ফোর্স। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ২৫ আগস্ট তিনি সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত হন। সেই বছরের ৭ নভেম্বর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে অধিষ্ঠিত হন জিয়াউর রহমান।
১৯৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি। এরপর ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হন জিয়াউর রহমান। তিনি ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে বিপথগামী একদল সেনা সদস্যের হাতে নিহত হন জিয়াউর রহমান।
জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আজ বেলা ১১টায় জিয়াউর রহমানের সমাধিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ সব পর্যায়ের নেতাকর্মী পুষ্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন। দুপুর ২টায় রমনার ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ মিলনায়তনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ক্রোড়পত্র ও পোস্টার প্রকাশ করা হবে। এ ছাড়া আজ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারাদেশের দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন এবং বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনগুলোর উদ্যোগে সব জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা ও বিভিন্ন ইউনিটে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
এক বাণীতে মির্জা ফখরুল বলেন, মহান রাষ্ট্রনায়কের জন্মবার্ষিকীতে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা, গণতন্ত্র, মানুষের ভোটাধিকার, মানবিক সাম্য, ন্যায়বিচার ফিরিয়ে আনা এবং মানুষের হারানো মৌলিক ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানাই।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস
রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।
‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।
এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।
সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।
বর্ষার ফুলের উৎসব
বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!
রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।
এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।