ছোটবেলায় একটা গল্প শুনে বেশ মজা পেয়েছিলাম। তা হলো শিক্ষক ক্লাসে লেকচার দেওয়ার সময় ছাত্রদের জিজ্ঞেস করেছিলেন, যদি তোমাদের এক পাশে কিছু বই, অন্য পাশে কিছু টাকা রাখা হয় তাহলে তোমরা কোনটা নেবে? উত্তরে এক দুষ্ট ছাত্র বলে উঠল, স্যার, আমি টাকা নেব। তখন স্যার বললেন, হায়রে অপদার্থ! আমি হলে বই নিতাম। জ্ঞানের কোনো বিকল্প নেই।
অর্থই সকল অনর্থের মূল। ছাত্র তখন বলে উঠল, স্যার, যার যা অভাব, সে তাই নেবে। সে আরও বলল, আমার ওজন আছে, আয়তন আছে, জায়গা দখল করি, বল প্রয়োগ করি। কোনো অবস্থাতেই আমি অপদার্থ নই।
গল্পটা হাস্যরসাত্মক হলেও বেশ ইঙ্গিতবহ। সেটাকে আরেকটি বাংলা প্রবাদ দিয়ে বলা যায়– রতনে রতন চেনে, শূকর চেনে কচু। সম্প্রতি আমিও অনুরূপ এক ঘটনার সাক্ষী। আমার একটা অভ্যাস হলো মাঝে মাঝে স্কুলের মেধাবী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গল্পগুজবে সময় কাটানো। তারই সুযোগ করে নিতে একটা নির্দিষ্ট হাই স্কুলে মেধাবী শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আমি আশপাশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সেরা ছাত্রছাত্রীদের জন্য পুরস্কার ঘোষণা করি। যারা নিজ নিজ স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষায় মেধা তালিকায় প্রথম ও দ্বিতীয় হবে তাদের ওই হাই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে বিনা খরচায় ভর্তি করা হবে।
এ বছর ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২ জন করে মোট ১২ জন মেধাবী শিক্ষার্থী উক্ত হাই স্কুলে ভর্তির জন্য যোগ্য বলে নির্বাচিত হয়। তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময়ের সময় জানতে পারলাম, এক ছাত্রীর বাবা নেই। কিছুটা ভারাক্রান্ত মনে জানতে চাইলাম, পরিবারে আর কে আছে? শিক্ষার্থী বলল, সে তার আরেক বোনসহ মাকে নিয়ে নানাবাড়ি থাকে। তার মা টিউশনি করে যা আয়-রোজগার করে তা দিয়ে সংসারের ব্যয় নির্বাহের পাশাপাশি সন্তানদের লেখাপড়া করান। স্বাভাবিকভাবেই ওই আয়ে তাদের চলে না। তারপরও এইচএসসি পাস মা জানান, মেয়ে ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় ভালো। মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করার জন্য তিনি আধপেটা খেয়ে হলেও সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন।
আমি ভাবলাম, এই মায়ের টাকার অভাব, কিন্তু তিনি টাকার পেছনে ছুটছেন না। তিনি ছুটছেন সন্তানের শিক্ষা নিশ্চিত করার পথের সন্ধানে। মায়ের এই অদম্য মানসিকতাই কন্যার মধ্যে জ্ঞানের প্রতি অদম্য স্পৃহা জাগিয়ে দিয়েছে। আবারও প্রমাণ হলো– রতনে রতন চেনে।
মুনতাসির আজিজ
শিক্ষার্থী, নোয়খালী
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
মালাইকার বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
মামলার পরবর্তী শুনানিতে হাজির না হলেই বলিউড অভিনেত্রী মালাইকা অরোরার বিরুদ্ধে জামিন-অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দিয়েছেন মুম্বাইয়ের আদালত। ২০১২ সালের একটি মামলার শুনানিতে এ আদেশ দেন আদালত। আগামী ৯ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানিতে হাজির না হলেই অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে এ পরোয়ানা জারি হবে। খবর বলিউড হাঙ্গামার
সমন জারির পরও গত ২৯ এপ্রিল মামলার শুনানিতে হাজির ছিলেন না মালাইকা। শুনানিতে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কে এস জানওয়ার নিজের পর্যবেক্ষণে বলেন, অভিনেত্রী ইচ্ছা করেই শুনানিতে হাজির হচ্ছেন না, তিনি আইনি প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করছেন না।
মালাইকা অরোরা। অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে