সৌরজগতের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরির সন্ধান, হচ্ছে অগ্ন্যুৎপাতও
Published: 11th, February 2025 GMT
বৃহস্পতি গ্রহের একাধিক চাঁদ রয়েছে, যার মধ্যে ‘আইও’ অন্যতম। বৃহস্পতি গ্রহের চতুর্থ বৃহত্তম চাঁদ হিসেবে পরিচিত আইওতে সন্ধান মিলেছে সৌরজগতের সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরির। শুধু তা–ই নয়, সম্প্রতি প্রচণ্ড এক বিস্ফোরণের পর আগ্নেয়গিরিটিতে অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার পাঠানো ‘জুনো’ মহাকাশযান বৃহস্পতি গ্রহের আইও চাঁদে অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনা শনাক্ত করেছে। মহাকাশযানটির পাঠানো তথ্য পর্যালোচনা করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কারণে আশপাশে প্রায় ৮০ ট্রিলিয়ন ওয়াটের তাপশক্তি উৎপন্ন হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। এই তাপশক্তি পৃথিবীর সব বিদ্যুৎকেন্দ্রের মোট শক্তি উৎপাদনের ক্ষমতার চেয়ে ছয় গুণ বেশি।
নাসার তথ্যমতে, জুনো মহাকাশযানের জোভিয়ান ইনফ্রারেড অরোরাল ম্যাপার (জির্যাম) যন্ত্রের মাধ্যমে নতুন এক আগ্নেয়গিরির সন্ধান পাওয়া গেছে। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের স্থানটি আকারে প্রায় ১ লাখ ৫ হাজার বর্গকিলোমিটার। আর তাই এটিকে আইও চাঁদের সবচেয়ে বড় আগ্নেয়গিরির কাঠামো বলে মনে করা হচ্ছে। জুনো মিশনের প্রধান তদন্তকারী ও সাউথওয়েস্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মহাকাশ পদার্থবিদ স্কট বোল্টন বলেন, এই আগ্নেয়গিরির ঘটনার তীব্রতা ছিল অপ্রত্যাশিত। জুনোর সর্বশেষ প্রদক্ষিণের তথ্য বলছে, এটি আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে শক্তিশালী আগ্নেয়গিরি।
আইও চাঁদে অগ্ন্যুৎপাতের বেশ কিছু ছবি তুলেছে জুনো। ছবিতে আইও চাঁদের বড় অংশই অন্ধকার দেখা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে, অগ্ন্যুৎপাতের ফলে লাভায় আচ্ছাদিত থাকায় চাঁদটির বড় অংশ অন্ধকারে ঢেকে গেছে। নতুন এই আবিষ্কার পৃথিবীর বাইরে থাকা আগ্নেয়গিরির কার্যকলাপ সম্পর্কে আরও বিস্তারিতভাবে জানতে সহায়তা করবে।
সূত্র: গ্যাজেটস৩৬০
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র সবচ
এছাড়াও পড়ুন:
সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহের প্রথম ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি
বৃহস্পতি গ্রহের চেয়ে ১০ গুণ বড় ‘ওয়াস্প-১৮ বি’ নামের দৈত্যকার একটি দূরবর্তী গ্যাসীয় গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে এবারই প্রথম সৌরজগতের বাইরে থাকা কোনো গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র তৈরি করা সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাঁরা।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, এই যুগান্তকারী মানচিত্র গ্রহ বিজ্ঞানের একটি বড় পদক্ষেপ। সূর্যের বাইরের অন্য কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করা গ্রহের ত্রিমাত্রিক মানচিত্র এর আগে তৈরি করা হয়নি। মানচিত্র তৈরির এ কৌশল ব্যবহার করে মহাবিশ্বে আবিষ্কৃত ছয় হাজারের বেশি বহির্গ্রহকে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।
বহির্গ্রহ নিয়ে বিজ্ঞানীদের আগ্রহ অনেক দিনের। সৌরজগতের বাইরের নানা ধরনের গ্রহ দেখা যায়। কিছু গ্রহ আছে যাদের দুষ্টু গ্রহ বলা হয়। এসব গ্রহ কোনো নক্ষত্রকে প্রদক্ষিণ করে না। মহাবিশ্বে অনেকটা স্বাধীনভাবে বা বন্ধনহীনভাবে ভেসে বেড়ায়। নাসার এক্সোপ্ল্যানেট সায়েন্স ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ২৮টি বহির্গ্রহ শনাক্ত করা হয়েছে। আরও প্রায় আট হাজার বহির্গ্রহ গ্রহের মর্যাদার পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে।
বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, থ্রিডি ইক্লিপস ম্যাপিং কৌশল ব্যবহার করে ত্রিমাত্রিক মানচিত্রটি তৈরি করেছেন। এই প্রক্রিয়া স্পেকট্রোস্কোপিক ইক্লিপস ম্যাপিং নামেও পরিচিত। এর আগে বিজ্ঞানীরা ২০২৩ সালে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করে বহির্গ্রহের টুডি বা দ্বিমাত্রিক মডেল তৈরি করেছিলেন। বিভিন্ন বহির্গ্রহ পৃথিবী থেকে পর্যবেক্ষণ করা বিজ্ঞানীদের জন্য কঠিন বলে নতুন ত্রিমাত্রিক মানচিত্র বেশ উপকারী হবে।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ২০০৯ সালে আবিষ্কৃত ওয়াস্প-১৮ বি গ্রহের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা ৫ হাজার ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত হতে পারে। গ্রহটির বায়ুমণ্ডলে জলীয়বাষ্পের উপস্থিত রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী রায়ান চ্যালেঞ্জার বলেন, ‘টেলিস্কোপ ও এই নতুন কৌশলটির মাধ্যমে আমরা আমাদের সৌরজগতের প্রতিবেশীদের মতোই বহির্গ্রহকে বোঝার সুযোগ পাব।’
সূত্র: স্পেস ডট কম