বাউফলে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আহত ২০, মোটরসাইকেল ভাঙচুর
Published: 6th, February 2025 GMT
পটুয়াখালীর বাউফলে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বাউফল পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়কসহ কমপক্ষে ২০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে চারটি মোটরসাইকেল। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার নাজিরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বাউফল পাবলিক মাঠে বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল আলম তালুকদারের জনসভা করার কথা রয়েছে। এ উপলক্ষে গত কয়েক দিন ধরে পোস্টার ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত ৩১ দফাসম্বলিত প্রচারপত্র বিতরণ কার্যক্রম করছিলেন বাউফল পৌরসভা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল ফাহাদের নেতৃত্বে ২০-২৫ জনের একটি দল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পোস্টার ও প্রচারপত্র নিয়ে নাজিরপুর গ্রামে প্রচারণা চালাতে গেলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে আহতদের মধ্যে ১০ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর বাউফল উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ছাত্রদল নেতা আবদুল্লাহ আল ফাহাদ অভিযোগ করেছেন, নাজিরপুর গ্রামের আবদুল মোতলেব খানের বাড়ির সামনে পৌঁছালে নাজিরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন খানের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি দল লাঠিসোঁটা ও দেশি অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তাঁদের নেতা-কর্মীদের পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। এ সময় চারটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, বাউফল পৌরসভা বিএনরি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মো.
তবে বিএনপি নেতা এনায়েত হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, ফাহাদ ও তাঁর লোকজন পরিকল্পিতভাবে এলাকায় ঢুকে তাঁদের লোকজনের ওপর হামলা চালিয়েছেন। তখন তাঁর লোকজন আত্মরক্ষা করার চেষ্টা করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে তাঁর লোকজনও আহত হয়েছেন। তিনি স্থানীয়ভাবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহদপ্তর সম্পাদক মু. মুনির হোসেনের পক্ষে রাজনীতি করেন বলে দাবি করেন।
বাউফল পৌরসভা বিএনরি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. পলাশ বলেন, তিনি ঢাকায় আছেন। তিনি ছাত্রদল নেতা ফাহাদকে ফোন করে মারামারি না করার জন্য বলেছেন। কোনো হুমকি দেননি।
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন বলেন, বিএনপির দলীয় বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব উফল প র ছ ত রদল র ব এনপ র স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।