সীমান্তজুড়ে বিএসএফের বাড়তি নজরদারি, আতঙ্ক
Published: 13th, February 2025 GMT
কুড়িগ্রাম সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডে নিয়ম লঙ্ঘন করে বসানো সিসিটিভি ক্যামেরা সরালেও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাড়িয়েছে নজরদারি। ঘন ঘন টহলের পাশাপাশি বিএসএফ জওয়ানের সংখ্যাও দেখা গেছে বেশি। এতে সীমান্তঘেঁষা জমিতে কাজ করতে যেতে আতঙ্ক বোধ করছেন বাংলাদেশের কৃষকরা।
এর আগে ৯ ফেব্রুয়ারি রাত ২টার দিকে জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দক্ষিণ বাঁশজানি গ্রামে আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার ৯৭৮-এর ৯-এস সাব পিলারের কাছের একটি গাছে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করে বিএসএফ। এটি একটি পুরোনো মসজিদের দিকে ঘোরানো ছিল। ব্রিটিশ আমল থেকেই যেখানে ভারত-বাংলাদেশের বাসিন্দারা একসঙ্গে নামাজ আদায় করেন।
এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়ালে গত মঙ্গলবার পতাকা বৈঠক করে বিএসএফ-বিজিবি। আলোচনার পর বিএসএফ রাত সাড়ে ১১টার দিকে ক্যামেরাটি সরায়। তবে পরদিন সকাল থেকেই কুড়িগ্রামের সঙ্গে ২৭৮ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে বিশেষ নজরদারি শুরু করে বিএসএফ। অবশ্য নদীপথের ৪০ কিলোমিটারে স্বাভাবিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় দেখা যায়।
বুধবার সরেজমিন জেলার সীমান্ত এলাকায় দেখা যায়, ফুলবাড়ী, ভূরুঙ্গামারী ও নাগেশ্বরী অংশে ভারতের কাঁটাতারের বেড়ার কাছে বাড়তি বিএসএফ সদস্য। নদীপথে নৌকায় চলছে টহল। ভূরুঙ্গামারীর সোনাহাট ও রৌমারীর তুরা স্থলবন্দরেও চলছে বিশেষ তল্লাশি। ফুলবাড়ীর শিমুলবাড়ি এলাকায় কৃষকদের পড়তে হয় নানা প্রশ্নের মুখে। এ ছাড়া নাগেশ্বরীর নারায়ণপুর চরে কাঁটাতারের বেড়া না থাকায় স্থানীয়রা আছেন আতঙ্কে।
ভূরুঙ্গামারীতে ঝাকুয়াটারি নামে যে মসজিদ এলাকায় ক্যামেরা বসানো নিয়ে ঘটনার শুরু, সেখানে মুসল্লিদের চলাফেরায় নজরদারি ও কড়াকড়ি আরোপ করছে বিএসএফ। মসজিদের মুয়াজ্জিন আলমগীর হোসেন বলেন, লোকজন আতঙ্কিত। ক্যামেরা সরালেও বিএসএফ পাহারা দিচ্ছে।
স্থানীয় খোকন আলী বলেন, ‘ক্যামেরা সরানোর পর হামরা খুশি হইছি। কিন্তু সকাল থাকি যেভাবে জওয়ানরা পায়চারি করতেছে মনে হচ্ছে, তারা ঝগড়া করার জন্য রেডি হয়া আছে।’ কুড়িগ্রামে ২২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান জানান, জেলাজুড়ে ৩৭টি বিওপি ক্যাম্পে টহল জোরদার করেছে বিজিবি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: নজরদ র ব এসএফ আতঙ ক
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁয় ১০ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ
নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্ত দিয়ে ১০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভোরে ধামইরহাট উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন সীমান্ত পিলার ২৫৬/৭ এস কাছ দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হলে বিজিবির সদস্যরা তাদেরকে আটক করেন। তাদের মধ্যে দুজন পুরুষ এবং আটজন নারী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন পত্নীতলা ১৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।
আরো পড়ুন:
গাংনী সীমান্ত দিয়ে ১৮ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ
বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে ১০ রোহিঙ্গাকে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ
আটকরা হলেন—আছমা বেগম (৪০), খাদিজা বেগম (৩৪), পাখি বেগম (২৪), রুমা বেগম (২৫), কাকলি আক্তার (২৭), রুজিনা আক্তার (৩৩), কোহিনুর বেগম (২৬), নাসরিন বেগম (৩৩), মঞ্জুরুল ইসলাম (৩৬), সুমন হোসেন (২৭)। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের নাগরিক।
বিজিবি জানিয়েছে, আগ্রাদ্বিগুন বিওপির টহল কমান্ডার জেসিও সুবেদার মো. জিহাদ আলীর নেতৃত্বে একটি টহল দল সীমান্তের শূন্য লাইন থেকে আনুমানিক এক কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মহেষপুরে ওই ১০ জনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে ভারতে যান। মুম্বাই শহরে পুরুষ দুজন রাজমিস্ত্রি হিসেবে এবং নারী আটজন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। সেখানে তাদেরকে আটক করে ভারতীয় পুলিশ। গত ২৯ জুলাই ভারতের হরিবংশীপুর বিএসএফ ক্যাম্পে তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে বিএসএফ ওই ১০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিলে বিজিবি টহল দল তাদের আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা/সাজু/রফিক