এএসপি কার্যালয় ও থানায় হামলা-ভাঙচুর
Published: 13th, February 2025 GMT
নিখোঁজ স্কুলছাত্রের সন্ধানের দাবিতে পূর্বঘোষিত মানববন্ধন শেষে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান থানা ও সহকারী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে শিক্ষার্থীরা।
গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় থানার দরজা ও জানালা, সিসি ক্যামেরা, ডিউটি অফিসারের কক্ষ, ডিএসবির অফিস কক্ষ, থানার ভেতরের আসবাব, পুলিশের গাড়িসহ পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। একই সময়ে থানার পাশে থাকা সহকারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ও ভাঙচুর করা হয়। পরে নিখোঁজ স্কুলছাত্র ও অটোরিকশাচালক রোমান শেখের (১৫) সন্ধানের দাবিতে তিন দিনের আলটিমেটাম দেয় মানববন্ধনকারীরা।
খবর পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেনাবাহিনী ও জেলা পুলিশ সুপার সিরাজদীখান থানা পরিদর্শন করেন। ঘটনার পর থেকে সিরাজদীখান থানা এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী সদস্যদের থানা প্রাঙ্গণে মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, বুধবার সকালে উপজেলার কোলা ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে উপজেলা মোড়ে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা অংশ নেয়। মানববন্ধন শেষে মিছিল নিয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা থানায় হামলা চালায়।
এ সময় সিরাজদীখান সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ও সিরাজদীখান থানার ওসির পুলিশভ্যান ও থানা কম্পাউন্ডের ভেতর থাকা তিনটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করা হয়। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা থানার ভেতর দরজা-জানালা ও আসবাব ভাঙচুর করে।
সিরাজদীখান সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আ ন ম ইমরান খান বলেন, মানববন্ধন শেষে হামলা চালানো হয়। এ সময় গাড়ি ও আসবাব ভাঙচুর করা হয়। নিখোঁজ ছাত্রের সন্ধানে মানববন্ধনকারীরা তিন দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে।
গত ২১ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে রোমান শেখ বেলতলী গঙ্গাপ্রসাদ জগন্নাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়। স্কুল থেকে বাসায় ফিরে দুপুর ১টার দিকে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়। এর পর থেকে রোমানের খোঁজ না পেয়ে ২৬ জানুয়ারি তার বাবা মিরাজ শেখ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। পরদিন সিয়াম ওরফে জিহাদ (১৯) ও মানিক শেখ রাসেলকে এবং ১ ফেব্রুয়ারি এপ্রিল হোসেনকে (৩৯) গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেপ্তার তিনজনকে মুন্সীগঞ্জ আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে এপ্রিল হোসেন জামিনে বের হন। নিখোঁজ রোমানের কোনো সন্ধান মিলেনি। ফলে এ নিয়ে রোমানের স্বজন, স্থানীয় গ্রামবাসী ও তার সহপাঠীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে সিরাজদীখান থানা ও সহকারী পুলিশ সুপার কার্যালয় ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা। রোমানের বাবা মিরাজ শেখ জানান, বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও রোমানের সন্ধান পাননি।
কোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম মিন্টু বলেন, রোমানের বাবা কাঠমিস্ত্রি। অভাবের সংসারে বাবাকে সহযোগিতা করতে পড়াশোনার পাশাপাশি অটোরিকশা চালাত রোমান।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে নারায়ণগঞ্জে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা। সমাবেশ শেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়।
বুধবার (৩০ জুলাই) সকাল ১১টায় নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত এই কর্মসুচিতে সিদ্ধিরগঞ্জের দেড় শতাধিক কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অংশ নেয়। শিক্ষার্থীদের হাতে " প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা ২০২৫ এ বৈষম্য কেন? শিক্ষা উপদেষ্টা জবাব চাই" সহ বিভিন্ন স্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড শোভা পায়।
সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সভাপতি মজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা বিল্লাল হোসেন রবিন, ঢাকা কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের সভাপতি জি এইচ ফারুক, বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন পরিচালক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো: সামসুজ্জামান, প্রধান সমন্বয়ক মো: সাইফুল ইসলাম রুবেল, মহাসচিব মো: সাখাওয়াত হোসেন খান, সিদ্ধিরগঞ্জ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেন ঢালী, শিক্ষক কাওসার আহমেদ, এসএম বিজয়, আল মামুন , তরিকুল ইসলাম, বাহাউদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, গত ১৭ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের জারি করা প্রজ্ঞাপনে শুধুমাত্র সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ রাখা হয়েছে। এতে দীর্ঘদিন ধরে এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বেসরকারি, কিন্ডারগার্টেন ও এমপিও-বহির্ভূত বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত ও হতাশ হয়েছে।
বক্তারা আরও বলেন, “আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যৎ। অথচ কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত কোমলমতি শিশুদের বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে তাদের মৌলিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে।”
তারা বলেন, দেশের প্রায় ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেনে প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে, যাদের একটি বড় অংশ দীর্ঘ প্রস্তুতি নিয়ে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আশায় এগিয়ে এসেছে। এখন এই সিদ্ধান্ত তাদের স্বপ্ন ও শ্রমের প্রতি অবিচার।
বক্তারা অভিযোগ করেন, সরকার বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা গড়ার অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে এই প্রজ্ঞাপন সেই প্রতিশ্রুতির পরিপন্থী। তারা প্রশ্ন তোলেন, “ই আই আই এন নম্বরধারী নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যদি এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া সম্ভব হয়, তবে কেন নিবন্ধিত কিন্ডারগার্টেন শিক্ষার্থীরা বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না?”
বক্তারা আরও বলেন ইতোমধ্যেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অভিভাবক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও স্মারকলিপি প্রদানের মাধ্যমে এই বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।
সমাবেশ থেকে অবিলম্বে প্রজ্ঞাপন বাতিল করে সরকারি ও বেসরকারি সব প্রাথমিক শিক্ষার্থীর জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়। অন্যথায় কঠোর আন্দোলন গড়ে তোরা হবে।
মানববন্ধন ও সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন, ১নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি নেজাম উদ্দিন শাহীন, ২নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি জাকির উল্লাহ সুজুন, ৩নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: আজহারুল ইসলাম, ৫নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: শামীম, ৬নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: জাবের হোসেন, ৮নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি মো: আল আমিন, ১০ নং ওয়ার্ড প্রতিনিধি এড: মো: খোরশেদ আলম প্রমুখ।