বাংলাদেশে গণ–আন্দোলনের মুখে ক্রমে কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠা সরকারের পতনের ছয় মাস পরেও সাংবাদিকেরা তাঁদের কাজের জন্য হুমকি ও হামলার শিকার হচ্ছেন। একই সঙ্গে খসড়া পর্যায়ে থাকা দুটি অধ্যাদেশ আইনে পরিণত হলে তা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষায় কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টসের (সিপিজে) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আজ সোমবার প্রতিবেদনটি সিপিজের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি দায়িত্ব পালনের জন্য সংবাদিকদের মারধর, হয়রানি ও ফৌজদারি তদন্তের মুখে পড়তে হয়েছে। এর মধ্যে ৩ ফেব্রুয়ারি শরীয়তপুরে একটি হাসপাতালে চিকিৎসায় অবহেলা নিয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে হামলার শিকার হন চার সাংবাদিক। সেদিনই লক্ষ্মীপুরে জমিসংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়ার পথে চার সংবাদিকের ওপর হামলা চালানো হয়।

সম্প্রতি সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ তথ্যচিত্র নির্মাতা সাইফুর রহমান সিপিজেকে জানিয়েছেন, গত ৩০ জানুয়ারি একটি নিবন্ধ প্রকাশের পর ই–মেইল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুমকি পাচ্ছেন তিনি।

এ ছাড়া ‘বেআইনি ব্যবসায়িক চর্চা এবং শ্রম অধিকার লঙ্ঘনের’ অভিযোগ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় ফৌজদারি মামলার মুখোমুখি হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন চারজন সাংবাদিক। তাঁদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করা হয়েছে। এ অভিযোগ মামলা হিসেবে আমলে নিয়ে বিচার হলে এবং তাতে দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁদের দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে।

সিপিজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জানুয়ারিতে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫–এর খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। এই দুটি খসড়া নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। যদিও সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের হালনাগাদ করা খসড়ায় মানহানি ও পরোয়ানা ছাড়া তল্লাশিসংশ্লিষ্ট ধারাগুলো বাদ দেওয়া হয়েছে। তার পরেও অধ্যাদেশের কয়েকটি বিধান সাংবাদিকদের লক্ষ করে ব্যবহার করা হতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন গোষ্ঠী।

এ নিয়ে সিপিজের এশিয়া প্রোগ্রামের সমন্বয়ক বেহ লিহ ই বলেন, সাংবাদিক এবং তাঁদের স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশের অধিকারের যে প্রতিশ্রুতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দিয়েছে, তা অবশ্যই পূরণ করতে হবে। প্রস্তাবিত যেসব আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করতে পারে সেগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সংশোধন করতে হবে। গণমাধ্যমের ওপর হামলার পেছনের অপরাধীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। ‘শক্তিশালী সাংবাদিকতা ছাড়া গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারে না,’ বলে উল্লেখ করেন বেহ লিহ।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ভোট ম্যানুয়ালি গণনার আবেদন করলেন উমামা ফাতেমা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোট ম্যানুয়ালি (হাতে) গণনা করার আবেদন করেছেন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সহসভাপতি (ভিপি) প্রার্থী উমামা ফাতেমা। সোমবার প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন তিনি।

আবেদনে উমামা ফাতেমা লিখেছেন, ‘আমরা স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের পক্ষ থেকে সদ্য অনুষ্ঠিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন এবং হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫–এর নির্বাচনকেন্দ্রিক স্বচ্ছতা যাচাইকরণের উদ্দেশ্যে প্রতিটি কেন্দ্রের ভোটদাতাদের তালিকার কপি, ওএমআর মেশিনের পরিবর্তে ম্যানুয়ালি পুনরায় ভোট গণনা এবং ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের প্রবেশের সিসিটিভি ফুটেজ শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করার অনুরোধ করছি।’

৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। ওই দিন নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা চলার মধ্যে রাত সোয়া তিনটার পর ফেসবুকে এক পোস্টে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন উমামা ফাতেমা।

ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে জয়ী হন ছাত্রশিবির–সমর্থিত প্যানেল ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের সাদিক কায়েম। তিনি পেয়েছিলেন ১৪ হাজার ৪২ ভোট। অন্যদিকে ৩ হাজার ৩৮৯ ভোট পেয়ে চতুর্থ হন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের উমামা ফাতেমা।

আরও পড়ুনডাকসুর ২৮ পদে কার সঙ্গে কার প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলো, জয়ের ব্যবধান কত১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫)
  • জানুয়ারি থেকে বিশেষ বৃত্তি পাবেন জবি শিক্ষার্থীরা
  • যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনে রাশিয়া-বেলারুশ সামরিক মহড়ায় কেন অংশ নিল ভারত
  • তদন্ত করে ভুয়া নাম বাদ দিন
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫)
  • পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটে ৫৪ পদের চাকরি, করুন আবেদন
  • বাংলাদেশে সফরের সূচি জানিয়ে দিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫)
  • রাশিয়া-বেলারুশের সামরিক মহড়া চলছিল, ‘অবাক করে দিয়ে’ হাজির মার্কিন কর্মকর্তারা
  • ভোট ম্যানুয়ালি গণনার আবেদন করলেন উমামা ফাতেমা