রংপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫ জন, আহত ২০
Published: 31st, January 2025 GMT
রংপুরে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সকালে ঘন কুয়াশার কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটনা ঘটে। নিহতদের পরিচয় এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রংপুর নগরীর সাতমাথা এলাকার চায়না টকিজের কাছে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নৈশকোচ কুড়িগ্রামগামী পাভেল এক্সপ্রেস এবং রংপুরের কাউনিয়া থেকে ছেড়ে আসা ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই ট্রলির ৩ যাত্রী নিহত হন। আরও ২ জন গুরুতর আহত হন। আহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। সেইসঙ্গে নিহতদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আজ সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রংপুরের পীরগঞ্জে সাতক্ষীরা থেকে ছেড়ে আসা কুড়িগ্রামগামী বাসে অপর একটি বাসের ধাক্কার ঘটনায় ১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে আরও ১৮ জন। পীরগঞ্জ উপজেলার রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের বড়দরগাহ হাইওয়ে ফাঁড়ির সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। অন্যদিকে রংপুর নগরীর নজিরের হাট এলাকায় বাসের ধাক্কায় একজন পথচারী নিহত হয়েছেন।
রংপুর মেট্রোপলিটন মাহিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কুদ্দুস জানান, পৃথক তিনটি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত হয়েছেন। নগরীর সাতমাথায় চায়না টকিজ সংলগ্ন এলাকায় নৈশকোচ ও ট্রলির মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই ৩ জন নিহত হন। বাকি দুইজন ভিন্ন স্থানে নিহত হয়েছেন। তবে এখনও তাদের পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন দ র ঘটন র ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব’
ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২টা ২০ মিনিট। মাথার ওপর প্রখর রোদের উত্তাপ। প্রচণ্ড গরমে ত্রাহি অবস্থায় একটু বিশ্রাম নিতে গাছের ছায়ার খোঁজে ক্লান্ত পথিক। এমন সময় ঘর্মাক্ত শরীরে একটি ভবন নির্মাণের কাজ করতে দেখা গেল কয়েকজন শ্রমিককে। তাদের একজন তোঁতা মিয়া, অপরজন হাবিবুল।
হাবিবুল পাথর ভরেই যাচ্ছেন, তোঁতা মিয়া সেগুলো মাথায় করে একের পর এক টুড়ি ছাদ ঢালাইয়ের জন্য পৌঁছে দিচ্ছেন নির্দিষ্ট স্থানে। সেখানেও বালু-পাথরের মিশ্রণ করছেন আরও কয়েকজন। তাদের কর্মযজ্ঞের এক ফাঁকে কথা হয় তোঁতা মিয়ার সঙ্গে।
আলাপকালে তোঁতা মিয়া বলেন, ‘সারাদিন কাম (কাজ) কইরা ৫০০ ট্যাহা (টাকা) হাজিরা পাই। এইডি দিয়া কোনোমতে বউ-পুলাপান নিয়া দিন পার করতাছি। মে দিবস-টিবস কী কইতারতাম না। আমরার মতো গরিব মানুষ কাম না করলে পেডে ভাত জুটতো না এইডাই কইতারবাম।’
গতকাল বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণকাজ করার সময় এসব কথা বলেন তোঁতা মিয়া (৪৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার আকুয়া এলাকায়। এ সময় কথা হয় আরেক নির্মাণ শ্রমিক একাদুল মিয়ার সঙ্গে। একাদুলও জানেন না মে দিবস কী। তিনি বলেন, ‘এই কাম কইরা খাইয়া-না খাইয়া বউ-পুলাপান লইয়া কোনোরহমে দিন পার করতাছি। বর্তমান বাজারো জিনিসপাতির দাম বাড়লেও আমরার মজুরি বাড়ে না। পাঁচ বছর আগেও যা পাইতাম, অহনও তাই পাই।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক ট্যাহা সঞ্চয় করবাম এই বাও (উপায়) নাই। অসুখ অইয়া চার দিন ঘরে পইড়া থাকলে না খাইয়া থাহন লাগব। আমরার এইতা দিবস-টিবস দিয়া কী অইব?’
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এই দিনটি সারাবিশ্বের শ্রমিক শ্রেণির কাছে গুরুত্বপূর্ণ। বহির্বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয় নানা আয়োজনে। কিন্তু যাদের অধিকার আদায়ের জন্য এ দিনটি পালন করা হয়– তারাই জানেন না দিবসটি সম্পর্কে। তাদের আরেকজন দিনমজুর রাজন মিয়া। রাজন জানান, এসব দিবসে তাদের মতো গরিব মানুষের কোনো লাভ-লোকসান নেই।