পটুয়াখালীর বাউফলে সুজন হাওলাদার (৩০) নামে এক অটোরিকশা চালককে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মূনঈমুল ইসলাম মিরাজ (২৮) ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে। 

সোমববার (২৭ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের আমিরবাদ গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। 

বাউফল থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, “প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি, মিরাজ ও তার ভাইসহ কয়েকজন এ হত্যাকাণ্ডের ঘটিয়েছেন। কি কারণে ঘটনাটি ঘটেছে সে বিষয়ে আমরা কিছুই জানতে পারিনি। তদন্ত চলছে।”

আরো পড়ুন:

২৮ অক্টোবর খুনের মাস্টার মাইন্ড শেখ হাসিনা: গোলাম পরওয়ার

সাংবাদিক তুরাব হত্যা মামলায় পুলিশ কর্মকর্তা দস্তগীর বরখাস্ত

নিহত সুজন মদনপুরা ইউনিয়নের দ্বীপাশা গ্রামের নবী আলী হাওলাদারের ছেলে।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, সুজন বিকেলে আমিরাবাদ বাজারের ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় নিজের অটোরিকশায় বসা ছিলেন। এসময় উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মূনঈমুল ইসলাম মিরাজের নেতৃত্বে ৮-১০ জন যুবক তার ওপর হামলা চালায়। তারা সুজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা সুজনকে উদ্ধার করে বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। 

নিহত সুজন হাওলাদারের বাবা নবী আলী হাওলাদার বলেন, “কনকদিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেনের ভাতিজা মিরাজসহ ৮ থেকে ১০ জন আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। তাদের সঙ্গে আমাদের কোনো বিরোধ নেই। আমার ছেলেকে মানুষজন সাহায্য করে একটি অটোরিকশা কিনে দিয়েছিল। সেই অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাতো সুজন। তারা কেন এই হত্যাকাণ্ড ঘটালো তা আমরা জানি না। আমরা ছেলে হত্যার বিচার চাই।”

বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা.

মিরাজুল ইসলাম বলেন, “নিহতের ডান পায়ের তিনটি স্থানে এবং পিঠের বাম পাশে একটি ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। আমাদের প্রাথমিক ধারণা, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়।” 

অভিযুক্ত উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মূনঈমুল ইসলাম মিরাজের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয় যায়। 

বাউফল উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. মুজাহিদ বলেন, “মিরাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল র ল ইসল ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ