বড় ধরনের প্রবৃদ্ধিসহ রেকর্ড নিট মুনাফা এবং লভ্যাংশ ঘোষণার পরও মোবাইল অপারেটর কোম্পানি রবির শেয়ারদর না বেড়ে উল্টো কমেছে। অন্যদিকে রুগ্‌ণ ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড এবং বন্ধ থাকা এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিল কোম্পানির দর সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দরে কেনাবেচা হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) রবির শেয়ারদর ১০ পয়সা কমে সর্বশেষ ২৯ টাকা ৩০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছে। সাড়ে ৩২ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে ছিল লেনদেন তালিকার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অবস্থানে। অন্যদিকে পৌনে ১০ শতাংশ দর বেড়ে ওয়েস্টার্ন মেরিনের শেয়ার সর্বশেষ ১০ টাকা ১০ পয়সায় এবং এস আলম কোল্ড রোল্ড স্টিলের দর সাড়ে ৯ শতাংশ বেড়ে ১২ টাকা ৮০ পয়সায় কেনাবেচা হয়েছে।

লেনদেন পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সকাল ১০টায় সোমবারের তুলনায় ১ টাকা ৪০ পয়সা বেড়ে ৩০ টাকা ৮০ পয়সায় রবির শেয়ার কেনাবেচা শুরু হয়, যা ছিল সোমবারের তুলনায় পৌনে ৫ শতাংশ বেশি। লেনদেনের প্রথম ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর্যন্ত বিক্রির চাপের তুলনায় ক্রেতাদের আগ্রহও বেশি ছিল। তবে শুরুর ওই দরে আর ফেরেনি শেয়ারটি। বরং লেনদেন সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিক্রির চাপ বৃদ্ধি পেলে দর কমতে থাকে। লেনদেনের দ্বিতীয়ার্ধে  ছোট ছোট অঙ্কের শেয়ার ক্রয় বেশি হলেও তুলনামূলক বড় অঙ্কের শেয়ার বিক্রি বেশি দেখা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্রোকারেজ হাউসের এমডি সমকালকে বলেন, গত বছর রবি ভালো মুনাফা করেছে, ভালো লভ্যাংশও ঘোষণা করবে– এমন গুঞ্জন গত কয়েক সপ্তাহ ধরে শোনা যাচ্ছিল। এ কারণে রবির শেয়ারে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি ছিল, কয়েক সপ্তাহ ধরে শেয়ারটি লেনদেনের শীর্ষ ২০ কোম্পানির তালিকায় ছিল। সোমবারের লভ্যাংশ ঘোষণার মধ্য দিয়ে আগের ধারণা সত্যি হয়েছে। তবে এর প্রতিফলন শেয়ারদরে নেই। 

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, গত নভেম্বরের শুরুতে রবির শেয়ার ২৩ টাকা থেকে বেড়ে সর্বশেষ ৩০ টাকায় উঠেছিল। গতকাল সাকল্যে ১ কোটি ৮ লাখের বেশি শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যার বাজারমূল্য ছিল সাড়ে ৩২ কোটি টাকা। এ লেনদেনে গত আগস্টের পর সর্বোচ্চ।
এদিকে গতকাল বেশির ভাগ কোম্পানি শেয়ার দর হারিয়েছে। ১৮ মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ডের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ছয়টির দর কমলেও ১১৭ শেয়ারের দরবৃদ্ধির বিপরীতে ১৯২টির দর কমেছে। এতে ডিএসইএক্স সূচক ৮ পয়েন্ট হারিয়ে ৫২০৩ পয়েন্টে নেমেছে। টাকার অঙ্কে লেনদেন ১৫৬ কোটি টাকা বেড়ে ৫৯৯ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, যা গত ৬ নভেম্বর বা প্রায় সাড়ে তিন মাসের সর্বোচ্চ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র পয়স য়

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ