ঢাকার বিপক্ষে মাঝারি সংগ্রহ চিটাগংয়ের
Published: 22nd, January 2025 GMT
ঢাকা ও সিলেট পর্বে রানবন্যা হলেও চট্টগ্রাম পর্বে রানের গতি কিছুটা হলেও কমে এসেছে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে হাতে উইকেট রেখেও হাত খুলে খেলতে পারল না স্বাগতিক চিটাগং কিংস। ফলে ঢাকার সামনে বড় টাইর্গেট দিতে পারেনি মোহাম্মদ মিঠুনের দল। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে চিটাগং কিংস নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪৮ রান সংগ্রহ করেছে।
আগের ম্যাচে দুর্দান্ত হাফ সেঞ্চুরি করে চমক দেখিয়েছিলেন নাঈম ইসলাম। বিপিএলে প্রায় এক যুগ পর হাফ সেঞ্চুরি তুলে দলকে জেতানোর পাশাপাশি হয়েছিলেন ম্যাচসেরা। তবে ঢাকার বিপক্ষে সেই ফর্মটা ধরে রাখতে পারেননি চিটাগংয়ের এই অভিজ্ঞ ব্যাটার।
ঢাকার বিপক্ষে শুরুটা ধীরস্থিরই করেছিলেন নাঈম ও আফগান ওপেনার জুবায়েদ আকবরি। দুজনে গড়েন ৪০ রানের জুটি। তবে অষ্টম ওভারে প্রথম আঘাত হানেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। নিজের দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলে টার্ন করে নিচু হয়ে আসা ডেলিভারিতে আকবরিকে বোল্ড করেন তিনি। ১৯ বলে ২৩ রান করে স্টাম্প হারান এই আফগান ওপেনার।
প্রথম উইকেট হারানোর পর নাঈম ইসলাম ও গ্রাহাম ক্লার্কের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে চিটাগং। তবে ১৩তম ওভারে টানা দুটি উইকেট হারায় তারা। ১৯ বলে ১৮ রান করা ক্লার্ক অপু’র ফ্লাইট ডেলিভারিতে লং অফে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। তার ঠিক পরের বলেই স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়েন হুসাইন তালাত। পাকিস্তানের এই অলরাউন্ডার দুই বলে মাত্র ২ রান করেন।
১৪তম ওভারে দলের বড় ভরসা নাঈম ইসলামও বিদায় নেন। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের অফ স্টাম্প লক্ষ্য করে করা ডেলিভারিতে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন নাঈম। ৪০ বলে ৪৪ রান করে আউট হন তিনি। নাঈমের বিদায়ের পর ১৪.
এদিন মারকুটে ব্যাটিং করতে পারেননি শামিম হোসেনও। ১৬ বলে ১৫ রান করে বেটনের শিকারে পরিণত হন তিনি। পাকিস্তানি রিক্রুট হায়দার আলিও ১১ বলে ১৬ রান করে মেহেদী রানার শিকারে পরিণত হন। শেষদিকে অধিনায়ক মিঠুন ৮ বলে ১২ এবং খালেদ ৬ বলে ৮ রান করে অপরাজিত থাকেন।
ঢাকার পক্ষে মোসাদ্দেক ৩ ওভারে ১৩ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন। ৩ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার করেন নাজমুলও। এহারা ১টি করে উইকেট শিকার করেন বেটন এবং মেহেদী রানাও।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব প এল র ন কর উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
পদ স্থগিত নেতার পক্ষে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির বিবৃতি, দ্রুত মুক্তি দাবি
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে সাদাপাথর লুটের মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিনের মুক্তি দাবি করে বিবৃতি দিয়েছে উপজেলা বিএনপি। গতকাল সোমবার উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়। কেন্দ্র থেকে পদ স্থগিত হওয়া একজন নেতার পক্ষে এমন বিবৃতি দেওয়ায় দলের ভেতরে ও বাইরে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
গত শনিবার রাতে সিলেট নগরের আম্বরখানা এলাকা থেকে সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৯)। তিনি কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। গত ১১ আগস্ট কেন্দ্রীয় বিএনপি চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ দলীয় নীতি ও আদর্শবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে সাহাব উদ্দিনের পদ স্থগিত করে।
গতকাল উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল মন্নান ও সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, সাহাব উদ্দিন বিগত স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামের অগ্রসৈনিক ও মিথ্যা মামলায় নির্যাতিত নেতা। তাঁকে সাদাপাথর লুটের মামলায় মিথ্যা অভিযোগে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানোয় উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয় এবং অবিলম্বে তাঁর মুক্তি দাবি করা হয়।
এ বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবদুল মন্নানের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। পরে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আকবরের সঙ্গে কথা হয়। তিনি সাহাব উদ্দিনের চাচাতো ভাই। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমরা মাঠে আছি। আমরা তাঁকে ভালোভাবে চিনি। তিনি কোনো লুটপাটে ছিলেন না। বরং লুটপাটের বিরুদ্ধে তাঁর নেতৃত্বে আমরা মিছিল, মানববন্ধন করেছি। এ তথ্য আমরা মৌখিকভাবে জেলা বিএনপিকেও জানিয়েছি।’
উপজেলা বিএনপির বিবৃতিতে সাহাব উদ্দিনের বিষয়ে ‘মিথ্যা অভিযোগে সদ্য পদ স্থগিত হয়েছে’ বলে দাবি করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাঁরা রিসিভ করেননি। তাই এ বিষয়ে জেলা বিএনপির অবস্থান ও কোনো বক্তব্য জানা যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা বিএনপির এক নেতা বলেন, বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে সাহাব উদ্দিনের পদ স্থগিত করা হয়েছে। এমন অবস্থায় উপজেলা বিএনপি কীভাবে ওই নেতার পক্ষে বিবৃতি দেয়, সেটা অবশ্যই সাংগঠনিকভাবে বিবেচনায় নেওয়া উচিত। ব্যক্তির অপকর্মের দায় কেন সংগঠন নেবে? বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত।
সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে সরকারি প্রায় ১৫০ একর জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে। গত ১৭ মার্চ প্রথম আলোয় এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে ১৮ মার্চ সরকারি জমি উদ্ধারে অভিযানে নামে স্থানীয় প্রশাসন। প্রশাসন অভিযান চালিয়ে প্রায় ৭০ একর জমি উদ্ধার করে এবং ১০০টি পাথর ভাঙার যন্ত্র উচ্ছেদের পাশাপাশি প্রায় ৫০টি টিনশেড ঘর উচ্ছেদ করা হয়।
এ ছাড়া কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জে সরকারি জমি দখলের ঘটনায় ১৯ মার্চ সাহাব উদ্দিনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় জেলা বিএনপি। পাশাপাশি অভিযোগ তদন্তে জেলা বিএনপির সহসভাপতি আশিক উদ্দিনকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
গত ১০ এপ্রিল ভোলাগঞ্জে পাথর কোয়ারি পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনে সাহাব উদ্দিন ও তাঁর স্বজনেরা জমি দখল ও লুটপাটে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, উপজেলা সভাপতির নেতৃত্বে এমন অপরাধ দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।
সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তারের পর র্যাব এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাঁকে ‘সাদাপাথর লুটপাটে অভিযুক্ত অন্যতম মূলহোতা’ হিসেবে উল্লেখ করে। সাদাপাথর লুটের ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ থানায় গত ১৫ আগস্ট খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা এক হাজার থেকে দেড় হাজার জনকে আসামি করা হয়।