চাঁদপুর-মুন্সীগঞ্জ সীমান্ত এলাকার মেঘনা নদীতে বালু মহাল ও বালু উত্তোলনের দ্বন্দ্বের জের ধরে বালুখেকো কানা জহির ও কিবরিয়া মিজি গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে দুজন নিহত হয়েছেন।

পুলিশ বলছে, চাঁদপুরের মতলবের উত্তর থানার মোহনপুর চরে মেঘনা নদীর মুখে ড্রেজার ও বাল্কহেড নোঙর করা ছিল। ওই ড্রেজার ও বাল্কহেডে বালুখেকো কানা জহিরের লোকজন অবস্থান নেয়।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে স্পিডবোটে আরেক বালুখেকো কিবরিয়া মিজির লোকজন এসে তাদের লক্ষ্য করে আকস্মিক গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় কানা জহিরের লোকজন ড্রেজার ও বাল্কহেড থেকে পাল্টা গুলি ছুড়লে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে তিনজন গুলিবিদ্ধ হন। 

আহত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক গুলিবিদ্ধ রিফাত খান (২৮) ও রাসেলকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার খবর শুনে হাসপাতালে ভিড় করেন তাদের স্বজনরা।

গুলিবিদ্ধ আইয়ুব আলীর অবস্থা গুরুতর, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রিফাতের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উপজেলায় এবং রাসেলের বাড়ি মুন্সীগঞ্জ সদরের ভাষানচর এলাকায়।

মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) বিল্লাল হোসেন বলেন, ঘটনাটি চাঁদপুর-মোহনপুর এলাকার মেঘনা নদীতে ঘটেছে। বালু মহালের দ্বন্দ্বের জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে। গুলিবিদ্ধদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে এনে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে সংবাদ পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে এসে মৃতদেহ হেফাজতে নেয়।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা.

মাসুদুর রহমান রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাদের মধ্যে দুজন হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই মারা যান। নিহত দুজনের মধ্যে একজনের বুকের ডান পাশে ও অন্যজনের বুকের বাঁ পাশে গুলির চিহ্ন রয়েছে। আহত একজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা/রতন/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী

রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।

৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।

আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।

আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগে

তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।

পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী