বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় আগামী ছয় মাসের জন্য আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।

কমিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ রানাকে আহ্বায়ক ও ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত হাসান সাকিবকে সদস্যসচিব করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেল স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়।

কমিটিতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে আছেন ৩ জন। যুগ্ম আহ্বায়ক ১০ জন। সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ১ জন। যুগ্ম সদস্য সচিব ৬ জন। সিনিয়র মুখ্য সংগঠক ১ জন। সংগঠক ৬ জন। সহমুখপাত্র ১ জন। সদস্য হিসেবে আছেন ১৯ জন।

কমিটিতে মুখ্য সংগঠক হিসেবে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মাহিন। মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন প্রাণ রসায়ন ও অণুপ্রাণ বিভাগের শিক্ষার্থী নওশীন নাওয়ার জয়া। উপদেষ্টা সদস্য হিসেবে আছেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো.

নুর নবী।

কমিটির আহ্বায়ক মাসুদ রানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা ও বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা গড়তে জুলাইয়ের গণ-আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আগামীর সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করব।’

কমিটির সদস্যসচিব সিফাত হাসান সাকিব প্রথম আলোকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি সর্বজনীন সংগঠন। সাম্য ও ন্যায়ের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ গঠনে তাঁরা একসঙ্গে কাজ করে যাবেন। একই সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সংকট নিরসনে শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাঁরা কাজ করবেন।

কমিটির মুখপাত্র নওশীন নাওয়ার জয়া প্রথম আলোকে বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এখন শুধু একটি মঞ্চ নয়, বরং নতুন প্রজন্মের আশা আর বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার স্বপ্ন। যাঁরা নানা কারণে সরাসরি কমিটিতে যুক্ত হতে পারেননি, তাঁদের অবদানও অনস্বীকার্য। প্রত্যেকের সমর্থন, অংশগ্রহণ আর ঐক্যই তাঁদের শক্তি। জুলাই বিপ্লবের আদর্শকে ধারণ করে তাঁরা একসঙ্গে কাজ করবেন একটি নতুন, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়তে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব কম ট ত সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ