পঞ্চগড়ে হাসপাতালে চিকিৎসক নিয়োগসহ পাঁচ দাবিতে নাগরিক কমিটির মানববন্ধন
Published: 13th, February 2025 GMT
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ, সদর হাসপাতালের নবনির্মিত ভবন চালুসহ পাঁচ দফা দাবিতে পঞ্চগড়ে মানববন্ধন করেছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতা-কর্মীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে পঞ্চগড়-ঢাকা মহাসড়কে এক পাশে দাঁড়িয়ে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ের অন্যতম সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী, জাতীয় নাগরিক কমিটির পঞ্চগড় সদর উপজেলার প্রতিনিধি সদস্য তানবিরুল বারী, বায়েজিদ বোস্তামী, বোদা উপজেলা শাখার প্রতিনিধি সদস্য শিশির আসাদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের মানুষ চিকিৎসকের অভাবে পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত। পঞ্চগড়ের ১২ লাখ মানুষকে স্বাস্থ্যসেবায় পিছিয়ে রেখে দেশের উন্নয়ন ও সংস্কার সম্ভব নয়। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ৩৭ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ১১ জন। এ ছাড়া জেলার অন্য চারটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮৪ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ২৬ জন। এতে পঞ্চগড়ের মানুষ চিকিৎসাসেবায় বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
বক্তারা আরও বলেন, পঞ্চগড়ের মানুষ হৃদ্রোগ, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণসহ ছোটখাটো দুর্ঘটনায় পড়লে হাসপাতালে যাওয়ামাত্রই রংপুর বা দিনাজপুরে পাঠানো হয়। এতে অনেক রোগীই পথে মারা যাচ্ছেন। টাকাপয়সার অভাবে অনেক রোগী বাইরে যেতে না পারায় ধুঁকে ধুঁকে মরছে। জেলা শহরের ১০০ শয্যার হাসপাতালটি ২৫০ শয্যায় উন্নীত করতে একটি নতুন ভবন নির্মাণ করা হলেও অজ্ঞাত কারণে সেটি চালু হচ্ছে না। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাঁদের দাবি পূরণ না হলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
মানববন্ধনে জেলার বিভিন্ন উপজেলার জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধি সদস্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মী ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চামড়াশিল্প ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে
কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আমলের পুরোনো চক্র ও সিন্ডিকেট সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলন। এই সিন্ডিকেট ও চামড়াশিল্প ধ্বংসের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সংগঠনটি আয়োজিত ‘চামড়া শিল্পের নৈরাজ্য ও সিন্ডিকেট রুখো’ শীর্ষক মানববন্ধনে এসব কথা বলা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক মির্জা শরিফুল আলম। সভায় বক্তব্য দেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান, কলামিস্ট মীর আবদুল আলীম, রাজনীতিবিদ নুরুজ্জামান হীরা, মানবাধিকারকর্মী আব্দুল্লাহ আল-মামুন প্রমুখ।
কয়েক বছর ধরে কাঁচাচামড়ার দাম কমছে। দাম না পেয়ে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া নদী বা খালে ফেলে দিয়েছেন কিংবা মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন– এমন ঘটনাও ঘটছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। চলতি বছর ৮৫ থেকে ৯০ লাখ পশুর চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ট্যানারি মালিকদের। এর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সংগ্রহ হয় কোরবানির সময়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার রক্ষা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান বলেন, এবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও বিক্রি হয়েছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। কিছু ক্ষেত্রে বর্গফুটের হিসাবে চামড়ার দাম আরও কম পড়েছে। কোরবানিদাতাদের থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকায় গরুর চামড়া কিনেছেন। সেসব চামড়া আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করেছেন ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে চামড়া সংগ্রহ করলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না। সিন্ডিকেটের কারণে চামড়ার দাম পড়ে গেছে তলানিতে।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও বেশির ভাগ ছাগলের চামড়া নষ্ট হয়েছে। বিদেশি চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের ফ্যাসিস্ট সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। দেশে ও বিশ্ববাজারে চামড়াজাত পণ্যের দাম আকাশচুম্বী। অথচ কোরবানির চামড়া শিল্প নিয়ে গভীর চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির পাশাপাশি প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, বিদেশি চক্রান্তে দেশের সোনালি আঁশখ্যাত পাট শিল্পকে সুকৌশলে ধ্বংস করা হয়েছে। এবার আরেক সম্ভাবনাময় চামড়া শিল্পকে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রে পা দিয়ে অসাধু ট্যানারি মালিকদের সিন্ডিকেট কৌশলে চামড়ার দাম কমিয়ে লাভবান হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের চামড়া শিল্প। গত বছরের মতো এবারও কম দামে সব ধরনের চামড়া বিক্রি করতে হয়েছে। এতে করে গরিব-অসহায় মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। সিন্ডিকেটকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।