১৯৬২ সালের কথা। বিটলস তখনও বিশ্বখ্যাত হয়ে ওঠেনি। কিশোরদের ব্যান্ড হিসেবেই এর সদস্যরা পারফর্ম করতে গিয়েছিলেন জার্মানিতে। সেখান থেকে প্রেমিকা সিনথিয়ার প্রতি নিয়মিত চিঠি লিখতেন ব্যান্ডটির প্রতিষ্ঠাতা ও কিংবদন্তি রকস্টার জন লেনন। তারুণ্যের আবেগমাখা সেই চিঠিগুলোর একটির চুম্বক অংশ হাজির করলেন ফাহমিদা রিমা
প্রিয় সিনথিয়া, আমি তোমাকে ভালোবাসি, ভালোবাসি এবং ভালোবাসি। সেই সঙ্গে পাগলের মতো ভীষণ মিস করি। কোথায় যে আছো তুমি, আমার বাচ্চাটা! .
হায় ওপরওয়ালা, এখন সকাল ৬টা; এখনই তোমাকে লিখতে হচ্ছে। আমি জেনেছি, কাল পোস্ট অফিস বন্ধ। ফলে সারারাত পারফর্ম করে আসার পরও ঘুমকে বিদায় জানিয়ে লিখছি এ চিঠি। তোমাকে ভালোবাসি বাচ্চাটা! এখানে থাকতে আমার একদমই ইচ্ছে করছে না।
...এখানে আসার পর গলাটা বসে গেছে আমার। যতদূর মনে পড়ে, আসার আগেই বারোটা বেজেছিল গলার! সেরে উঠবে বলে মনে হচ্ছে না। তোমাকে ভালোবাসি, সিনথিয়া পাওয়েল।
যদি পারতাম, রোববারের পত্রিকা হাতে নিয়ে, শিহরণ জাগিয়ে তোমার ফ্ল্যাটে চলে আসতাম! ওহ, জানাতে ভুলে গেছি, চমৎকার একটি বেল্টওয়ালা ওভারকোট কিনেছি আমি। ফলে আমাকে এখন তোমার মতোই দেখাচ্ছে! পল ম্যাকার্টনি এখন আমার মাথার ওপর বেঘোরে ঘুমোচ্ছে। ওর বিছানাটা আমার ঠিক মাথার ওপরে। ওর নাক ডাকার শব্দ আমাকে অতিষ্ঠ করে তুলছে! চিঠিটা লেখার জন্য জুৎসই কোনো জায়গা খুঁজে না পেয়ে, সিঁড়ির গোড়ায় বসে তোমাকে লিখছি এখন, বুঝলে ক্যাপ্টেন?
... তোমার নতুন রুমটা দেখার তর সইছে না আমার। ভাবছি চিপস ও সিগারেট হাতে নিয়ে প্রথমবার যখন দেখব, কী আনন্দই না হবে! বাড়ি ফেরার পর আমাকে নিয়মিত ধূমপায়ী হতে দিও না প্লিজ, মিস পাওয়েল। হুম, তোমার আর ডটের আড্ডাবাজি আমি বেশ কল্পনা করতে পারছি। এটি তোমাকে ঘিরে আমার দুশ্চিন্তা খানিকটা হলেও কমিয়ে রাখছে। তোমাকে ভালোবাসি সিন, তোমাকে মিস-মিস-মিস করছি মিস পাওয়েল। হামবুর্গে আমাদের একসঙ্গে কাটানো মুহূর্তগুলো এখন খুব বেশি মনে পড়ছে। আসল ব্যাপার হলো, তোমার কাছ থেকে দূরে থাকতে পারি না আমি।
...ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না, এখন কী লিখব। কালকে তো কোনো চিঠি পাঠাতে পারব না; কী যে হবে! যাই হোক, এবার শুভদুপুর বলে বিদায় নিই, সিন; ভালোবাসি তোমাকে, হুম-হুম! তুমি কি আমাকে প্রাণবন্ত কিছু শব্দ লিখে পাঠাবে? খুব বেশি কিছু তো চাইনি! সোমবারের রাতটা শেষ হলো মাত্র। গতরাতে প্রায় তিন-চার ঘণ্টা পারফর্ম করেছি। আমার প্রায় মরার দশা, প্রিয়তমা; তুমি রাগ করো না, চিঠিটা শেষ করে একটা শান্তির ঘুম দিতে হচ্ছে বলে। যদিও তুমি নেই পাশে, তবু ঘুমটা ভালোই হবে: এ কথা শুনে তুমি আবার কষ্ট পেও না; জানোই তো, আমি ভীষণ-ভীষণ ক্লান্ত। ...তোমার জন্যই আজীবনের ভালোবাসা আমার। - ইতি, জন
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মিরসরাইয়ে ঝরনায় ডুবে প্রাণ গেল পর্যটকের
চট্টগ্রামের মিরসরাই ও সীতাকুণ্ড উপজেলার সীমান্তবর্তী রূপসী ঝরনার কূপে ডুবে এক পর্যটক মারা গেছেন। আজ রোববার দুপুরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত পর্যটকের নাম মো. আসিফ উদ্দিন (২৪)। তিনি চট্টগ্রাম নগরের সদরঘাট থানার পূর্ব মাদারবাড়ি কামাল গেট এলাকার মো. সরোয়ার কামালের ছেলে। নগরের ইসলামিয়া কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন আসিফ।
আসিফ উদ্দিনের বন্ধু নাফিজ আহমেদ বলেন, ‘আজ সকাল ৭টায় আমরা পাঁচ বন্ধু মিলে মিরসরাইয়ের রূপসী ঝরনা দেখতে এসেছিলাম। দুপুর ১২টার দিকে ঝরনার একটি কূপে গোসল করার সময় আসিফ পানিতে ডুবে যায়। খোঁজাখুঁজি করেও তাকে না পেয়ে আমরা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করি। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আসিফের লাশ উদ্ধার করেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের দলনেতা সাহ্লঞ মারমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর-৯৯৯ থেকে খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝরনার দ্বিতীয় ধাপের একটি কূপের গভীর থেকে ওই পর্যটকের লাশ উদ্ধার করেছি।’
স্থানীয় নিজামপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বেলা ২টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত পর্যটকের পরিবারের লোকজন মিরসরাইয়ে এসে পৌঁছেছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’