দ্বন্দ্বের জেরে ফটকে তালা, রাজশাহীতে পৌনে চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ এইচএসটিটিআইয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তারা
Published: 13th, February 2025 GMT
রাজশাহীতে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের (এইচএসটিটিআই) শিক্ষক-কর্মকর্তারা আজ বৃহস্পতিবার পৌনে চার ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন। প্রতিষ্ঠানের ফটকে পাশের টিচার্স ট্রেনিং (টিটি) কলেজের শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। এইচএসটিটিআই ফটকের সামনে একটা চত্বর বানানোকে কেন্দ্র করে ওই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে পৌনে চার ঘণ্টা পর রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সচিবসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান ঘটনাস্থলে যান। তাঁদের মধ্যস্থতায় বিকেল পৌনে চারটায় শিক্ষার্থীরা তালা খুলে দেন।
এইচএসটিটিআই সূত্রে জানা গেছে, এইচএসটিটিআইয়ের শিক্ষার্থীদের সমাবেশ করানোর আলাদা মাঠ নেই। তাদের কার্যালয় ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের সমাবেশ করানো হয়। জায়গাটি নিচু। বর্ষার সময় পানি জমে। এ জন্য শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে জায়গাটি পাকা করে উঁচু করার কাজ শুরু করা হয়েছিল; কিন্তু সেখানে উঁচু করলে টিটি কলেজের সামনে জলাবদ্ধতা তৈরি হবে অভিযোগ তুলে আজ মিস্ত্রিদের কাজ করতে নিষেধ করে টিটি কলেজের কর্মচারীরা। পরে টিটি কলেজের শিক্ষকেরা এসে কাজ করতে নিষেধ করেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে টিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা এসে এইচএসটিটিআইর ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। টিটি কলেজের ফটক দিয়ে এইচএসটিটিআইয়ে ঢুকতে হয়। ওই ফটকেও শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দিলে তাঁরা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
শিক্ষার্থীরা হ্যান্ডমাইকে ঘোষণা দেন, এইচএসটিটিআইয়ের অধ্যক্ষ মো.
দুপুর ১২টার পর শিক্ষার্থীরা তিন কর্মকর্তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান এবং তাঁদের অপসারণেরও দাবি জানান। এ নিয়ে তাঁরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় নগরের রাজপাড়া থানা-পুলিশ। কিন্তু ফটকে তালা দেওয়া থাকায় তাঁরা ভেতরে ঢুকতে পারছিলেন না। পুলিশ দেখে শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষুব্ধ হন। খবর পেয়ে রাজশাহী কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. ইব্রাহিম আলী, কামরুজ্জামান সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ ইলিয়াস উদ্দিন, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের সচিব শামীম আরা চৌধুরী, রাজশাহী মাউশির সহকারী পরিচালক আব্দুর রহিম ঘটনাস্থলে যান। সেখানে সবার উপস্থিতিতে এইচএসটিটিআইয়ের পক্ষ থেকে উপপরিচালক নাসিমা খাতুন ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। এরপরে তালা খুলে দেন শিক্ষার্থীরা।
টিটি কলেজের অধ্যক্ষ মো. শওকত আলী খান বলেন, একটা ঘটনা ঘটেছিল। তারা পরস্পরের মধ্যে আলোচনা করে মিটিয়ে ফেলেছেন। ওই জায়গা যেভাবে উঁচু করা হচ্ছে, সেভাবে করলে টিটি কলেজের ফটকের সামনে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে। কাজটা সমন্বয় করে করা দরকার ছিল। তাঁরা সেটি করেননি। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এসেছিলেন। তিনি বিষয়টি বুঝেছেন। তিনি বলেন, তাঁদের সম্মান শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন। টিটি কলেজের মাঠে ইচ্ছা করলে এইচএসটিটিআইর শিক্ষার্থীদের পিটি করানো যায়।
এইচএসটিটিআইর অধ্যক্ষ মো. ওয়াহেদুল কবির সুহার্দী বলেন, দুটিই সরকারি প্রতিষ্ঠান। তারা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে দিয়ে প্রাক্কলন করে কাজটি করাতে শুরু করেছিলেন। কাজের কারণে টিটি কলেজের কোনো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তিনি বলেন, কাউকে ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। শিক্ষার্থীদের এই দাবি সঠিক নয়। টিটি কলেজের একজন শিক্ষক তাঁদের দিকে ছুটে আসছিলেন। তাঁদের একজন শিক্ষক মাঝখানে দাঁড়িয়ে তাঁকে ঠেকিয়েছেন। এর বেশি কিছু হয়নি। ভুল–বোঝাবুঝি এড়াতে সবার পক্ষ থেকে উপপরিচালক নাসিমা খাতুন দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কল জ র শ ক ষ র স মন র ফটক
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্গাপূজায় অরাজকতা রোধে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান মহিলা পরিষদের
প্রতিবছর বাঙালি হিন্দুদের সর্বজনীন দুর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে নানা সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটে। আসন্ন দুর্গাপূজায় যেন কোনো ধরনের অরাজকতা না ঘটে, সে জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন থেকে এ আহ্বান জানানো হয়। ‘বৈচিত্র্যকে সম্মান করি, সাম্প্রদায়িকতা পরিহার করি, সম্প্রীতি বজায় রাখি’ শিরোনামে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মহিলা পরিষদের উদ্যোগে ঢাকার পাশাপাশি দেশের সব জেলায় একযোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ফওজিয়া মোসলেমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, সহসভাপতি মাখদুমা নার্গিস, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদা রেহানা বেগম, আন্দোলন উপপরিষদ সম্পাদক রাবেয়া খাতুন, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও আন্দোলন উপপরিষদ সদস্য বহ্নিশিখা দাশ পুরকায়স্থ বক্তব্য দেন। মহিলা পরিষদের প্রোগ্রাম অফিসার নুরুননাহার তানিয়া মানববন্ধন সঞ্চালনা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে ফওজিয়া মোসলেম বলেন, ‘আমাদের সংবিধানে নারী-পুরুষনির্বিশেষে সবার জন্য সমতা, ন্যায়বিচার নিশ্চিতের মাধ্যমে মর্যাদাকে সর্বাগ্রে স্থান দেওয়া হয়েছে। এ দেশে নানা জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও সংস্কৃতির লোকের বসবাস। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতে রাষ্ট্রের পাশাপাশি মানবাধিকার সংগঠন ও সুশীল সমাজকে নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব নিতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভূমিকা আরও কার্যকর হওয়া আবশ্যক। রাষ্ট্রকাঠামো এমন হওয়া উচিত, যাতে সবাই মিলে নিজ নিজ উৎসব নির্বিঘ্নে পালন করতে পারে।’