ঘন কুয়াশায় ফেরির মার্কিং বাতির আলো অস্পষ্ট হয়ে আসায় দুর্ঘটনা এড়াতে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রেখেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাত ১০টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবু আবদুল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “আজ সন্ধ্যার পর থেকে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ঘন কুয়াশার প্রকোপ বাড়তে থাকে। রাত ১০ টার দিকে কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে গেলে ফেরির মার্কিং বাতির আলো অস্পষ্ট হয়ে আসে। দুর্ঘটনা এড়াতে এ নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। কুয়াশার ঘনত্ব কেটে গেলে আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু হবে।”
আরো পড়ুন:
কিশোরগঞ্জে বেড়েছে শীতের তীব্রতা
করটিয়া ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের শীতবস্ত্র বিতরণ
আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে পাঁচটি ফেরি রয়েছে।
ঢাকা/চন্দন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিতীয় ট্রিপেই মেঘনায় ডুবল বালুবাহী বাল্কহেড
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে সেতুর পিলারে ধাক্কা খেয়ে মেঘনা নদীতে তলিয়ে গেছে একটি বালুবাহী বাল্কহেড। গতকাল শনিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দুর্ঘটনার শিকার হয় এমভি রিফাত-২ নামের বাল্কহেডটি। ঘটনার পরপরই শ্রমিকরা তীরে উঠে যান। বাল্কহেডের এক অংশীদার জানিয়েছেন, এটি তাদের নৌযানের দ্বিতীয় যাত্রা (ট্রিপ) ছিল।
এ দুর্ঘটনার বিষয়ে কয়েকটি বর্ণনা পাওয়া গেছে। কেউ বলছেন, অন্য একটি বাল্কহেডের ধাক্কায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে এমভি রিফাত-২ শুরুতে সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতুতে ধাক্কা খায়। পরে দুটি রেলসেতু পার হয়ে মাঝখানে ভেঙে ডুবে যায়। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকরা জানিয়েছেন, বিকট শব্দ পেয়ে তারা সড়ক সেতুতে বাল্কহেডটি ধাক্কা খেতে দেখেন।
দুর্ঘটনার সময় আশুগঞ্জ প্রান্তে নোঙর করা এমভি মেঘনা-২৫ জাহাজে ছিলেন শ্রমিক মো. মোজাম্মেল হাওলাদার। তিনি বলেন, ভোরে সেতুর পিলারে ধাক্কা লেগে বাল্কহেডটি ডুবতে ডুবতে তাদের জাহাজের দিকে আসছিল। এ সময় জাহাজের মাস্টার জরুরি ঘণ্টা বাজিয়ে সবাইকে জাগিয়ে তোলেন। তারা দেখতে পান, বাল্কহেডটি তাদের জাহাজের পেছনে নদীতে ডুবে যাচ্ছে। এ সময় সেখান থেকে কয়েকজন শ্রমিক তাদের জাহাজে উঠে প্রাণ বাঁচান। এর আগে আরও তিন-চারজন শ্রমিককে ওই বাল্কহেড থেকে রেলসেতুর পিলারে উঠতে দেখেন। পরে অন্য নৌযান তাদের উদ্ধার করে।
একই জাহাজের মাস্টার মো. নুরুন্নবী জানান, ফজরের নামাজ পড়তে অজু করার সময় বিকট শব্দ পান। তখন তিনি বাল্কহেডটিকে সেতুর পিলারে
ধাক্কা খেয়ে প্রায় ডুবতে ডুবতে তাদের জাহাজের দিকে আসতে দেখেন। তখন জরুরি ভিত্তিতে সবার ঘুম ভাঙান।
আশুগঞ্জ প্রান্ত থেকেই দুর্ঘটনা দেখেন সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাকের চালক স্বপন মিয়া। তাঁর ভাষ্য, পাথরবোঝাই একটি বাল্কহেডের ধাক্কায় ওই বাল্কহেডটি চলতে থাকে। সেটি সেতুর নিচে দিয়ে যাওয়ার সময় পুরোনো রেলসেতুর ৩ নম্বর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা খায়। পরে সেটির মাঝখানে ফাটল দেখা দেয়। এ সময় বাল্কহেডের চালকসহ তিনজনকে নতুন রেলসেতুর পিলারে উঠতে দেখেন।
ভৈরব নৌ থানার ওসি মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা কাউকে পাইনি। বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তাদের খবর দেওয়ার পর পুলিশ নিয়ে তারা সেখানে গেছেন।
বাল্কহেডের এক অংশীদার শনিবার সন্ধ্যায় সমকালকে বলেন, অপর এক আত্মীয়কে নিয়ে কিছুদিন আগেই ১ কোটি ৫ লাখ টাকায় সেটি কিনেছেন। এটি ছিল তাদের দ্বিতীয় যাত্রা (ট্রিপ)। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল বাজার থেকে সিলেকশন বালু নিয়ে যাচ্ছিল সেটি। ডুবে যাওয়ার পর থেকে চালক বা শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। তাই বালুর গন্তব্য জানাতে পারছেন না। অপর অংশীদারের ভাষ্য, কেনার পর একজনের কাছে বাল্কহেডটি ভাড়া দিয়েছেন তারা। তাই কোথায় যাচ্ছিল, তা জানেন না।
বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক ও ভৈরববাজার-আশুগঞ্জ নদীবন্দরের কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন আহম্মেদ জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বাল্কহেডের ডুবে যাওয়া জায়গা চিহ্নিত করেছেন। এটি নদীর প্রায় কিনারে। তাই নৌযান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে না। বাল্কহেডের মালিক বা তাদের কোনো প্রতিনিধি বিকেল পর্যন্ত
যোগাযোগ করেননি। তিনি আরও বলেন, ঈদের পর সাত দিন নদীতে এসব নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ
করা হয়েছিল। শনিবার ছিল এ নিষেধাজ্ঞার শেষ দিন। ওই বাল্কহেডটি রাতের বেলায় পণ্য নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল।