নিখোঁজ স্কুলছাত্রের সন্ধানের দাবিতে পূর্বঘোষিত মানববন্ধন শেষে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখান থানা ও সহকারী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে শিক্ষার্থীরা।

গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় থানার দরজা ও জানালা, সিসি ক্যামেরা, ডিউটি অফিসারের কক্ষ, ডিএসবির অফিস কক্ষ, থানার ভেতরের আসবাব, পুলিশের গাড়িসহ পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। একই সময়ে থানার পাশে থাকা সহকারী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ও ভাঙচুর করা হয়। পরে নিখোঁজ স্কুলছাত্র ও অটোরিকশাচালক রোমান শেখের (১৫) সন্ধানের দাবিতে তিন দিনের আলটিমেটাম দেয় মানববন্ধনকারীরা।

খবর পেয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেনাবাহিনী ও জেলা পুলিশ সুপার সিরাজদীখান থানা পরিদর্শন করেন। ঘটনার পর থেকে সিরাজদীখান থানা এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী সদস্যদের থানা প্রাঙ্গণে মোতায়েন করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র ও পুলিশ জানায়, বুধবার সকালে উপজেলার কোলা ইউনিয়নের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে উপজেলা মোড়ে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা অংশ নেয়। মানববন্ধন শেষে মিছিল নিয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা থানায় হামলা চালায়।

এ সময় সিরাজদীখান সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ও সিরাজদীখান থানার ওসির পুলিশভ্যান ও থানা কম্পাউন্ডের ভেতর থাকা তিনটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করা হয়। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা থানার ভেতর দরজা-জানালা ও আসবাব ভাঙচুর করে। 

সিরাজদীখান সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আ ন ম ইমরান খান বলেন, মানববন্ধন শেষে হামলা চালানো হয়। এ সময় গাড়ি ও আসবাব ভাঙচুর করা হয়। নিখোঁজ ছাত্রের সন্ধানে মানববন্ধনকারীরা তিন দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে।

গত ২১ জানুয়ারি সকাল ১০টার দিকে রোমান শেখ বেলতলী গঙ্গাপ্রসাদ জগন্নাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়। স্কুল থেকে বাসায় ফিরে দুপুর ১টার দিকে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়। এর পর থেকে রোমানের খোঁজ না পেয়ে ২৬ জানুয়ারি তার বাবা মিরাজ শেখ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তিনজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। পরদিন সিয়াম ওরফে জিহাদ (১৯) ও মানিক শেখ রাসেলকে এবং ১ ফেব্রুয়ারি এপ্রিল হোসেনকে (৩৯) গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেপ্তার তিনজনকে মুন্সীগঞ্জ আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে এপ্রিল হোসেন জামিনে বের হন। নিখোঁজ রোমানের কোনো সন্ধান মিলেনি। ফলে এ নিয়ে রোমানের স্বজন, স্থানীয় গ্রামবাসী ও তার সহপাঠীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে সিরাজদীখান থানা ও সহকারী পুলিশ সুপার কার্যালয় ভাঙচুর করে বিক্ষোভকারীরা। রোমানের বাবা মিরাজ শেখ জানান, বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও রোমানের সন্ধান পাননি।

কোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম মিন্টু বলেন, রোমানের বাবা কাঠমিস্ত্রি। অভাবের সংসারে বাবাকে সহযোগিতা করতে পড়াশোনার পাশাপাশি অটোরিকশা চালাত রোমান। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে ‍শিবচর থানায় মামলাটি করেন।

এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।

মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রস্তাবিত কাঠামোয় বিশ্ববিদ্যালয় চান না সাত কলেজের শিক্ষকেরা
  • দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের
  • বন কর্মকর্তার ১৭ বিয়ে: আদালতে মামলা, তদন্তে পিবিআই
  • শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
  • সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান পরিবর্তনের দাবিতে ৫টি পরিবেশবাদী সংগঠনের মানববন্ধন
  • ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
  • কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাঁর মাকে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধন