বাংলাদেশে ঢুকে কৃষকদের মারধর, বিএসএফের দুঃখ প্রকাশ
Published: 15th, February 2025 GMT
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষ্ণানন্দ বকশী সীমান্তে শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে পাঁচ কৃষককে মারধর করার বিষয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষা বাহিনী (বিএসএফ)।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার বারোমাসিয়া নদীর তীরে গোরুকমন্ডল সীমান্তে নামাটারী আব্দুল্লার বাড়ির উঠানে দুই দেশের মধ্যে পতাকা বৈঠকে বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করে।
পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাহ্ মো.
আরো পড়ুন:
কুড়িগ্রাম সীমান্তে লাগানো সিসি ক্যামেরা সরালো বিএসএফ
কুড়িগ্রাম সীমান্তে সিসি ক্যামেরা খুলে নিতে রাজি বিএসএফ
স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার ভারতের ১৩৮ নারায়নগঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা গোড়কমন্ডল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের ভেতরে অনুপ্রবেশ করে। এ সময় ভুট্টা ক্ষেতে কাজ করা বাংলাদেশিরা কৃষকরা তাদের বাধা দিলে মারধর করে। মারধরে পাঁচ বাংলাদেশি আহত হয়েছে। তাদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আহত বাংলাদেশিরা হলেন, কৃষ্ণানন্দ বকসী গ্রামের ইসরাইল হোসেনের ছেলে মো. শামসুল, খোকা মিয়ার ছেলে জাবেদ আলী, আবুল কাশেমের ছেলে তাজুল ইসলাম, মুকুল মিয়ার ছেলে মো. রিপন ও মো. মান্নানের ছেলে কাশেম আলী।
মারধরের শিকার তাজুল ইসলাম বলেন, ‘‘ভারতের পাঁচ জওয়ান শূন্যরেখা পার হয়ে গ্রামে ঢুকে পড়ে। আমি জমিতে কাজ করছি। তারা বলেন— এখানে থাকা যাবে না, তোমরা চলে যাও। আমি বলি, আমার জমিতে আমি কাজ করবো না কেন, আপনারা আপনাদের দেশে চলে যান। এরপর বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে তারা আমার শার্টের কলার ধরে মারধর করে।’’
স্থানীয় বাসিন্দা কাশেম আলী বলেন, ‘‘দুপুরে ভারতের জওয়ানরা বাংলাদেশের ভিতরে আসলে আমরা বাধা দেই। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের মারধর করে।’’ আরেক বাসিন্দা খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘‘বিএসএফেরা সদস্যরা স্থানীয়দের মারধর করলে আমরা গ্রামবাসী একজোট হয়ে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।’’
গোরকমন্ডল বিওপি ক্যাম্পের হাবিলদার দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘গ্রামবাসীদের সঙ্গে বিএসএফের মারধরের ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। আমরা গতকাল থেকে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করছি।’’
এ বিষয়ে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহ্ মো. শাকিল আলম বলেন, ‘‘আমরা আজ শনিবার দুপুরে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি প্রতিবাদ জানালে বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করে। ভবিষতে এমনটা ঘটবে না বলেও জানিয়েছেন তারা।’’
ঢাকা/সৈকত/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসএফ র ম রধর ব এসএফ
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ