সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

হামাস শনিবার দুপুরের মধ্যে জিম্মিদের ফিরিয়ে না দিলে গাজায় যুদ্ধবিরতি বন্ধ করে তীব্র সামরিক অভিযান শুরু হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। খবর বিবিসির।

এ ঘটনায় হামাস জানিয়েছে, তারা অস্ত্রবিরতি চুক্তি মেনে চলতে প্রস্তুত এবং ইসরায়েলকেই যেকোনো জটিলতার জন্য দায়ী করা হবে।

নেতানিয়াহু বলেন, হামাসের ঘোষণার পরই ইসরায়েলি বাহিনী গাজার ভেতরে ও চারপাশে মোতায়েন করা হয়েছে এবং এই প্রস্তুতি খুব শিগগিরই সম্পন্ন হবে। যদি শনিবারের মধ্যে হামাস আমাদের জিম্মিদের ফেরত না দেয়, তাহলে অস্ত্রবিরতি শেষ হবে এবং হামাসের চূড়ান্ত পরাজয় না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চলবে।

তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, হামাস যদি শনিবারের জন্য নির্ধারিত তিনজন জিম্মিকে মুক্তি দেয়, তবে অস্ত্রবিরতি অব্যাহত থাকতে পারে।

তবে ইসরায়েলের পরিবহনমন্ত্রী মিরি রেগেভ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, আমরা স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছি— শনিবার সব জিম্মিদের মুক্তি না দেওয়া হলে, যুদ্ধ অব্যাহত থাকবে।

ফলে হামাস অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল অস্ত্রবিরতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করছে এবং মানবিক সহায়তা আটকে দিচ্ছে। তবে ইসরায়েল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও ইসরায়েলকে অস্ত্রবিরতি চুক্তি বাতিল করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, যদি শনিবারের মধ্যে সব জিম্মি মুক্তি না দেওয়া হয়, তাহলে যুদ্ধ শুরু হোক।

ঘটনার সূত্রপাত ট্রাম্পের নতুন ঘোষণার পরপরই। হামাস ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ট্রাম্পের গাজা দখলের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। ট্রাম্পের প্রস্তাবে বলা হয়, গাজায় মার্কিন প্রশাসন থাকবে এবং দুই মিলিয়ন ফিলিস্তিনিকে সরিয়ে সেখানে নতুন অবকাঠামো তৈরি করা হবে। হামাস এটিকে জাতিগত নির্মূলকরণের পরিকল্পনা বলে অভিহিত করেছে।

এদিকে চলমান অস্ত্রবিরতির প্রথম ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মির বিনিময়ে ১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। গত ১৯ জানুয়ারি অস্ত্রবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে ১৬ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, পাশাপাশি পাঁচজন থাই নাগরিককেও মুক্তি দিয়েছে হামাস। এখনও হামাসের কাছে ১৭ জন ইসরায়েলি জিম্মি রয়ে গেছে। তাদের মধ্যে আটজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, তবে একজনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে।

এনজে

.

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনে জোট গঠনে সতর্ক থাকার পরামর্শ হেফাজত আমিরের

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোট গঠনের ক্ষেত্রে সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী।

মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, আগামী নির্বাচনে এমন কোনো দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়ার চিন্তা করা যাবে না, যাদের ভ্রান্ত বিশ্বাস সম্পর্কে বুজুর্গানে দ্বীন ও পূর্বপুরুষেরা আগেই সতর্ক করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলন ২০২৫’–এ লিখিত বক্তব্যে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী এ কথা বলেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজত আমির শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও অসুস্থ থাকায় তিনি কথা বলেননি। তাঁর লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা তোফাজ্জল হক আজিজ।

ইসলামের মূলধারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, এমন কোনো সিদ্ধান্ত না নিতে দলগুলোকে অনুরোধ জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে হেফাজত আমির বলেন, সহিহ আকিদার সব ইসলামি দলকে এক হওয়ার জন্য আগেও তিনি আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর আহ্বানে সাড়া দেওয়ার মতো তেমন পরিবেশ এখনো তৈরি হয়নি। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।

শাহ মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী বলেন, একদিকে যেমন ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহর বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার ষড়যন্ত্র চলছে, অন্যদিকে তেমনি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে বহু রকম চক্রান্ত লক্ষ করা যাচ্ছে। গণ–অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা তিনি কল্পনাও করেননি।

অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোকে উদ্দেশ করে বাবুনগরী বলেন, ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের চুক্তি দেশের স্বাধীনতার অখণ্ডতার জন্য এবং ধর্মীয় কৃষ্টির জন্য এক অশনিসংকেত। এ চুক্তির তীব্র নিন্দা জানিয়ে তা বাতিল করার দাবিও জানান তিনি।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশী। দেশের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, সামনে কালো তুফান দেখা যাচ্ছে। কালো তুফানের সঙ্গে মোলাকাত নয়, মোকাবিলা করতে হবে। জনগণকে ওলামাদের নেতৃত্ব কবুল করতে হবে। তখনই তুফানকে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, যারা ফ্যাসিবাদী আমলে পাখা দিয়ে নৌকাকে বাতাস করেছে, তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য হবে না। জুলাই আন্দোলন ছিল ভোটের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য। সামনে নির্বাচন। সেই নির্বাচন বানচালের পাঁয়তারা শুরু হয়েছে। সেই পাঁয়তারা রুখে দিতে হবে।

হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ইসলামের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আলেমদের মতামত উপেক্ষা করলে হাসিনার মতো পরিণতি হবে।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক। এ সময় আরও বক্তব্য দেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আলেম এবং ওলামারা।

১৫ দফা প্রস্তাবনা

সম্মেলনে জমিয়তে উলামায়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১৫ দফা প্রস্তাবনা পেশ করা হয়। প্রস্তাবনা পাঠ করেন সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দিন জাকারিয়া।

১৫ দফার মধ্যে আছে—ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের চুক্তি বাতিল করা, জুলাই সনদের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা, জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বাতিল করা, ঘোষিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা; নির্বাচনে কালোটাকা ও পেশিশক্তির মহড়া বন্ধ করে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা; বিতর্কিত নারী কমিশনের সুপারিশ বাতিল ও শরিয়ার সীমারেখার আলোকে নারীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ