বিদ্যমান বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারকে ‘বাংলাদেশ প্রশাসনিক সার্ভিস’ করার সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। এই ক্যাডার সার্ভিসের পদগুলো মাঠ প্রশাসনেই সীমাবদ্ধ থাকবে। আর সচিবালয় চলবে সব সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত ‘সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস (এসইএস)’-এর কর্মকর্তাদের দিয়ে। এখানে উপসচিব থেকে অতিরিক্ত সচিব পর্যন্ত পদের কর্মকর্তারা থাকবেন। ‘এসইএসে’ উপসচিব পদে প্রশাসনের জন্য ৫০ শতাংশ এবং অন্য সার্ভিসের জন্য ৫০ শতাংশ কোটা রাখা হবে।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে এই সুপারিশ করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এ প্রতিবেদন তুলে দেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী। পরে প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপ সাংবাদিকদের দেওয়া হয়।

সুপারিশ অনুযায়ী, মাঠপর্যায়ে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের শুরুর পদের নাম এখনকার মতো সহকারী কমিশনার। মাঠপর্যায়ে তাঁদের শীর্ষ পদ হবে বিভাগীয় কমিশনার; যাঁদের পদমর্যাদা হবে গ্রেড-১; যা সচিবের সমান। তবে এই সার্ভিসের জন্য একটি শীর্ষ পদ থাকবে, নাম হবে ‘প্রধান কমিশনার’; যিনি বিশেষ গ্রেড পাবেন; যা মুখ্য সচিবের সমান। এর সঙ্গে মিল রেখে অন্যান্য সার্ভিসের জন্যও ভিন্ন নামে পদ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।

বিসিএসের আওতায় বিদ্যমান একীভূত ‘ক্যাডার সার্ভিস’ বাতিল করে সার্ভিসের ধরন অনুযায়ী আলাদা নামকরণের সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান ২৬টি ক্যাডারকে কমিয়ে ১৩টি প্রধান সার্ভিসে বিভক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে সার্ভিসগুলোর পদসোপান কেমন হবে, তা–ও উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রশাসন সার্ভিসের শুরুর পদ হবে সহকারী কমিশনার। তারপর পর্যায়ক্রমে জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার ও উপজেলা কমিশনার (এখনকার ইউএনও), যাঁদের বেতন গ্রেড হবে ৬; তারপর অতিরিক্ত জেলা কমিশনার (এখনকার এডিসি), যাঁদের বেতন গ্রেড-৫; তারপর জেলা কমিশনার (এখনকার ডিসি), যাঁদের বেতন গ্রেড-৩, অর্থাৎ যুগ্ম সচিবের সমান। বর্তমানে তাঁদের বেতন গ্রেড-৫। তার ওপরের পদ হবে অতিরিক্তি বিভাগীয় কমিশনার, যাঁদের বেতন গ্রেড হবে ২। তারপর বিভাগীয় কমিশনার।

অনুরূপভাবে অন্যান্য সার্ভিসের পদগুলো হবে পর্যায়ক্রমে সহকারী পরিচালক, উপজেলা প্রধান, অতিরিক্ত পরিচালক, পরিচালক, অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও মহাপরিচালক। এর বাইরে প্রতিটি সার্ভিসের জন্য একটি শীর্ষ পদ থাকবে। যেমন ‘চিফ অব হেলথ সার্ভিস’। প্রতিটি সার্ভিসের কর্মকর্তারা পরীক্ষার মাধ্যমে ওই সব পদে পদোন্নতি পাবেন।

সব সার্ভিসের কর্মকর্তারা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা দিয়ে ‘সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিস (এসইএস)’-এ নিয়োগ পেতে পারবেন। এই কর্মকর্তারা সচিবালয়ে দায়িত্ব পালন করবেন, যেখানে বর্তমানে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারাই সচিবালয় চালাচ্ছেন।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বলছে, প্রশাসন সার্ভিসের যেসব কর্মকর্তা এসইএসে যাওয়ার জন্য পরীক্ষা দেবেন না বা পরীক্ষায় অকৃতকার্য হবেন, তাঁরাও নিজ সার্ভিসের পদগুলো, অর্থাৎ অতিরিক্ত জেলা কমিশনার, জেলা কমিশনার, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার, বিভাগীয় কমিশনার ও প্রধান কমিশনার পদে পদোন্নতির সুযোগ পাবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স র ভ স র জন য র স প র শ কর পর ক ষ ত রপর সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

অভিভাবকরা সন্তানদের নিয়ে নীলচক্র দেখতে বলছেন, কী আছে এই সিনেমায়?

সিনেমা হলে বসে বাবা সন্তানের হাত ধরছেন, এক তরুণী মুছছেন চোখের কোণ, পেছনের সারিতে একজন মা কানে কানে ছেলের সঙ্গে কিছু বলছেন; এমন দৃশ্য এখন দেখা যাচ্ছে ঈদের ‘নীলচক্র’ দেখতে গিয়ে।

দর্শক বলছেন ‘নীলচক্র’ শুধু বিনোদনের সিনেমা নয়, এটা সমাসাময়িক গল্পের এমন একটি সাসপেন্স থ্রিলার যা, এখনকার ইন্টারনেট প্রজন্মকে সচেতন করছে।

এই যেমন বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্স থেকে বের হওয়া এক অভিভাবক ‘নীলচক্র’ সিনেমা দেখে বলছিলেন, ‘আমার মেয়ে মোবাইলে ব্যস্ত থাকে সবসময়, সেটা নিয়ে আমাদের অভিযোগের শেষ নেই। আজ একসঙ্গে আমরা সিনেমাটি উপভোগ করলাম। ইন্টারনেটের একটা ভুল কিভাবে আমাদের জীবন শেষ করে দিতে পারে সেটা দেখলাম। সিনেমা শেষে ও নিজে থেকে আমার কাঁধে মাথা রাখল। কিছু বলার ছিল না,শুধু অনুভব করলাম, ‘নীলচক্র’ আমাদের আরও কাছাকাছি এনে দিল।’

যমুনা ব্লকবাস্টার সিনেমাস ‘নীলচক্র’ দেখে ফেরা একদল তরুণী বলছিলেন, ‘সিনেমাটি দেখে আমার মধ্যে সচেতনতা এসেছে। আমার একটা ব্যক্তিগত ভিডিও কিংবা ছবি আমার পুরো পরিবারকে শেষ করে দিতে পারে সেই ধারণা এলো। সিনেমায় আরিফিন শুভ দারুণ অভিনয় করেছেন, তাঁকে ও পরিচালককে ধন্যবাদ আমাদের দেশে আমার দেশের জন্য দরকারী এমন একটি গল্প নিয়ে সিনেমা করার জন্য।’

একজন মা এসেছিলেন সিনেমাটি দেখতে। তিনি বলছেন, ‘আমি সিনেমাটি দারুণ উপভোগ করেছি। আমাদের সমাজের জন্য খুব দরকারী গল্পের এই সিনেমা। আমার পরিবারে ছেলে ও মেয়ে আছে তরুণ। আমি তাঁদের নিয়ে এই সিনেমাটি আবার দেখব শুধুমাত্র সচেতনার জন্য।’ 
 
সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করে দারুণ প্রশংসায় ভাসছেন চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ। এই সিনেমা প্রসঙ্গে তাঁর ভাষ্য, ‘এই গল্প এখনকার। ইন্টারনেট যুগে একটা অসাবধান ক্লিক পুরো জীবন বদলে দিতে পারে। এটাই দেখানো হয়েছে। সাহসী বলেই করেছি, দরকারি বলেই করেছি। অনেকেই সিনেমাটি প্লট দেখে প্রশংসা করছেন জেনে ভাল লাগছে। অভিভাবক হোন বা তরুণ, যারা অনলাইনে থাকেন, সবারই দেখা উচিত। চোখ বন্ধ রাখলে বিপদ থেমে থাকে না।’

একটা ক্লিক, একটা ভিডিও, আর তাতেই পাল্টে যাচ্ছে জীবনের গতিপথ। শহরজুড়ে ফাঁস হচ্ছে একের পর এক ব্যক্তিগত ভিডিও। অন্ধকার, আতঙ্ক আর টানটান উত্তেজনায় মোড়ানো এক সময়ের গল্প নিয়ে পরিচালক মিঠু খানের ‘নীলচক্র: ব্লু সার্কেল’ এ এবার পর্দায় ফিরছেন আরিফিন শুভ। তাঁর বিপরীতে আছে মন্দিরা চক্রবর্তী। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিষেধাজ্ঞার মধ্যে বহর নিয়ে সাবেক যুবদল নেতার সুন্দরবন ভ্রমণ
  • অভিভাবকরা সন্তানদের নিয়ে নীলচক্র দেখতে বলছেন, কী আছে এই সিনেমায়?