মৌ আক্তারকে গলাকেটে হত্যার পর সোহাগের আত্মহত্যা
Published: 8th, February 2025 GMT
গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি মেট্রো থানার বাইমাইল এলাকায় পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী মৌ আক্তারকে গলাকেটে হত্যার পর স্বামী সোহাগ হোসেন আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে আজ শনিবার বিকেল ৪টার দিকে বাইমাইল এলাকায় ভাড়া বাসা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সোহাগ সিরাজগঞ্জ জেলার তারাশ উপজেলার ধাপ তেতুলিয়া গ্রামের সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে এবং মৌ আক্তার বৃষ্টি একই জেলার সান্দুরিয়া গ্রামের মোবারক হোসেনের মেয়ে। তারা বাইমাইল মধ্যপাড়া কাদের মার্কেট এলাকার ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
বাড়ির মালিকের ছেলে দেওয়ান মোহাম্মদ রাসেল বলেন, সকাল থেকে সোহাগ-মৌ দম্পদির ঘরের দরজা বন্ধ দেখেন বাড়ির অন্য ভাড়াটিয়ারা। এ সময় অনেকবার ডাকাডাকি করলেও তারা দরজা খোলেননি। বিকেলে আবারো দরোজার সামনে গিয়ে ডাকাডাকি করা হলে তা ভেতর থেকে বন্ধ দেখা যায়। পরে ৯৯৯-এ কল করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে। তখন ঘরের মেঝেতে গৃহবধূ মৌয়ের মরদেহ এবং গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় সোহাগকে ঝুলতে দেখে পুলিশ।
মৌ আক্তার চাচা রতন মিয়া বলেন, দুই বছর আগে সোহাগ-মৌ এর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। মৌ সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করত। তার স্বামী সোহাগ কোনাবাড়ীতে একটি এনজিওতে চাকরি করত। চলতি মাসের ১ তারিখে তারা ভাড়া বাসায় উঠে। এমন ঘটনা কেন ঘটাল বুঝতে পারছি না।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ী থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, ৯৯৯ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জেরে এমন ঘটনা ঘটেছে। প্রথমে স্ত্রীকে হত্যা করে, পরে স্বামী আত্মহত্যা করেছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?